হেফাজতে ইসলামের ‘অভিযুক্ত’ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে তথ্য-উপাত্ত দিয়েছে ১৭ প্রতিষ্ঠান। এ তথ্য জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)-এর সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার।
গতকাল বুধবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান। দুদক সচিব বলেন, সরকারি-বেসরকারি ১৭টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে হেফাজতে ইসলামের অভিযুক্ত ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের তিন বছরের আয়, সরকারি অনুদান, অডিট প্রতিবেদন ও ব্যক্তিগত নথিপত্র দুদকে এসে পৌঁছেছে। এসব তথ্য এখন যাচাই-বাছাই পর্যায়ে রয়েছে।
তিনি বলেন, হেফাজতে ইসলাম সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্যক্তির সম্পদের অনুসন্ধান কার্যক্রম চলমান। ১৯টি মাদরাসার তথ্য চেয়ে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা, প্রতিষ্ঠান, দফতর ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে চিঠি দেয়া হয়েছিল। এরই মধ্যে ১৭টি প্রতিষ্ঠান থেকে ২০১৬-১৭ অর্থবছর থেকে ২০২০-২১ অর্থবছর পর্যন্ত নিজস্ব আয়, সরকারি অনুদান, ব্যক্তিগত ও অন্যান্য দানসহ প্রতিষ্ঠানের অডিট প্রতিবেদন ও ক্যাশবই সরবরাহ করা হয়েছে। তবে এখনও উল্লেখযোগ্য তথ্য হাতে আসেনি। প্রাপ্ত তথ্য পর্যালোচনা চলছে। বিদেশি ফান্ডিং সম্পর্কে এখনো তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছ থেকে কিছু জানা যায়নি।
কী কী তথ্য পাওয়া গেছে- প্রশ্ন করা হলে দুদক সচিব বলেন, ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে মামুনুল হকসহ কয়েক জনের ব্যাংক হিসাবের তথ্যাদি পাওয়া গেছে। অন্যান্য প্রতিষ্ঠান থেকে আরো কিছু তথ্য এসেছে। মাওলানা মামুনুল হক, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা আতাউল্লাহ আমিনী, মাওলানা জালাল উদ্দিন আহম্মেদ ও মোহাম্মদ মহসিন ভূঁইয়ার আয়কর নথি পর্যালোচনা করা হচ্ছে।
এর আগে গত ২৪ মে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের শীর্ষ অর্ধশত নেতার বিরুদ্ধে তহবিল আত্মসাৎ ও দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানে সরকারি ১১টি দফতরে চিঠি দেয় দুদক। চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি, হাটহাজারী ও পটিয়ার সহকারী কমিশনার (ভূমি), ঢাকা জেলা রেজিস্ট্রার, বাংলাদেশ ব্যাংকের বিএফআইইউ প্রধান, ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও নেত্রকোনার পুলিশ সুপার, নির্বাচন কমিশন এবং পাসপোর্ট অ্যান্ড ইমিগ্রেশনের মহাপরিচালক বরাবর পাঠানো পৃথক চিঠিতে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট নথিপত্র তলব করা হয়।
হেফাজতের শীর্ষ অর্ধশত নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা সংগঠনের তহবিল, বিভিন্ন মাদরাসা, এতিমখানা ও ইসলামি প্রতিষ্ঠানের অর্থ এবং ধর্মীয় কাজে দেশে আসা বৈদেশিক সহায়তা আত্মসাৎ বা স্থানান্তর করেছেন। এর আগে, বাংলাদেশ ব্যাংক ও দুদকের গোয়েন্দারা যাচাই-বাছাইয়ে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পান। এরপর দুর্নীতি দমন কমিশন থেকে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
গত ১৭ মে দুদক পরিচালক মো. আকতার হোসেন আজাদের নেতৃত্বে ৬ সদস্যের একটি টিম গঠন করা হয়। দলের অন্য সদস্যরা হলেন- উপ-পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম ও মোহাম্মদ নূরুল হুদা, সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ ও মো. সাইদুজ্জামান নন্দন এবং উপ-সহকারী পরিচালক মো. সহিদুর রহমান।
চলতি বছর ৪ এপ্রিল বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) হেফাজত নেতা জুনায়েদ বাবুনগরী, নূর হুসাইন কাসেমী, মামুনুল হকসহ ৫৪ নেতার ব্যাংক হিসাবে লেনদেনের তথ্য যাচাই-বাছাই করে। সেখানে তাদের হিসাবে গরমিল পাওয়া যায়। যার একটি প্রতিবেদন দুদকে পাঠানো হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন