জাল কাগজপত্র দিয়ে দোকানের মালিকানা দাবি করে ফেঁসে গেলেন বাদী নিজেই। আদালত স্বাক্ষর জাল করার অভিযোগে বাদী সেরা উদ্দিন রিপনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকার সিএমএম আদালতে এ ঘটনা ঘটে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর দনিয়া এলাকায় শরীফ টাওয়ারের একটি দোকানের মালিকানা দাবি করে ওই টাওয়ারের মালিক এম এ আজীম শরীফের বিরুদ্ধে মামলা করেন দনিয়া এলাকার সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ ও দখলদার সেরা উদ্দিন রিপন। মামলার আরজিতে তিনি শরীফ টাওয়ারের দোকানের মালিকানা দাবি করে তিনশ’ টাকার স্ট্যাম্পে লিখিত একটি চুক্তিপত্র আদালতে দাখিল করেন। আদালত মালিকের স্বাক্ষর পরীক্ষার জন্য সিআইডির কাছে পাঠায়। ল্যাবে সেই স্বাক্ষর জাল বলে প্রমানিত হয়। গতকাল সেই প্রতিবেদন আদালতে উত্থাপিত হলে আদালত বাদী সেরা উদ্দিন রিপনকে জেল হাজতে পাঠানোর আদেশ দেন। সিআইডির প্রতিবেদনে বলা হয়, চুক্তিপত্রে শরীফ টাওয়ারের মালিক এম এ আজীম শরীফের স্বাক্ষরটি ‘স্ক্যানকৃত জাল’।
আদালত সূত্রে জানা যায়, দনিয়া এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী সেরা উদ্দিন রিপনের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি জাল জালিয়াতির মামলা রয়েছে। এর মধ্যে চেক ডিজঅনার মামলা নং ১৪০০০/২০১৮ইং এবং জাল জালিয়াতির মামলা নং ১৬৪/২০১৯ইং উল্লেখযোগ্য।
স্থানীয় সূত্র জানায়, এক সময়ের শিবিরের ক্যাডার সেরা উদ্দিন রিপনের বিরুদ্ধে কদমতলী ও যাত্রাবাড়ী থানায় চাঁদাবাজি, দখল ও হুমকী প্রদান ও বø্যাক মেইলের অভিযোগে বহু মামলা ও জিডি রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছেÑকদমতলী থানায় জিডি নং ২৪০, তাং ০৪/০৭/ ১৭, জিডি নং ১৮৫২, তাং ২৯/১২/১৬, জিডি নং ১২৭৬, তাং ২২/০৭/১৬, জিডি নং ১৩৮৭, তাং ২৪/০৭/ ১৭, ডিসি ওয়ারী বরাবর আবেদন স্মারক নং ২৩০৫/ডিসিওয়ারী, তাং ১৮/০৬/১৭, যাত্রাবাড়ী থানায় জিডি নং ১০০৬, তাং ১৩/৩/১৮, যাত্রাবাড়ী থানার প্রসিকিউশন স্মারক নং ১৯০৬, তাং ০৩/০৪/১৮। উল্লেখযোগ্য মামলা নং ৭৫, তাং ২৮/০৫/১৭ ধারা ৩৮৫, সিআর মামলানং ৮৬, তাং ২৮/০৫/১৭, ২০ লাখ টাকার চেক ডিজঅনারের মামলা, সিএম মামলা নং ২৫/ সিআর মো: নং ৭০/২০১৮, তাং ১৪/০১/১৮।
পুলিশ প্রশাসনকে ম্যানেজ করতে সিদ্ধহস্ত রিপন শিবির থেকে এখন যুবলীগের নেতা। তার অত্যাচারে এলাকার বহু মানুষ অতিষ্ঠ। জাল কাগজপত্র তৈরী করে রিপন সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে দিনে দুপুরে সে মানুষের ফ্ল্যাট, বাড়ি, দোকান দখল করে আসছিল। তার অপকর্মে কেউ বাধা দিলে সে থানা পুলিশকে ব্যবহার করে মিথ্যা মামলা ও জিডি করে মানুষকে হয়রানি করতো। গত ৭ অক্টোবর সে কদমতলী থানার এসআই কাছেদকে ম্যানেজ করে মিথ্যা অভিযোগে একজন সিনিয়র ক্রাইম রিপোর্টারের বিরুদ্ধে জিডি করে (নং ৪৫০)। এসআই কাছেদ কোন যাচাই ছাড়াই সেই জিডিটি আদালতে পাঠায়। এ নিয়ে ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশনের নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। উল্লেখ্য, এর আগেও চাঁদাবাজি মামলায় রিপন বেশ কয়েকদিন জেল হাজতে ছিল।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন