শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

খেলা ফিচার

শিলার পরিবারে সোনালী আলো

প্রকাশের সময় : ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

বিশেষ সংবাদদাতা, যশোর : সাউথ এশিয়ান (এসএ) গেমসের সাঁতার ইভেন্টে দুটি স্বর্ণপদক জয় করে বাংলাদেশের সুনাম বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দেয়া মাহফুজা আক্তার শিলার পরিবারে এখন খুশির বন্যা। তার এ জয় আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। যশোরের অভয়নগর উপজেলার মেয়ে শিলার এ কৃতিত্বে আনন্দের জোয়ার বইছে অভয়নগর উপজেলার পাঁচকবর গ্রামে। মেয়ের সাফল্যে খুশিতে আত্মহারা বাবা, মা ও প্রতিবেশীরা। তাদের প্রত্যাশা, মাহফুজার এ অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে।
তার বাবা আলী আহম্মেদ গাজী বললেন, আমি অন্যের জমি বর্গা নিয়ে চাষ করি, নিজের ভিটাবাড়ি ছাড়া কোনো জমিজমা নেই। বর্গাজমির ফসল ও এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে গাভী পালন করে দুধ বিক্রি করে সংসার পরিচালনা করি। অর্থাভাবে রোগের চিকিৎসা করতে পারি না। ৬ শতক জমির ওপর একটি টিনশেডের বাড়ি তৈরি করে পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করছি।
বাড়িতে নেই কোনো বিদ্যুৎ ও প্রবেশের জন্য রাস্তাও নিজস্ব নেই। দুধ বিক্রি করে মাহফুজার খেলাধুলা ও লেখাপড়ার খরচ জুগিয়েছি কোনো রকমে। ধার-দেনা আছে অনেক। একটু বৃষ্টি হলেই বাড়িতে পানি জমে যায়। বাড়ি থেকে বের হওয়ার কোনো উপায় থাকে না।
শিলার মা করিমন নেছা আক্ষেপ করে বলেন, আমার মেয়ে দেশের জন্য গৌরব বয়ে আনলেও কেউ আমাদের দুঃখ কষ্টের খবর রাখে না। যখন সে স্বর্ণপদক জয় লাভ করে তখন বাড়িতে সবাই ছুটে আসে। তারপর আর কেউ খবরও রাখে না। আমরা যে কত কষ্টে দিনযাপন করি তা আর বলে লাভ কী?
বড় ভাই হাসান আলী গাজী জানালেন, এ পর্যন্ত সে সাঁতার প্রতিযোগিতায় স্বর্ণ, রৌপ্য ও ব্রোঞ্জসহ বায়ান্নটি পদক পেয়েছে। ক্রেস্টও পেয়েছে অনেক। আছে সার্টিফিকেট। সে এবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সংবাদিকতার ওপর গ্র্যাজুয়েশন লাভ করেছে এবং বাংলাদেশ নৌ-বাহিনীতে অস্থায়ী ভিত্তিতে চাকরি করছে। এ বছর তার চাকরি শেষ।
দেশের জন্য সুনাম বয়ে আনলেও অভাব-অনটনের মধ্যে রয়েছে তার পরিবার। শিলা সাঁতার প্রতিযোগিতায় এ পর্যন্ত চারটি স্বর্ণ পদক পেয়েছেন, যার মধ্যে দুটি স্বর্ণ পদক বিক্রি করে অসুস্থ বাবার চিকিৎসা সেবা এবং অভাবের সংসারের খরচ জুগিয়েছেন। বড় বোন আফরোজা বেগম জানান, আমরা পাঁচ ভাই-বোন। মাহফুজা ভাই বোনের মধ্যে চতুর্থ। তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময় সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে সে জেলা পর্যায়ে প্রথম হয়। তারপর যশোরে আব্দুল মান্নান স্যারের সহযোগিতায় সাঁতারে প্রশিক্ষণ নেয়। অর্থাভাবে বিকেএসপিতে অংশগ্রহণ বন্ধ হওয়ার উপক্রম হলে এলাকাবাসী এগিয়ে আসেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন