৬ দিনের বিরতি দিয়ে আবারও ট্রাকে করে পণ্য বিক্রি শুরু করেছে সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবি। ঊর্ধ্বমুখী নিত্যপণ্যের বাজারে এই উদ্যোগ ভোক্তাদের স্বস্তি দিলেও অনেকেই পণ্য না পেয়ে খালি হাতেই ফিরে গেছেন। এদিকে টিসিবি বলছে, পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে, তাই করোনার সংক্রমণ বাড়লেও বিক্রি কার্যক্রমে কোনো সমস্যা হবে না।
টিসিবির ট্রাক আসার খবরে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি উপেক্ষা করেই যে যার মতো দৌড়ে এসে লাইনে দাঁড়ান। পণ্য হাতে না পেলেও লাইনে ঠাঁই পেয়েই যেন স্বস্তি। বিক্রি শুরুর আগেই গতকাল রাজধানীর মগবাজারে ট্রাকের পেছনে নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে দিশেহারা নিম্ন আয়ের মানুষের লম্বা লাইন তৈরি হয়।
লাইনে দাঁড়ানো এক ভোক্তা বলেন, প্রতিদিন এসেই দেখি ১০০ থেকে ১৫০ জন আগে থেকেই দাঁড়িয়ে থাকে। সেদিনও অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকেও পণ্য নিতে পারিনি। চাকরি হারিয়েছি দুই মাস আগে। বাজারতো কোনো নিয়ন্ত্রণে নেই। বাজারে পণ্যের দাম তো বেড়েই যাচ্ছে।
এ দিকে লাইনে দাঁড়ানোর পরও দিন শেষে অনেককেই ফিরতে হয় খালি হাতে। তারা বলেছেন, সরকার যদি পণ্যের পরিমাণ আরেকটু বাড়িয়ে দেয়, তাহলে জনসাধারণের জন্য বেশ সুবিধা হয়। আমাদের তো আয় কমেছে। পণ্যমূল্য বৃদ্ধির তুলনায় আয় তো বাড়েনি। শেষে হয়তো চিনি পেলে, তেল পাব না। তেল পেলে, পেঁয়াজ পাব না।
এ বিষয়ে টিসিবির ডিলাররা বলেছেন, সবাই পায় না। আমাদের যে পরিমাণ পণ্য দেওয়া হয়, তার থেকে ভোক্তা বেশি। কিছু সংখ্যক ভোক্তা খালি হাতে ফেরত যায়। তবে টিসিবি বলছে, সল্প আয়ের বেশি মানুষের কাছে পণ্য পৌঁছে দিতে কাজ করছে সংস্থাটি। এ বিষয়ে টিসিবির মুখপাত্র মো. হুমায়ূন কবির বলেছেন, প্রতিমাসেই ২ থেকে ৩ দিনের সাময়িক বিরতি দিয়ে দিয়ে পণ্য বিক্রি করা হয়। এ কার্যক্রম এ মাসেও চলমান থাকবে। আমাদের গুদামে এবং পাইপ লাইনে যথেষ্ট পণ্য রয়েছে। ওমিক্রন পরিস্থিতিতেও আমাদের বিক্রয় কার্যক্রম আগের মতো অব্যাহত থাকবে।
করোনার ধাক্কায় গত দেড় বছরে এসব মানুষের আয়ের সুযোগ কমে গেছে বা বন্ধই হয়ে গেছে। আবার সরকারি হিসেবে, বছর ব্যবধানে এসব মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে ৩২৭ ডলার। এমন বহুমুখী হিসাবের খাতায় দৈনিক সংসার খরচের হিসাব মেলাতে না পেরেই বাজার ছেড়ে প্রতিদিনই টিসিবির ট্রাকের অপেক্ষায় থাকেন সাধারণ মানুষ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন