শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

লাভের আশা বাদ শঙ্কা খাবার নিয়েই

ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে ফসল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৮ ডিসেম্বর, ২০২১, ১২:০০ এএম

মাঠে চলছিল পাকা আমন ধান কাটার কাজ। বেশীরভাগ কাটা ধান ছিল জমিতেই। যুগ যুগ ধরে কৃষকরা এভাবেই ধান কাটে। পর্যায়ক্রমে কাটা ধান তারা ঘরে তোলে। এই সময়টুকু রোদে ধানগাছ সামান্য শুকিয়ে গেলে মাড়াই করার উপযোগী হয়ে ওঠে। টানা বৃষ্টি আমন চাষিদের মুখের হাসি কেড়ে নিয়েছে। কাটার পর যে ধান জমিতে ছিল তার সবই ভেসে গেছে। আর যেগুলো কাটার অপেক্ষায় ছিল তা নুয়ে পড়েছে। কৃষক তাদের পাকা ধান কাটার শেষ মুহ‚র্তের অপেক্ষায় ছিলেন। কিন্তু তারা এখন চিন্তিত কীভাবে সারা বছরের খাবার ঘরে তুলবেন। ‘জাওয়াদ’র প্রভাবে অসময়ের এই বৃষ্টিপাত বিশেষ করে কৃষি-খামার সেক্টরে সর্বনাশ ডেকে এনেছে।

অগ্রহায়ণ মাসের তৃতীয় সপ্তাহ পার হচ্ছে আষাঢ়-শ্রাবণের মতোই অঝোর ধারায় বর্ষণের মধ্যদিয়ে। গত কয়েকদিন সারা দেশে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত, অনেক স্থানে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হয়েছে। এতে করে ফসলের মাঠে মাঠে কৃষকের পাকা, আধপাকা আমনধান এমনকি জমিতে কেটে রাখা ধান এবং বোরো বীজতলা ভ‚মিস্যাৎ হয়েছে কিংবা পানিতে ভাসছে। ভাসছে ফল-ফসল, সবজিক্ষেত। পানিতে ভিজে-ডুবে মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সরিষা, ভুট্টা, তৈলবীজ, বাদাম, তিল, তিসি, মসুর, পেঁয়াজ-রসুন-আদা, আলুসহ শাক-সবজি ক্ষেতের।

যশোর ব্যুরো জানায়, টানা বর্ষণে যশোর শহরে ব্যাপক পানিবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে চাষীদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ধান, সরিষা, মসুর, গোলআলু, পেঁয়াজ, মরিচসহ সব ধরনের সবজি চাষিদের এক প্রকার মাথায় হাত। এখনো যেসব চাষি ধান ঘরে তুলতে পারেননি তাদের ছাড়াও যারা বোরোর বীজতলা তৈরি করেছিলেন তারাও পড়েছেন ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মুখে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরে তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তা উপ-পরিচালক জনাব বাদল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, গতকাল পর্যন্ত তাদের হিসেবে ২৫৬ হেক্টর গোলআলু, ৪১৬৩ হেক্টর মসুর, ২০০ হেক্টর মটরশুটি, ৯৯১০ হেক্টর সরিষা, ৪৬৫০ হেক্টর বিভিন্ন ধরনের সবজি, ১৭৫ হেক্টর পেঁয়াজ, ৩০০ হেক্টর মরিচ সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তিনি জানান, জেলার ১ লাখ ৩৮ হাজার ৯৪৫ হেক্টর ধানের মধ্যে ৪১৬৮ হেক্টর জমির কাটা ধান পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। পানি নিষ্কাশন না হলে বা আরো বৃষ্টি হলে ৪১৬৮ হেক্টরের সাথে আরো বেশি পরিমাণ ধান সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যাবে। এছাড়াও এই বৃষ্টিতে গোলআলু সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হবে বলেও তিনি জানান।

এদিকে জেলার সদর, চৌগাছা, অভয়নগর, বাঘারপাড়া, মণিরামপুর, কেশবপুর, ঝিকরগাছা, শার্শা ও বেনাপোল থানার বিভিন্ন মাঠে কেটে জালি দিয়ে রাখা বা মাঠে কেটে রাখা ধান টানা বর্ষায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। পানি জমেছে শীতকালীন সবজি জমিতে। ক্ষতির আশঙ্কায় রয়েছেন আলু ও পেয়াজ রসুন চাষিরা।

মণিরামপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবুল হাসান বলেন, আমন ধানের ৯৫ শতাংশ ইতোমধ্যে কৃষক ঘরে তুলতে পেরেছেন। বৃষ্টিতে বাকি ৫ শতাংশ ধানের ক্ষতি হবে। তিনি বলেন, যাদের সরিষায় ফুল এসেছে বৃষ্টিতে তাদের ক্ষতি কম হবে। তবে তলিয়ে যাওয়া মসুর খেতের ক্ষতি হবে।

একই অবস্থা উপজেলার গদখালীর ফুলচাষিদের। বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটি সূত্র মতে, যশোরের ঝিকরগাছা ও শার্শা উপজেলার ৭৫টি গ্রামের প্রায় ৬ হাজার ফুলচাষী রয়েছে। শত শত হেক্টর জমিতে গোলাপ, গাঁদা, রজনীগন্ধা, জারবেরা, ডেইজ জিপসি, ডালিয়া, গøাডিওলাস, কসমস ও চন্দ্রমল্লিকাসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফুলের চাষ হয়।

ঝিকরগাছা উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জনাব মো: মাসুদ হোসেন পলাশ জানান, গোলাপ ও রজনীগন্ধা প্রায় শেষের পথে। তবে গাঁদা ৫০ হেক্টর মধ্যে ২৫ হেক্টর ও গ্লাডিওলাস ২১২ হেক্টর মধ্যে ১০৫ হেক্টর জমির ফুল পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। গাঁদা ফুল পানিতে সব নষ্ট হলেও চারা থেকে কিছু চারা থেকে আবার ফুল আশা করা যায়। তবে গ্লাডিওলাস সব নষ্ট হয়ে যাবে।

বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির সভাপতি জনাব মো. আব্দুর রহিম বলেন, ফুল চাষের জন্য শেড তৈরি করা হয়। যাদের শেড আছে তাদের ফুল ভাল আছে। বাকী সবার ফুল নষ্ট হয়ে গেছে বৃষ্টির পানির কারণে। বর্তমানে ফুলের দাম ভাল ছিল। কিন্তু বৃষ্টির কারণে বিপদে ফুল চাষিরা।

যশোরের মৎস চাষীরা টানা বর্ষণে সব থেকে বেশী ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বৃষ্টির পানিতে মৎস ঘের থেকে মাছ চলে গেছে। অলোক বিশ্বাস বলেন, ২৫ বিঘা জমিতে ৬টি ঘের রয়েছে, বৃষ্টির কারণে ৬টি ঘের পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। ৬টি ঘেরের মাছ এক হয়ে গেছে। পানি নিস্কাশন হলে বোঝা যাবে মাছ আছে কিনা। ৩টি ঘেরে প্রায় ৬০ হাজার চিংড়ি মাছ ছিল। বাকী ৩টি ঘেরে রুই ও কাতল ছিল। বৃষ্টির কারণে ৩০ হাজার টাকা খরচ করে নেট দিয়ে ছিলাম। তাতে কোন কাজ হয়নি, নেটও পানির নিচে। আগে প্রতি দিন ৩ হাজার টাকার মাছের খাবার লাগতো। বৃষ্টির কারণে প্রতি দিন ৬ হাজার টাকার মাছের খাবার দিচ্ছি।

টানা বর্ষণে জনজীবন বিপন্ন
টানা বর্ষণে যশোরের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক পানিবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ড্রেন থেকে পানি বেশীর ভাগ সময় রাস্তায় চলে আসছে। ড্রেন ব্যবস্থা যত দিন ভাল না হবে তত দিন মানুষের ভোগান্তি কমবে না।

যশোর পৌরসভার সচিব জনাব আজমল হোসেন বলেন, ড্রেনের কাজ চলচ্ছে অনেক স্থানে। রোদ হলেই পানি সরে যাবে। নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ না হওয়ায় কিছু এলাকায় সাময়িকভাবে পানি জমে। যশোর পৌরসভার সকল ড্রেন বৃষ্টি থামলে পরিষ্কার করা হবে বলে জানান তিনি। যশোর চৌগাছা পৌর মেয়র নূর উদ্দিন আল মামুন হিমেল বলেন, নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ না হওয়ায় কিছু এলাকায় সাময়িকভাবে পানি জমে। নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ হলে পানি নিষ্কাশনে আর সমস্যা হবে না।

খুলনা ব্যুরো জানায়, খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার শরাফপুর গ্রামের কৃষক আফজাল হোসেন, সমীর সাধু ও নিরাপদ সাধু ২৫ বিঘা জমিতে আমন লাগিয়েছিলেন। ধান কাটার কাজ চলছিল। অর্ধেক ধান কাটার পরে তা জমিতেই রাখা ছিল। সব ভেসে গেছে। আমরা সর্বশান্ত হয়ে গেছি।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র জানা যায়, এবার জেলায় ৯৩ হাজার ৩১৬ হেক্টর জমিতে রোপা আমন আবাদ করা হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৯২ হাজার ৭৩০ মেট্রিক টন। তবে হঠাৎ প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে উৎপাদন, লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম হতে পারে।

খুলনা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক হাফিজুর রহমান জানান, বৃষ্টিতে আমন ধানের বেশ ক্ষতি হয়েছে। দু’ একদিনের মধ্যে ক্ষতির পরিমাণ নিরুপণ করা যাবে। ধারণা করা হচ্ছে এক তৃতীয়াংশ জমির ধানের ক্ষতি হয়েছে।

মাগুরা থেকে স্টাফ রিপোর্টার জানান, টানা ৪ দিনের বৃষ্টিতে মাগুরা জেলার চারটি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বৃষ্টির পানিতে ভেসে গেছে কৃষকের স্বপ্ন। তাছাড়া নিম্ন এলাকা প্লাবিত হয়ে চরম দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। মাছের ঘের ভেসে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে মাছ চাষিরা। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিভিন্ন ধরনের সবজি জমিও। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন মাগুরা জেলার কয়েক হাজার চাষি। ফলে ফসল বাঁচাতে কৃষকের অতিরিক্ত মজুরি খরচ করে তা রক্ষা করতে হচ্ছে। তারপরও মিলছে না শ্রমিক। অনেকের আবার শ্রমিক-সংকটে ধান পচে যেতে চলছে ফসলের মাঠেই।

এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মাগুরা শএুজিৎপুর, মঘীর মাঠ, বড়বিল, বেরইল, আমুড়িয়া, গঙ্গারামপুর আঠারখাদা, বেরইল, গজারিয়া বিলসহ শ্রীপুর আলাইপুর ধানের মাঠে দেখা যায় বৃষ্টির পানি জমতে। কৃষক তাদের পাকা ধান কাটার শেষ মুহ‚র্তের অপেক্ষায় ছিলেন। কিন্তু তারা এখন চিন্তিত কীভাবে সারা বছরের খাবার ঘরে তুলবেন? এ বছর এক বিঘা জমিতে আমন ধান করতে সব মিলিয়ে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে শ্রমিক খরচ আরও প্রায় ৩ হাজার টাকা বেড়ে ১৫ হাজারে ঠেকছে। আবার গো-খাদ্য বা জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার্য বিচালি বা খড় পচে যাওয়ায় ক্ষতি আরও বেড়েছে অনেকটা।

মাগুরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপপরিচালক সুশান্ত কুমার প্রামানিক বলেন, এ মৌসুমে আমন ধান উৎপাদনের হয়েছে ৬১ হাজার ৪শত ৭০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে ১০ হাজার ৩০ হেক্টর রয়েছে হাইব্রিড জাতের। তিনি কৃষকদের ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার কথা স্বীকার করেন।

বাগেরহাট জেলা সংবাদদাতা জানান, বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোতাহার হোসেন জানান, গত দুই দিনের টানা বৃষ্টিতে ৩৫ হেক্টর জমির শীতকালীন সবজি, ২০৭ হেক্টর জমির বোরো বীজতলা, ১৫০ হেক্টর জমির রোপা আমন, ১৩৭ হেক্টর জমির সরিষা, ১৬১ হেক্টর জমির খেসারী, ৩০ হেক্টর জমির মুসুর ডাল, ২ হেক্টর জমির মটর ডাল, ১৭ হেক্টর জমির গম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

মুন্সীগঞ্জ জেলা সংবাদাদাতা জানান, জেলার প্রায় ১৫ হাজার হেক্টর আলুর জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৮০ শতাংশ জমির আলু নষ্ট হয়ে যাবার আশঙ্কা রয়েছে। এতে আলু চাষিরা দুশ্চিতায় পরেছে আলু উৎপাদন নিয়ে। আগামীতে দেখা দিতে পারে তীব্র বীজ আলু সঙ্কট। জেলায় চলতি মৌসুমে ৩৭ হাজার ৯শ’ হেক্টর জমিতে আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রায় ২০ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ করা সম্পন্ন হয়েছে। গত ৪ দিনের অবিরাম বৃষ্টিতে জমিতে পানি জমে গেছে কোথাও জমি ডুবে গেছে। এতে একদিকে যেমন সদ্য রোপন করা আলু নষ্ট হবে আবার প্রস্তুত করা জমিতেও আলু লাগাতে পারবে না।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে উপ-পরিচালক মো. খুরশীদ আলম জানান, একটানা বৃষ্টিতে প্রায় ১১ হাজার ৬ শত হেক্টর জমিতে পানি জমে গেছে। আবাদের ৮০ শতাংশ জমির আলু নষ্ট হয়ে যাবার আশঙ্কা রয়েছে। আগামী দুই এক দিনের মধ্যে আবহাওয়া ভালো না হলে ক্ষতির পরিমাণ আরো বৃদ্ধি পাবে।

গজারিয়া (মুন্সীগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, চাষি পরিবারে চলছে হাহাকার। সবেমাত্র জমিতে আলু রোপণ শেষ করে চাষিরা ঘরে ফিরতে পারেনি। জমির মাঝেই প্রবল বৃষ্টির ঢল। জমিতে বৃষ্টির পানি থইথই করছে। উপজেলার ৯০-৯৫ ভাগ জমি বীজ গজাবে না বলে চাষিরা জানান।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তৌফিক আহমেদ নুর বলেন, এ বছর আলু মৌসুমে উপজেলায় দুই হাজার চারশ দশ হেক্টর জমিতে আলু রোপণ করা হয়েছে। বৃষ্টিতে চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ।

মতলব (চাঁদপুর) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মেঘনা ধনাগোদা সেচ প্রকল্পে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বাতাসে পড়ে গেছে পাকা ধান ও তলিয়ে যাচ্ছে বৃষ্টির পানির নীচে। সবজি জমিতে পানি জমার কারণে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা। অনেক এলাকায় বোরো ধানের বীজতলা তলিয়ে গেছে। সরিষা ও ভুট্টা চাষিরা চাষাবাদ করে বীজ নস্ট হওয়ার ধারণায় হতাশ।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সালাউদ্দিন জানান, ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে ঝড় ও বৃষ্টিতে কৃষিতে ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টি হলেই সেচ প্রকল্পে পানিবদ্ধতা দেখা দেয়। পানিবদ্ধতায় ফসলের অনেক ক্ষতি হয়। পাউবো কর্তৃপক্ষে এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন।

দুমকি (পটুয়াখালী) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, দুমকি উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার পাংগাশিয়া ইউনিয়নের আলগী ধোপারহাট তেতুলবাড়িয়া বাশবুনিয়া, লেবুখালী ইউনিয়নের আঠারোগাছিয়া, কার্ত্তিকপাশা, লেবুখালী শ্রীরামপুর ইউনিয়নের রাজাখালী, শ্যামেরচর, চরবয়েড়া, জামলা, আংগারিয়া ইউনিয়নের বাহেরচর, জলিশা, ঝাটরা, মুরাদিয়া ইউনিয়নের সন্তোষদি, ভক্তবাড়ী, দক্ষিণমুরাদিয়া, উত্তর মুরাদিয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মেহের মালিকা বলেন, এখনও সঠিক হিসাব দিতে পারব না। মাঠে ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণ করা হচ্ছে।

কলারোয়া (সাতক্ষীরা) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, বৃষ্টিতে কলারোয়ায় সরিষাসহ অন্তত ৫ হাজার হেক্টর জমির শীতকালীন ফসল ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।

মাঠের আবাদ করা সরিষা, আলু, কপি, বেগুন, উচ্ছে, পটল, কুমড়া, সবজি সহ শীতকালিন ফসলের জমিতে পানি জমে থাকতে দেখা যায়। এরমধ্যে আগাম বপন করা প্রায় ১ হাজার বিঘা জমির ফুল আসা সরিষা গাছ পানিতে নুয়ে পড়ে বিনষ্ট হচ্ছে। এছাড়া আলু, কপি, মুলা, পালন, উচ্ছে, বেগুন, পটল, মিষ্টি কুমড়াসহ শীতকালিন সবজি গাছের গোড়ায় পানি জমে থাকায় বেশীর ভাগ ফসল পচে নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষক।

সাটুরিয়া (মানিকগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, অসময়ের বৃষ্টিতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে সাটুরিয়া উপজেলার বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। অসময়ের এ বৃষ্টিতে উপজেলার বিভিন্ন সড়কে পানি জমে কাদার সৃষ্টি হয়েছে। কোথায় পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত পানি, কোথাও আবার কাদার কারনে হেটে চলা দায় হচ্ছে। টানা বৃষ্টিতে স্বাভাবিক কাজ ব্যাহত হচ্ছে।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
সবুজ ৮ ডিসেম্বর, ২০২১, ৩:৪৯ এএম says : 0
সরকারসহ বিত্তবানদের উচিত অসহায় কৃষকদের পাশে দাঁড়ানো
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন