ভারত কর্তৃক অবৈধভাবে দখলকৃত জম্মু ও কাশ্মীরে দেশটির নৃশংসতা বন্ধ করতে এবং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি রোধ করতে জাতিসংঘকে তার প্রচেষ্টা জোরদার করতে জরুরীভাবে কাশ্মীর বিরোধের সমাধান করার আহ্বান জানিয়েছে পাকিস্তান।–ডন, কেএমএস
জাতিসংঘে পাকিস্তানের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মুনির আকরাম সংস্থাটির কাজের বিষয়ে জাতিসংঘ প্রধানের প্রতিবেদনের বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে গতকাল শুক্রবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বক্তৃতায় বলেন, শান্তি ও নিরাপত্তা জাতিসংঘের কাজের মূলে থাকতে হবে।তিনি বলেন, আমরা নিরাপত্তা পরিষদ এবং মহাসচিবকে জম্মু ও কাশ্মীর বিরোধের দ্রুত এবং শান্তিপূর্ণ সমাধান প্রচার করতে এবং কাশ্মীরি জনগণের বিরুদ্ধে ভারতীয় সন্ত্রাসের রাজত্বের অবসান ঘটাতে তাদের যথেষ্ট কর্তৃত্ব প্রয়োগ করার জন্য অনুরোধ করছি।
রাষ্ট্রদূত মুনির আকরাম বলেন, জাতিসংঘ এবং তার মহাসচিব জাতিসংঘ সনদ দ্বারা প্রদত্ত ক্ষমতা সম্পূর্ণরূপে ব্যবহার করে, যেমন আর্টিকেল ৯৯-এ আছে, সাধারণ পরিষদে পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে শান্তি ও নিরাপত্তার হুমকি মোকাবেলায় “আরও অনেক কিছু”করতে পারেন, যদি নিরাপত্তা পরিষদ তা করতে অক্ষম হয়। রাষ্ট্রদূত বলেন, জম্মু ও কাশ্মীর নিয়ে বিরোধ এবং মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ জম্মু ও কাশ্মীরকে হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলে পরিণত করতে ভারতের প্রচেষ্টার ফলে দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি ও স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে প্রাথমিক হুমকি তৈরি হয়েছে। এটি কাউন্সিলের প্রস্তাবগুলির গুরুতর লঙ্ঘন, যা কাশ্মীরিদের জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে গণভোটের মাধ্যমে আত্মনিয়ন্ত্রণ ও আত্মঅধিকারের প্রতিশ্রুতি দেয়।
তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, এখনও পর্যন্ত, আইআইওজেকেতে ভারতের অপরাধের জন্য কোনও জবাবদিহিতা নেই। ভারত অধিকৃত ভূখণ্ডে যে ৯ লক্ষ সৈন্য মোতায়েন করেছে, তাদের কঠোর ভারতীয় আইন সম্পূর্ণ দায়মুক্তি প্রদান করে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
পাকিস্তান আইআইওজেকেতে খুররাম পারভেজের মতো সাংবাদিক এবং সুশীল সমাজের কর্মীদের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান হয়রানি, অবৈধ গ্রেপ্তার এবং জাল ফৌজদারি মামলার নিবন্ধনের নিন্দা করেছে৷ কাশ্মীর প্রেসক্লাবের উপর সাম্প্রতিক হামলা দখলকৃত ভূখণ্ডে যারা এর অপরাধমূলক ও গণহত্যামূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে তাদের আওয়াজ তুলেছে তাদের নীরব করার জন্য তাদেরকে ভারতের কালোতালিকভুক্ত করা, তাদের প্রতি নিষ্ঠুর শক্তি এবং জবরদস্তির আরও একটি প্রকাশ বলেও রাষ্ট্রদূত মুনির আকরাম বলেন।
তিনি জাতিগত এবং ধর্মীয় ঘৃণা এবং সহিংসতার উদ্ধৃতি উল্লেখ করে বলেন, ইসলাম ফোবিয়া এর গুরুতর প্রকাশগুলির মধ্যে রয়েছে এথনিক ক্লিঞ্চিং এবং ভারতে মুসলমানদের গণহত্যার আহ্বান করা হয়েছে। ইসলামো ফোবিয়ার সবচেয়ে খারাপ প্রকাশ হল মুসলমানদের বিরুদ্ধে ভারতে 'হিন্দুত্ব' অনুসারীদের সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় প্রচারণা হচ্ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
পাকিস্তানি রাষ্ট্রদূত সম্প্রতি "জেনোসাইড ওয়াচ"-এর প্রধান অধ্যাপক গ্রেগরি স্ট্যানটনের দেওয়া বিবৃতির দিকেও দৃষ্টি আকর্ষণ করেন, যেখানে তিনি বলেছিলেন: "আমরা সতর্ক করছি যে ভারতে গণহত্যা খুব ভালভাবে ঘটতে পারে।" আমরা সেক্রেটারি জেনারেল এবং জাতিসংঘকে ইসলাম ফোবিয়া মোকাবিলায় এবং ভারতের মুসলমানদের বিরুদ্ধে গণহত্যার বিপদ রোধে সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাই," তিনি বলেন।
রাষ্ট্রদূত মুনির আকরাম আরও বলেন, শান্তিরক্ষায় জাতিসংঘের ভূমিকা একটি বড় সাফল্য এবং পাকিস্তান এই ধরনের অপারেশনের কার্যকারিতা নিশ্চিত করার জন্য অবিচল অংশীদার থাকবে। বিশেষ করে, ভারত ও পাকিস্তানের জন্য জাতিসংঘের সামরিক পর্যবেক্ষক গ্রুপ (ইউএনএম ও জিআইপি) জম্মু ও কাশ্মীর অঞ্চলের বিতর্কিত স্থানে অবস্থান করছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন