শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১, ০২ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

সড়ক নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ

দুই নাম্বর ইট, আমা খোয়া ও মাটিযুক্ত বালুর ব্যবহার

জি এম মুজিবুর রহমান, আশাশুনি (সাতক্ষীরা) থেকে | প্রকাশের সময় : ২৩ নভেম্বর, ২০২১, ১২:০৩ এএম

আশাশুনি উপজেলার শোভনালী ইউনিয়নের কামালকাটিতে সড়ক নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। কেবল ২/৩ নাম্বার ইট আর আমা খোয়া ও কাঁদামাটিযুক্ত বালির ব্যবহারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এলাকাবাসী বাঁধা দিলেও শেষ রক্ষা না হওয়ায় এলাকার মানুষ হতাশ হয়ে পড়েছেন। শোভনালী ইউনিয়ন পরিষদের সামনে থেকে বসুখালী সালাম গাজিবাড়ি ভায়া শালখালী ইস্কন মন্দির সড়কটি খুবই জরুরি একটি সড়ক। এলাকার মানুষ সড়কের দুরাবস্থার কারণে খুবই কষ্ট ভোগ করে এসেছেন। অনেক চেষ্টা তদবিরের পরে এক বছর আগে সড়কের কাজে হাত দেয়া হয়। দীর্ঘ ৫.২ কি.মি. সড়কের কাজে কত টাকা বরাদ্দ তা এলাকার জন প্রতিনিধি, গণ্যমান্য ব্যক্তি এমনকি কাজের সাথে জড়িত সাব ঠিকাদার ও ম্যানেজার পর্যন্ত জানেন না। এক বছর আগে কাজ শুরু হলেও এ পর্যন্ত কাজের তথ্যবোর্ড স্থাপন করা হয়নি। কাজের তথ্য গোপনে রেখে অনিয়ম করে কাজ করা হলেও কর্তৃপক্ষ কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি।
এলাকাবাসী জানান, যখন রাস্তার নিচে (বেডে) বালির কাজ করা হয় তখন বালির পরিবর্তে কাটামাটিতে লেপটানো বালির ব্যবহার করা হয়েছিল। বাধা দিলেও মানা হয়নি।
বর্তমানে রাস্তার খোয়া ব্যবহারের কাজ চলছে। কাজে কিছু ১নং ইট ব্যবহার করা হলেও মাঝে মধ্যে ২/৩নং ইট ও একেবারে আমা ইট এনে দ্রুত খোয়া ভেঙে রাস্তায় ফেলে রোলার করা হচ্ছে। গত শনিবার সড়কের একটি বড় অংশে আমা ইটের খোয়া ব্যবহার করে রোলার করা হয়। এলাকাবাসী বাধা দিলেও ওপরে তাদের লোক আছে কোন কাজ হবেনা এমন বাক্য ছেড়ে কাজ চালিয়ে যাওয়া হয়। পরদিন পুনরায় নতুন করে আমা ইটের চালান এনে খোয়া ভাঙার কাজ করা হচ্ছিল। হাজার খানেক ইট ভাঙার পর এলাকার লোকজন বাধা
দিলেও শোনা হয়নি, পরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি উদয় কান্তি বাছাড় উপস্থিত হয়ে খোয়া ভাঙা বন্ধ করে দেন এবং ইট ফেরৎ দিতে বলেন। তখন কাজ বন্ধ রাখা হলেও এদিন বিকালে একদল সাংবাদিক ঘটনাস্থানে গিয়ে দেখেন আমা ইটের খোয়ায় রাস্তার কাজ করা হয়েছে। আরও আমা ইট ভাঙা হয়েছে এবং বাকি ইটগুলো ভাঙার জন্য পাশে রাখা হয়েছে।
স্থানীয় মোসলে উদ্দিন (৫৫) জানান, আমার বয়সে আমি এরকম রাস্তা দেখিনি। রাস্তার ওপর দিয়ে একটি ভ্যান গেলেও ইট গুড়ো হয়ে যাচ্ছে। তিনিসহ কয়েকজন খোয়া হাতে নিয়ে আঙ্গুল দ্বারা চাপ দিলে গুড়ো হতে দেখে সবাই হতবাক হয়ে যান।
ইউপি সদস্য উদয় বাছাড় জানান, আগেও একবার অনিয়মের প্রতিবাদ জানানোর পর কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে ভাল ইট এনে কাজ করা হয়েছিল। গত রোববার আমা ইটের খোয়া ভেঙে কাজ করছিল। আমরা প্রতিবাদ করে কাজ বন্ধ করে দিয়েছি। রাস্তায় আমা খোয়া ফেলে রোলার করা হয়েছে। সব উঠিয়ে নিতে বলা হয়েছে। এখনো আমা ইট বা খোয়া সরিয়ে নেয়া হয়নি।
কাজের সাব-কন্ট্রাক্টর আবদুল হালিম জানান, কি ইট ব্যবহৃত হবে বা কি কাজ করা হবে, কত টাকা বরাদ্দ কোন কিছুই তার জানা নেই। ঠিকাদার যেভাবে বলছেন, সেভাবে কাজ করে যাচ্ছি। কাজের তথ্য বোর্ড দেয়া হয়নি কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সেটি তার জানা নেই।
এ ব্যাপারে আশাশুনি উপজেলা প্রকৌশলী আক্তার হোসেন বলেন, আমি খবর পেয়ে কাজ বন্ধ করে দিয়েছি। ভাল ইটের খোয়া ব্যবহার নিশ্চিত করতে ব্যবস্থা নিচ্ছি।
আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুল হুসেইন খান বলেন, আমি এখনই উপজেলা ইঞ্জিনিয়ারকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিচ্ছি। কোনভাবেই খারাপ ইটের ব্যবহার বা কোন অনিয়ম হতে দেয়া হবে না।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন