মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি নেই

কামাল আতাতুর্ক মিসেল : | প্রকাশের সময় : ১০ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:০১ এএম

করোনার নতুন ধরন ওমিক্রনের সংক্রমণ বাড়লেও যানবাহনে নেই স্বাস্থ্যবিধির মানার বালাই। যানবাহনে সর্বত্রই গাদাগাদি করে চলাফেলার করছে মানুষ। গতকাল রাজধানী ঢাকার প্রবেশমুখগুলোর মহাসড়কে দেখা যায় মানুষ যেভাবে পারছে ছুটছে ঢাকা ও ঢাকার আশপাশে।
আইইডিসিআর-এর সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মোসতাক আহমেদ বলেন, গাদাগাদি করে যানবাহনে মানুষের যাতায়াত করোনা সংক্রমণ আরো বাড়বে। এতে সামাজিক ট্রান্সমিশন ভয়াবহভাবে বেড়ে যাবে। শনিবার রাজধানীর প্রবেশ মুখ যাত্রাবাড়ি, আবদুল্লাহপুর, গাবতলীতে গাদাগাদি করে চলতে দেখা গেছে। কিছু মানুষের মুখে মাস্ক দেখা গেলেও সামাজিক দূরত্বে মেনে চলাচল করছে না কেউ। মানুষকে সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করে চলাফেরা করতে বাধ্য করারও কেউ নেই। জানতে চাইলে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, এ ধরনের চলাফেরা করোনা ঝুঁকি আরো বাড়াবে। বিপদে ফেলা হচ্ছে দেশকে। স্বাস্থ্যবিধি না মানলে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়বে প্রচুর মানুষ।
রাজধানীর গণপরিবহনগুলোতে দেখা গেছে, বেশির ভাগ মানুষ মাস্ক পরেনি। বাসে ওঠার আগে যাত্রীদের হাতে জীবাণুনাশক দিতেও দেখা যায়নি। গণপরিবহনে অতিরিক্ত যাত্রী বহন এবং স্বাস্থ্যবিধি না মানার বিষয়ে যাত্রী ও বাস কর্তৃপক্ষ করেছে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ। এসব তদারকি করতেও দেখা যায়নি সংশ্লিষ্ট কাউকে। গতকাল শনিবার রাজধানীতে চলাচলরত ঢাকার প্রবেশমুখগুলোর সড়কসহ পল্টন, গুলিস্তান, কাকরাইল, রামপুরা, মিরপুর, আজিমপুর, উত্তরা, শাহবাগ, বাড্ডা ও কুড়িল এলাকায় ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।
শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শাহবাগে ইউনাইটেড সার্ভিসের একটি বাসে যাত্রীদের ঠেলাঠেলি করে উঠতে দেখা গেছে। এমনকি বাসের দরজায় ঝুলেও যাত্রীদের গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে। বেশির ভাগ যাত্রী মাস্ক পরেনি। আবার অনেক যাত্রীর মাস্ক থাকলেও তা ঝুলছিল থুতনিতে। ওই বাসের হেলল্পার কামরুল ইসলামের কাছে স্বাস্থ্যবিধি না মানার কারণ জানতে চাইলে তিনি উল্টো প্রশ্ন রাখেন, যাত্রীরা না মানলে আমগোর কী করার আছে? রামপুরা এলাকায় আল মক্কা ও তুরাগ পরিবহনের বাসেও একই চিত্র দেখা গেছে। মাস্ক না পরার বিষয়ে জানতে চাইলে তুরাগ পরিবহনের পঞ্চাশোর্ধ্ব এক যাত্রী বলেন, করোনা ফরোনা নাই। আল্লাহ ভরসা। এগুলা বড়লোকের ফন্দি-ফিকির।
কাকরাইল এলাকায় প্রচেষ্টা পরিবহনের চালকের সহযোগী মনির হোসেন বলেন, যাত্রীরা মাস্ক না পরলে আমাদের কিছু করার নাই। আগে বাসে সাবান-পানি থাকত। যাত্রীরা নেয় না বলে আমরাও রাখি না। সিটিং সার্ভিস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বাসে যাত্রীর ভিড় বেড়েছে। ওই বাসে উঠে দেখা যায়, বেশির ভাগ যাত্রী মাস্ক পরেনি। তোফায়েল নামের এক যাত্রী বলেন, মাস্ক আছে, বাসে গরম লাগে, তাই খুলে রেখেছি। পাশে বসা আরেক যাত্রী বলে ওঠেন, করোনা যার হওয়ার হয়ে গেছে। এখন আর করোনা নাই। করোনার ভাঁওতাবাজি বন্ধ করতে হবে।
রাজধানীর প্রবেশমুখ সায়দাবাদ এলাকায় শিকড় পরিবহনের একটি বাসের চালকের মুখে মাস্ক না থাকায় জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, সারা দিন কত মাস্ক পইরা থাকন যায়! দরকার হলে পরি। বাসে জীবাণুনাশক না রাখা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কোনো যাত্রী তো চায়ও না। চাইলে না হয় বুঝতাম যে রাখা দরকার। যাত্রী আব্দুল হালিম নামে এক যাত্রী জানান, বাসের পক্ষ থেকে কিছুই জীবাণুনাশক করা হয়নি। জাকির হোসেন নামে আরেক যাত্রী বলেন, আইনশৃঙ্খলা কঠোর না থাকায় স্বাস্থ্যবিধি কার্যকর হচ্ছে না।
রফিক নামে যাত্রী থুতনির নিচে মাস্ক লাগিয়ে গাড়ির সিটে বসে আছেন। মাস্ক পরছেন না কেন জানতে চাইলে বলেন, নিশ্বাস নিতে সমস্যা হচ্ছে। যার জন্য মাস্ক পরছেন না। রবিউল ইসলাম জানান, ভুলে মাস্ক বাসায় রেখে এসেছি। কাদির, রহিমা বেগম ও সবুর আলীসহ অনেকেই একই কথা বলেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন