শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

রক্তের সম্পর্ক ও আত্মীয়তা বজায় রাখা

উবায়দুর রহমান খান নদভী | প্রকাশের সময় : ২১ জুন, ২০১৯, ১২:০৬ এএম | আপডেট : ১২:৩৪ এএম, ২১ জুন, ২০১৯

রক্তের সম্পর্ক বজায় রাখা ও আত্মীয়তার বন্ধন অটুট রাখা মানুষের বুনিয়াদি আখলাকের অন্তর্ভুক্ত। এ জগতে আমরা কোনো বিনিময়ের প্রত্যাশা ও ধারণা ছাড়া যা কিছু কাজ করি সেগুলোকে গভীর দৃষ্টিতে দেখুন। তাহলে সবার মধ্যেই আত্মীয়তার বন্ধন ও রক্তের সম্পর্কের একটা গভীর সম্পর্ক নজরে পড়বে।

যার অন্তরে এ অনুপ্রেরণা ও অনুরাগের বিন্দু-বিসর্গও নেই তার তরফ থেকে অন্যান্য লোকের নির্দয়তা, অত্যাচার, কঠোর হৃদয়তা ও শত্রæতা যা কিছুই লাভ করুক না কেন সেটা অনেক কম কথা; বরং তার চেয়ে অধিক কিছুই তার নিকট থেকে লাভ করা সহজতর। এ জন্য ইসলামী শিক্ষার ক্ষেত্রে রক্তের সম্পর্কের একটি বিরাট ভ‚মিকা ও বৈশিষ্ট্য রয়েছে।

আল্লাহপাকের খাস ও নির্দিষ্ট নামগুলোর মধ্যে আল্লাহ নামের পর যে নামটি সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ও সাধারণভাবে পরিব্যপ্ত, সেটি হচ্ছে রহমান অর্থাৎ খুবই দয়ালু ও অনুকম্পাশীল। এ নামের মধ্যে আরো একটি নাম আছে, তা হলো রাহীম অর্থাৎ যিনি ক্ষমার আধার ও ক্ষমায় পরিপূর্ণ।

হযরত ঈসা আ.-এর উম্মতদের একটি বিশেষ নৈতিক গুণ হলো রক্তের সম্পর্ককে বজায় রাখা। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে ঘোষণা করা হয়েছে, ‘এবং যেসব লোক তাদের অনুগত হয়ে গেল আমি তাদের অন্তরে দয়া ও অনুকম্পাকে ঢেলে দিলাম। এ গুণটির মধ্যে উম্মতে মুহাম্মাদীও তাদের সাথে অংশীদার রয়েছে।’

এ প্রসঙ্গে ইরশাদ হচ্ছে, ‘যে লোক মুহাম্মাদ সা.-এর সাথে রয়েছে তারা কাফিরদের ওপর খুবই শক্তিমান এবং তারা পরস্পর একে অন্যের প্রতি দয়ার্দ্রচিত্ত।’ আপসে পরস্পর সম্পর্কিত লোকদের মধ্যে একজনের সাথে অপরজনের যে নেক সম্পর্ক স্থাপিত হয় তাকে ছেলায়ে রেহেম বা রক্তের সম্পর্কের প্রতি যত্নবান বলা হয়। কেননা, রক্ত সম্পর্কিত আত্মীয়তার সব সম্পর্ক ও যোগসূত্র মাতৃউদর বা দয়ার দ্বারাই সৃষ্টি হয়।

এমনিভাবে রাহীম, রহমান ও রেহেম নামক নামগুলোর উৎপত্তিও ঘটেছে এ মূল ধাতু থেকেই। এর দ্বারা ওই পরিমাণ ফল বেরিয়ে আসে যে, রক্তের সম্পর্কের অনুরাগ রহমতসম্পন্ন আল্লাহর রহমতের প্রতিবিম্ব। এ থেকেই দুনিয়াজোড়া আত্মীয়তার সম্পর্ক স্থাপিত হয়। হাদিস শরীফে এসেছে, রাসূলে পাক সা. বলেছেন, রক্ত ও আত্মীয়তার সম্পর্ক আল্লাহপাকের রহমান গুণ থেকেই সৃষ্টি হয়েছে।

একদা এক ব্যক্তি স্বীয় সন্তানকে সাথে নিয়ে রাসূল সা.-এর দরবারে আগমন করল এবং সন্তানটিকে তার বুকে শুইয়ে রাখল। রাসূল আকরাম সা. এ দৃশ্য দেখে বললেন, তুমি কি তার ওপর রহম করছ? লোকটি বলল, হ্যাঁ তাই করছি। রাসূল সা. বললেন, আল্লাহপাক তোমার ওপর এর চেয়েও অধিক রহম ও করমকারী। যতটুকু রহম তুমি সন্তানের ওপর করছ আল্লাহপাক সব দয়া ও অনুকম্পাকারীদের থেকে সমাধিক দয়া ও অনুকম্পাশীল।

ইসলামে যে দয়াদ্রচিত্ততা ও সুসম্পর্ক বজায় রাখার তালীম দিয়েছে তা কেবলমাত্র মুসলমানদের সাথেই নয়; বরং এর পরিসর খুবই বিস্তৃত। এতে সব বনি আদমই শামিল রয়েছে। যেমন ইরশাদ হচ্ছে, ‘তোমরা দুনিয়াবাদীদের প্রতি দয়া করো। তাহলে আসমানে অধিষ্টিত সত্তাও তোমাদের স্নেহ ও দয়া করবেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (6)
MD.NURUL ISLAM ২১ জুন, ২০১৯, ২:০২ এএম says : 0
শাওয়ালের রোজা ফরজ নামাজের পর সুন্নাতে মুআক্কাদার মতো। যা ফরজ নামাজের উপকারিতা ও তার অসম্পূর্ণতাকে পরিপূর্ণ করে। অনুরূপভাবে শাওয়াল মাসের ৬ রোজা রমযানের ফরজ রোজার অসম্পূর্ণতা সম্পূর্ণ করে এবং তাতে কোনো ত্রুটি ঘটে থাকলে তা দূর করে থাকে। সে অসম্পূর্ণতা ও ত্রুটি কথা রোজাদার জানতে পারুক আর নাই পারুক। তাছাড়া রমযানের ফরজ রোজা পালনের পরপর পুনরায় রোজা রাখার মানেই হলো রমজানের রোজা কবুল হওয়ার একটি লক্ষণ। যেহেতু মহান আল্লাহ্ কোনো বান্দার নেক আমল কবুল করেন, তখন তার পরেই তাকে আরও নেক আমল করার তাওফিক দান করে থাকেন। যেমন উলামাগণ বলে থাকেন, ‘নেক কাজের ছাওয়াব হলো, তার পরে পুনরায় নেক কাজ করা। (আহকামিস সিয়াম)
Total Reply(0)
Kamal Hasan ২১ জুন, ২০১৯, ২:০৩ এএম says : 0
নফল ও ঐচ্ছিক ইবাদতের ফজিলতও এত বেশি যে, তা মুমিনকে উদ্দীপ্ত ও আগ্রহী করে তোলে।
Total Reply(0)
আবুল কালাম আযাদ ২১ জুন, ২০১৯, ২:০৩ এএম says : 0
আসুন, আমরা এই মহান ফজীলত ও বরকতময় শাওয়ার মাসে ছয়টি নফল রোজা পালনের নেক আমলটি নিজেদের জীবনে বাস্তবায়ন করি। আল্লাহ্ তায়ালা আমাদের শাওয়াল মাসে ছয়টি নফল রোজা রাখার মাধ্যমে সারা বছর রোজা পালনের সওয়াব হাসিলের দ্বারা ইহকাল ও পরকালে সফলকাম হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমীন।
Total Reply(0)
MD Masud Howlader ২১ জুন, ২০১৯, ২:০৩ এএম says : 0
রাসুলের হাদিস দ্বারা শাওয়ালের ছয়টি রোজার অনেক ফজীলত এবং রাসুল সা. নিজেও শাওয়ালের এ ছয় রোজা রাখতেন এবং উম্মতকে রাখার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন, সেজন্য এ রোজা রাখা আমাদের জন্য উচিত।
Total Reply(0)
এহসান বিন মুজাহির ২১ জুন, ২০১৯, ২:০৪ এএম says : 0
মহান রাব্বুল আলামিন আমাদের সকলকে যেন শাওয়াল মাসের ছয়টি রোজা এখলাসের সাথে রাখার তাওফিক দান করেন। আমিন
Total Reply(0)
Sahin Ahmed ২১ জুন, ২০১৯, ২:০৪ এএম says : 0
নফল রোজার অনেক বড় ফজিলত ও ছাওয়াব রয়েছে।
Total Reply(0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন