আত্মার সাথে সম্পর্কিত যারা তারাই আত্মীয়।ইসলামে আত্মীয়তার সম্পর্ক বলতে মাতা ও পিতার দিক থেকে রক্তসম্পর্কীয় নিকটস্থ লোকদিগকে বুঝায়। ঘনিষ্ঠতার পর্যায়ক্রম অনুসারে পিতা-মাতা, ভাই-বোন, চাচা, ফুফু, মামা, খালা এবং তাদের ঊর্ধ্বতন ও নিম্নতম ব্যক্তিবর্গ ও সন্তানগণ আত্মীয়। এরা সবাই আরহাম, রেহেম রক্তসম্পর্কীয় আত্মীয় ঘনিষ্ঠতম আচরনের আওতাভূক্ত।
এদের সাথে সুসম্পর্ক রক্ষা করা জান্নাতে প্রবেশের অন্যতম কারণ বলে পবিত্র কুরআন ও হাদীসে বর্ণিত হয়েছে।
আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন, ‘আর আত্মীয়-স্বজনকে তার হক দিয়ে দাও এবং অভাবগ্রস্ত ও মুসাফিরকেও এবং কিছুতেই অপচয় করো না। নিশ্চয়ই অপচয়কারীরা শয়তানের ভাই। আর শয়তান স্বীয় পালনকর্তার প্রতি অতিশয় অকৃতজ্ঞ।’ (সুরা বনি ইসরাইলঃ ২৬-২৭)।
সমাজের কিছু মানুষ শুধু নিজের পরিবার পরিজন নিয়েই ব্যস্ত থাকে এবং আত্মীয়-স্বজনের ব্যাপারে থাকে উদাসীন। আবার এমন বহু লোক আছে, যারা নিজের পরিবার-পরিজনের কথা ভুলে অর্থ-সম্পদ বন্ধু-বান্ধব,আতœীয় নয় এমন লোকগুলির পেছনেই ব্যয় করে। সেজন্য মহান আল্লাহ উপরোক্ত আয়াতসমূহে প্রথমে রক্ত সম্পর্কীয় আতœীয়দের চাহিদা মাফিক হক (শরীয়াহপন্থী হতে হবে) আদায়ের পরে অভাব গ্রস্থ (অবশ্যই নিকটস্থ) ও মুসাফিরের হক আদায়ে ফরয করেছেন।পাশাপাশি যাদের প্রাপ্তি নয় এমন বন্ধু-বান্ধবের পিছনে অর্থ-কড়ি অপব্যায় না করার হুঁশিয়ারী জানিয়েছেন। অপব্যয় ,অপচয় করা কেবল ইবলিশেরই কাজ।
শরীয়াহ বিধান অনুযায়ী আত্মীয়স্বজনের আলাদা আলাদা হক বা অধিকার আছে। শরীয়তের কোনো কারণ ছাড়া আতœীয়তের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করা সম্পূর্ণ হারাম।
আল্লাহর একটি গুনবাচক নাম ্ররহমানগ্ধ। এ শব্দটি রিহমুন ধাতু হতে উৎপত্তি। এর অর্থ আত্মীয়তা। সুতরাং যে আত্মীয়তার অধিকার আদায় করে সে যেন আল্লাহর অধিকার আদায় করে। রক্ত সম্পর্কীয় বন্ধন রক্ষা করার ব্যাপারে গুরুত্ব আরোপ করে রাসূল (সাঃ) এটিকে জান্নাতে প্রবেশের একটি আমল হিসেবে শিক্ষা দিয়েছেন। যেমন,আবূ আইউব আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি বললোঃ হে আল্লাহ্র রসূল! আমাকে এমন একটি ‘আমল শিক্ষা দিন, যা আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে। উপস্থিত লোকজন বললঃ তার কী হয়েছে? তার কী হয়েছে? রসূলুল্লাহ (সাঃ) বললেনঃ তার একটি বিশেষ প্রয়োজন আছে। এরপর নবী (সাঃ) বললেনঃ তুমি আল্লাহ্র ‘ইবাদাত করবে, তাঁর সঙ্গে কাউকে অংশীদার গণ্য করবে না, সলাত কায়িম করবে, যাকাত আদায় করবে এবং আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করবে। একে (অর্থাৎ সওয়ারীকে) ছেড়ে দাও। বর্ণনাকারী বলেনঃ তিনি ঐ সময় তার সাওয়ারীর উপর ছিলেন। [সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৫৯৮৩ ]
আত্মীয়তার বন্ধন অটুট রাখা ঈমানের দায়িত্ব। আত্মীয়র যেকোনো দুঃখ-শোকে তার পাশে দাঁড়ানো, তার প্রতি সমবেদনা জানানো এবং তাকে সান্তনা দেয়ার জন্য বলা হয়েছে কুরআন ও হাদীসে। রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন- ‘যে ব্যক্তি তার মুমিন ভাইকে বিপদে সান্তনা দেবে, আল্লাহ কিয়ামতের দিন তাকে সম্মানের পোশাক পরিধান করাবেন।’ (ইবনু মাজাহ)
মহান আল্লাহ পাক পবিত্র কোরআনে বলেছেন যে,”’আর আল্লাহর বন্দেগী কর এবং তার সঙ্গে কাউকে শরীক করো না, এ ছাড়া মাতা-পিতার সঙ্গেও উত্তম আচরণ কর, আর উত্তম আচরণ কর নিকটাত্মীয়ের সঙ্গে।’ (সূরাঃ আন-নিসা, আয়াতঃ ৩৬)
দেখুন কতো সহজ ও সুন্দর ভাবে একত্ববাদে (কলেমা ও ইমান) বিশ্বাস রেখে এবং মাতা-পিতার হক আদায়ের পরে প্রথমেই আত্মীয়-স্বজনের অধিকার বিষয়ে সচেষ্ট থাকার জন্য তাগিদ দেয়া হয়েছে।
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস করে, সে যেন তার আত্মীয়তার বন্ধন অটুট রাখে। (বুখারি, হাদিসঃ ৬১৩৮)।
আত্মীয়-স্বজনের হক আদায় করা ফরজ।আর ফরয অস্বীকার করা কুফরী।
মহান আল্লাহ বলেন; হে মানব জাতি ! তোমরা তোমাদের পালনকর্তাকে ভয় করো, যিনি তোমাদের এক আত্মা থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং তিনি তার থেকে তাঁর সঙ্গীনী (হাওয়া) কে সৃষ্টি করেছেন, এবং বংশ বৃদ্ধি করেছেন, তাদের দু’জন থেকে অসংখ্য অগণিত পুরুষ ও নারী । আর সেই মহান আল্লাহকে ভয় করো, যার দোহাই দিয়ে তোমরা পরস্পরের নিকট (স্বীয় হক) দাবি করে থাক এবং আত্মীয়তার (হক বিনষ্ট করা ) হতে ভয় করো, নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের সকলের খবরা-খবর রাখেন। (৪-সূরা নিসাঃ ১ )
মহান আল্লাহ সুবাহানাল্লাহু ওয়া তায়ালা আতœীয় বন্ধন কিভাবে উৎপত্তি হলো যার ব্যাখ্যা দিয়েছেন।আরো নির্দেশ করেছেন আতœীয়ের হক আদায় করতে এবং মহান রব স্পষ্ট হুঁশিয়ারী দিয়ে বলেছেন;তিনি সব সময়ই আমাদের এ ব্যাপারে নজরদারীতে রেখেই চলছেন।
মহান আল্লাহ আবারো বলেন;
্রআর হে নবী ! আত্মীয়-স্বজনকে তাদের প্রাপ্য হক দিয়ে দাও এবং মিসকিন ও মুসাফিরদেরও । এটা তাদের জন্যে উত্তম, যারা আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা করে । আর তারাই হলো সফলকাম । (৩০-সূরা রুমঃ ৩৮)
এ আয়াতের মাধ্যমে আল্লাহর তার বান্দাকে স্বরণ করিয়ে দিয়েছেন যে আতœীয় স্বজনদের হক এবং গরীব মিসকিনদের হক আদায় করলে তার রব সন্তষ্টি থাকেন খুশি হোন।আর আল্লাহ সন্তষ্টির প্রকাশ হলো ইহলৌকিক এবং পরলৌকিক শান্তি,সুখ,স্বাচ্ছন্দ্য গন্তব্যস্থল জান্নাত।
আনাস ইবনে মালেক (রাঃ) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি পছন্দ করে যে, তাঁর রিযিক বেড়ে যাক এবং তার হায়াত দীর্ঘায়িত হোক, সে যেন আত্মীয়ের সাথে সদ্ব্যবহার করে। (মুসলিম ৭ম খন্ড, অঃ সদ্ব্যবহার আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা ও শিষ্টাচার, পৃঃ নং-৯৫) মিশকাত হাদীস-৪৭০১)
আত্মীয়তাঁর সম্পর্ক ছিন্ন করার পরিণাম অত্যান্ত ভয়াবহ যা আমাদের অনেকেরই অজানা।তুচ্ছ বিষয় নিয়ে আতœীয়ের সম্পর্ক ছিন্ন করে আমরা জাহান্নামকে হাত ইশারা দিয়ে নিকটেই ডেকে আনছিনা শুধু জাহান্নামের দরজা দ্রুত খুলে দেয়ার জন্য জাহান্নামকে আহ্বান করেই চলছি।এতো কষ্ট ক্লেশ সময় অপচয় করে ইবাদত বন্দেগী করে শরীয়াহ বিভিন্ন হুকুম মেনে চলেছেন কিন্ত আতœীয়ের সম্পর্ক ছিন্ন করে রেখেছেন এবং আপনার অর্থ-বৈভব -সম্পদ থাকা সত্বেও তাদের হক আদায় করছেন না।দুনিয়ার সামান্য বিষয় যেসব বিষয় কিয়ামতের মাঠে কোনো স্থান পাবেনা সেসব বিষয় ও ওজরে আতœীয়ের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে রেখেছেন মনে রাখবেন আপনার জন্য অপেক্ষা করছে ভয়াবহ দিনঃ
১)আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারীদের সাথে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআলা সম্পর্ক ছিন্ন করেন।
আয়েশা (রাঃ) ও আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃরহিম অর্থাৎ আত্মীয়তা বা রক্তের সম্পর্ক আল্লাহর ‘আরশের সাথে ঝুলন্ত রয়েছে। সে বলে, যে ব্যক্তি আমার সাথে সম্পর্ক বজায় রাখবে আল্লাহ তার সাথে সম্পর্ক ঠিক রাখবেন। আর যে আমার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করবে আল্লাহ তার সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করবেন। (সহীহ বুখারী ৫৯৮৮, সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৬৪১৩ ]
আল্লাহ স্বয়ং যার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করেন তার উপায় কোথায় আর?
আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা জাহান্নামে যাওয়ার অন্যতম এক কারণ।এদের প্রতি আল্লাহতায়ালা অভিসম্পাত করেন, “অতঃপর তাদের বধির ও দৃষ্টি শক্তিহীন করেন।’ -সূরা মুহাম্মদ ঃ ২২-২৩”।
তাফসীরকারকদের মতে;এরা দুনিয়ার মোহে অহংকারবশত এমনভাবেই সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করে রাখে আতœীয়ের বিষয় যদি কোনো কিছু অবগত করানো হয় বা কোনো যোগসাজসের চেষ্টা করা হয় বধিরের মতো তারা কিছু শোনতেও চায়না অন্ধের মতো কিছু দেখতেও চায়না।এরা নিজেদের সব সময় সঠিক ভাবলেও ইবলিশের মিষ্টাচারে ভুলে দাম্ভকিতা প্রকাশ করে।ভুলের জগতের বাসিন্দা হওয়া সত্বেও সব সময় নিজের সঠিক মনে করেন।কারন ইবলিশ হচ্ছে ওদের বন্ধু।
২)আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী জাহান্নামে যাবে। যুবাইর ইবনে মুতয়ীম (রাঃ) বর্ণনা করেন, তিনি নবী করীম (সাঃ) কে বলতে শুনছেন, আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না । (বুখারী ৯ম খন্ড, অঃ আচার-ব্যবহার পৃঃ ৩৯৬) মিশকাত হাদীস-৪৭০৫)
আবু মূসা থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
“তিন ব্যক্তি জান্নাতে যাবে না। অভ্যস্ত মদ্যপায়ী, আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্নকারী ও যাদুতে বিশ্বাসী”।আহমদ, হাদীস নং ১৯৫৮৭; হাকিম, হাদীস নং ৭২৩৪; ইবন হিব্বান, হাদীস নং ৫৩৪৬।
৩)আতœীয়ের সম্পর্ক ছিন্নকারীর কোনো ইবাদত তথা দোয়া কবুল হয়না এবং
নেক আমল আল্লাহ তা‘আলা গ্রহণ করেন না।
আবু হুরায়রা থেকে বর্ণিত ; রাসূল (সাঃ) বলেন,
“আদম সন্তানের আমলসমূহ প্রতি বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত্রিতে (আল্লাহ তা‘আলার নিকট) উপস্থাপন করা হয়। তখন আত্মীয়তার বন্ধন বিচ্ছিন্নকারীর আমল গ্রহণ করা হয় না”।[আহমদ, হাদীস নং ১০২৭৭]
তথাবিও কেউ কেউ মনে করতে পারেন দোয়া যদি কবূলই না হয় তাহলে আমি যখন যা চাই তখন পাই কেনো,আমিতো দিন দিন উন্নতির পথে ধাবিত হচ্ছি ঐশ্চর্যের মালিক বনে যাচ্ছি।মনে রাখবেন,ধন সম্পদ,প্রভাব-প্রতিপত্তি যেমন খ্রীস্টান ইহুদী হিন্দু বৌদ্ধ তথা মুশরিক বিধর্মীদের অনেক বেশি আছে আবার দুনিয়ার জান্নাত তাদের হাতের মুঠোয় বটে,তেমনি বিশ্বের সকল আলেমগণ,সকল ইমাম-মুয়াজ্জ্বিনগণ কিন্তু অঢেল ধন সম্পদের মালিক নয় মাত্র স্বল্প অর্থ- কড়িতে জিবন চলে তাদের।
৪) যেই সম্প্রদায়ের মধ্যে আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্নকারী লোক আছে সেই সম্প্রদায়ের উপর আল্লাহর রহমত নাযিল হয় না। আবদুল্লাহ ইবনে আবু আওফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত,নবী (সাঃ) বলেছেনঃ কোন সম্প্রদায়ের মধ্যে আত্মীয় সম্পর্ক ছিন্নকারী থাকলে তাদের উপর আল্লাহর রহমাত নাযিল হয় না।[আদাবুল মুফরাদ, হাদিস নং ৬৩]
৫)রক্তের বন্ধন ব্যাক্তিবর্গ কিয়ামতের দিন স্বাক্ষ্য প্রদান করবে।
ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত,রাসূল (সাঃ) বলেনঃ
তোমরা তোমাদের নসবনামা জেনে রাখো, তোমাদের আত্মীয় সম্পর্ক বজায় রাখো। কেননা দূরাত্মীয়ও সম্পর্কের কারণে নিকটতর হয়ে যায় এবং নিকটাত্মীয়ও সম্পর্কের অভাবে দূরে চলে যায়। প্রতিটি রক্তের বন্ধন কিয়ামতের দিন তার সংশ্লিষ্ট জনের সামনে আসবে এবং সে যদি তাকে দুনিয়ায় যুক্ত রাখে, তবে সে তার পক্ষে সাক্ষ্য দিবে। কিন্তু সে যদি তাকে দুনিয়ায় ছিন্ন করে থাকে, তবে সে তার বিরুদ্ধে সম্পর্ক ছিন্নের সাক্ষ্য দিবে (হাকিম)। [আদাবুল মুফরাদ, হাদিস নং ৭৩]
অতএব,এতো কষ্ট-পরিশ্রম, প্রতিনিয়ত সিঁড়ি বেয়ে উপরে ওঠার এতো প্রতিযোগিতা,এতো অর্থ-সম্পদ,সুরম্য বাড়ী,গাড়ী, আবার আল্লাহকে পাবার জন্য পরকালে শান্তির -স্বস্তির ঠিকানা জান্নাত পাবার প্রত্যয় মেহনত করে ইবাদত বন্দেগী করেও যখন আপনি আজ জানলেন সবই নিষ্ফল আপনার জন্য জাহান্নাম অপেক্ষা করছে কি করবেন এখন?
আসুন তওবা করে কুরআন হাদীসের নির্ধারিত পন্থায় জীবন গড়ি।দুনিয়ার স্বার্থ সংল্লিষ্ট তুচ্ছ বিষয়ে আতœীয়ের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে না রেখে আজ থেকে আল্লাহর বিধান মতো চলি।আমার -আপনার সকল ইবাদতকে মহান আল্লহর কল্যানেই নিবেদিত করি।
লেখকঃ সাংবাদিক,কলামিস্ট ও গবেষক।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন