আগের দিন ব্যাট হাতে আলো ছড়িয়েছিলেন প্রান্তিক নওরোজ নাবিল। তার ঝড়া সেঞ্চুরিতে নেপালকে গুড়িয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ শুরু করেছিল বাংলাদেশের যুবারা। সেই ধারা অব্যগত থাকলো পরের দিনও। তবে শুধু সেঞ্চুরিয়ানের তালিকায় নাবিলের বদলে নামটা মাহফিজুল ইসলাম। গতকাল এই ওপেনারের সঙ্গে মেহরব হাসানের ঝড়ো ইনিংসে বাংলাদেশ পায় বড় পুঁজি। পরে বোলারদের নৈপুণ্যে কুয়েত অনূর্ধ্ব-১৯ দলকে সহজেই হারাল রকিবুল হাসানের দল। টানা দুই জয়ে এক পা দিয়ে রাখল যুব এশিয়া কাপের সেমি-ফাইনালে। শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের জয়টি ২২৭ রানে। ২৯২ রানের লক্ষ্য তাড়ায় কুয়েতের যুবারা গুটিয়ে যায় ৬৯ রানেই।
কুয়েতের বিপক্ষে ‘বি’ গ্রæপের ম্যাচে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ওপেনার মাহফিজুল ১১৯ বলে খেলেন ১১২ রানের ইনিংস। বাউন্ডারি মেরে মাহফিজুল ফিফটি পূর্ণ করেন ঠিক ৫০ বলে। ১০৭ বলে স্পর্শ করেন তিন অঙ্ক। ১২ চার ও ৪ ছক্কায় গড়া তার ইনিংসটি। ২৪ বলে ৪২ রান করেন মেহরব। বোলিংয়ে ৮ ওভারে ¯্রফে ১০ রানে ৩ উইকেট নিয়ে দলের সফলতম বোলার রিপন মন্ডল। আসরে বাংলাদেশের প্রথম দুই ম্যাচেই হলো সেঞ্চুরি। আগের দিন নেপালের বিপক্ষে ১৫৪ রানে জয়ের ম্যাচে তিনে নেমে ১১২ বলে অপরাজিত ১২৭ রানের ইনিংস খেলেছিলেন নাবিল।
রান তাড়ায় শুরু থেকে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারায় কুয়েত। তাদের হয়ে দুই অঙ্কে যেতে পারেন কেবল দুই জন। অধিনায়ক মিত ভাবসার ইনিংস শুরু শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন সর্বোচ্চ ৪৩ রানে। পঞ্চম ওভারে জন সালদানহাকে নিজের ফিরতি ক্যাচে বিদায় করে বাংলাদেশকে প্রথম সাফল্য এনে দেন মুশফিক হাসান। পরের ওভারে সাদিক ও উমরকে ফিরিয়ে দেন রিপন। ৭ রানে ৩ ও ৩৪ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে পঞ্চাশের আগেই গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় পড়েছিল কুয়েত। ভাবসার ব্যাটে তা এড়াতে পারলেও বড় পরাজয় আটকাতে পারেনি তারা। রিপনের ৩টি ছাড়া মেহরব ও রকিবুল নেন ২টি করে উইকেট। আগামী মঙ্গলবার গ্রæপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশের যুবারা।
একই দিন দুবাইয়ের আইসিসি অ্যাকাডেমির ২ নম্বর ভেন্যুতে রোমাঞ্চরকর এক লড়াইয়ে ভারতকে ২ উইকেটে হারিয়েছে পাকিস্তান যুবারা। ভারতের দেওয়া ২৩৮ রানের জবাবে শেষ বলে চার মেরে দলকে জয়ের উচ্ছ¡াসে মাতান আহমেদ খান। ২ টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৪৯ ওভারে অলআউট হবার আগে ২৩৭ রান তোলে ভারত। জিশান জামির একাই নিয়েছেন ৬০ রানে ৫ উইকেট। হারনুর সিং ৪৬, রাজ বাওয়া ২৫, আরাধ্য যাদব ৫০, কুশল থাম্বা ৩২ ও রাজবর্ধন হাঙ্গারগেকার করেন ৩৩ রান। এছাড়া ৩০ রান আসে অতিরিক্ত থেকে। জবাবে টপ অর্ডার মুহাম্মদ শেহজাদের (৮২) দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে শুরু থেকেই জয় দেখতে থাকে পাকিস্তান। তবে বাকিদের ইনিংস লম্বা করতে না পারার আক্ষেপে পুড়তে চলেছিল এশিয়ার পরাশক্তি দলটি। মাজ সাদিকের ২৯, কাসিম আকরাম ২২, ইরফান খান ৩৩, রিজওয়ান মেহমুদ করেন ২৯ রান। তবে শেষ দিকে আহমেদের ১৯ বলে ৩ চার ও এক ছক্কায় ২৯ রানের ক্যামিওতে সেই চাপ কাটিয়ে জয় ছিনিয়ে নেয় বাবর-আফ্রিদিদিরে উত্তরসূরীরা। বাংলাদেশের মতো ‘এ’ গ্রæপের দুই ম্যাচ শেষে দুই জয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে পাকিস্তান। দুই ম্যাচে এক জয় পাওয়া ভারত আপাতত দুই নম্বরেই। গ্রæপে দিনের অপর ম্যাচে আল্লাহ নূরের সেঞ্চুরিতে আরব আমিরাতকে (১৪.৪ ওভারে ৫৪) গুড়িয়ে দিয়েছে আফগানিস্তান (১৯৪/৯)।
বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল : ৪৯.২ ওভারে ২৯১ (মাহফিজুল ১১২, আইচ ২০, আরিফুল ২৩, তাহজিবুল ২৫, মেহরব, ৪২, রকিবুল ২১, মুশফিক ১৩*; মির্জা ১/২৯, ফারুক ১/৩৩, উমর ২/৪৫, সাদিক ৩/৪০, থমাস ৩/৪৮, বাসতাকি ১/২৪)। কুয়েত অনূর্ধ্ব-১৯ দল : ২৫.৩ ওভারে ৬৯ (ভাবসার ৪৩, সালদানহা ২, সাদিক ১, উমর ০, জহির ২, বাসতাকি ১, ফারুক ০, থমাস ১, মির্জা ১১, জিশান ০, হাবিয়ের ০; মুশফিক ১/১৯, রিপন ৩/১০, নাইমুর ১/১৫, মেহরব ২/১৪, রকিবুল ২/১১)। ফল : বাংলাদেশ ২২৭ রানে জয়ী। ম্যান অব দ্য ম্যাচ : মাহফিজুল ইসলাম (বাংলাদেশ)।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন