শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) ভিসি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভিসি’দের সংগঠন ‘বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদ’। গত বৃহস্পতিবার সংগঠনটির ভার্চ্যুয়াল এক সভায় ফরিদ উদ্দিন আহমেদের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়ে তারা বলেছেন, শাবিপ্রবিতে যে ঘটনাপ্রবাহ, তাতে যদি ভিসিকে পদত্যাগ করতে হয়, তাহলে তারাও পদত্যাগ করতে প্রস্তুত।
বর্তমানে দেশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় আছে ৫০টি। দেশের কমপক্ষে ৩৫টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ’ রা ওই বৈঠকে যোগ দেন। ওই বৈঠকে শাবিপ্রবির ভিসি ফরিদ উদ্দিনও উপস্থিত ছিলেন । শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি ’ র পদত্যাগের দাবিতে সপ্তাহখানেক ধরে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়টির এমন পরিস্থিতি নিয়েই বৃহস্পতিবার ভার্চ্যুয়াল সভা করেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ’ রা । জানা গেছে , বৈঠকে শাবিপ্রবির আন্দোলন পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয় এবং ভিসি ফরিদ উদ্দিন আহমেদের প্রতি সহমর্মিতা জানানো হয়।
বক্তব্য দেয়া ভিসি ’ দের কথাগুলো ছিল এমন , শিক্ষার্থীরা প্রভোস্টের পদত্যাগ বা তাকে অপসারণ চেয়েছিলেন। ভিসি সেই দাবি মেনে নেয়ার কথাও বলেছেন। এরপরও সভায় যাওয়ার পথে ভিসি ’ কে ধাওয়া করা হয়। অবরুদ্ধ করা হয় । বৈঠকে উল্লেখ করা হয় , মুষ্টিমেয় কিছু মানুষ ভিসি ’ কে অপমান করবে , ধাওয়া করবে - এভাবে চললে বিশ্ববিদ্যালয়ই চালানো যাবে না। এমনটি মেনে নিলে সব বিশ্ববিদ্যালয়েই একই পরিস্থিতি হতে পারে। তাই ফরিদ উদ্দিনকে যদি পদত্যাগ করতে হয় , তাহলে অন্যরাও পদত্যাগ করতে প্রস্তুত আছেন বলে জানান তারা ।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিদের সংগঠনটির সভাপতি ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হাবিবুর রহমান গতকাল শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রতিনিধিদলের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। সন্ধ্যায় রাজধানীর হেয়ার রোডে শিক্ষামন্ত্রীর সরকারি বাসায় বৈঠকটি হয়। বৈঠক শেষে সাংবাদিকেরা ভিসিদের অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, এ রকম কথা আমি শুনিনি। তবে এটাও ঠিক একজন শিক্ষক যখন লাঞ্ছিত হন, তখন সারা দেশের শিক্ষকেরাও নিশ্চয়ই ব্যথিত হন। এখানে অনেক রকম ঘটনা ঘটেছে। সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে সুষ্ঠু সমাধানে যেতে হবে।
শিক্ষামন্ত্রী অনশন প্রত্যাহার করে শিক্ষার্থীদের আলোচনায় বসার আহ্বান জানান। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পারিবারিক কারণে এখন তিনি সিলেটে যেতে পারছেন না। তবে প্রয়োজনে তাঁর প্রতিনিধি যেতে পারেন। শিক্ষার্থীরা যখনই কথা বলতে রাজি হবে, তখনই প্রতিনিধি যেতে পারবেন। বৈঠকে শাবিপ্রবির শিক্ষক প্রতিনিধি ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী শহীদুল্লাহ, সদস্য মোহাম্মদ আলমগীর, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি তুলসী কুমার দাস, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মুহিবুল আলম, ফিজিক্যাল সায়েন্সেস অনুষদের ডিন মো. রাশেদ তালুকদার, অ্যাপ্লায়েড সায়েন্সেস অনুষদের ডিন আরিফুল ইসলাম ও ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন খায়রুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনও। সংগঠনটি গত শুক্রবার এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখতে সরকারের গোয়েন্দা সংস্থাসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন