শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১, ০২ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

মহানগর

আত্মহত্যার আগে লাইভে যা বলেছেন নায়ক রিয়াজের শ্বশুর

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৫:১৪ এএম

আমার বয়স ৫৮ বছর, কোনো একসময় আমি খুব ভালো ব্যবসায়ী ছিলাম। বর্তমানে আমি ক্যানসার রোগে আক্রান্ত। এখন আমার কোনো ব্যবসা বা কোনো কিছুই নেই। আজকের লাইভে আসার উদ্দেশ্য হচ্ছে আমার অভিজ্ঞতা আপনাদের জানানো। এ অভিজ্ঞতা থেকে আপনারা হয়ত অনেক কিছু জানতে পারবেন, সাবধানতা অবলম্বন করবেন। গত ৩০ তারিখ আমার খালা মারা যান। ওনার একটিমাত্র ছেলে, কিন্তু মা মারা যাওয়ার খবরে পেয়েও সে দেশে আসেনি। এ বিষয়টি আমাকে অনেক দুঃখ দিয়েছে। আমার একটা ছেলে আছে, সে অস্ট্রেলিয়াতে থাকে, আমি আমার বাসায় সম্পূর্ণ একা থাকি। খালা মারা যাওয়ার পর থেকে আমার ভেতরে ভয় ঢুকে গেছে। আমি যদি আমার বাসায় মরে পড়ে থাকি, আমার মনে হয় না এক সপ্তাহেও কেউ জানতে পারবে।
আমরা যা কিছু করি, সবই পরিবার ও সন্তানের জন্য। একবার চিন্তা করে দেখেন, নিজের আয় করা অর্থের ২০ শতাংশও নিজের জন্য ব্যয় করেন না। করোনা শুরুর আগ থেকে আমি বাংলাদেশে আছি। একা থাকা যে কী কষ্ট, তা যারা একা থাকেন তারাই জানেন। আমার আর পৃথিবীর প্রতি, পৃথিবীর মানুষের জন্য কোনো ভালোবাসা নেই। কারণ যাদের জন্য আমি বেশি করেছি, তাদের কাছ থেকেই আমি প্রতারিত হয়েছি। আমার এক বন্ধু ছিল বাবুল, যাকে আমি নিজে না খেয়ে খাইয়েছি। সে আমার প্রায় ২৩ থেকে ২৫ লাখ টাকা মেরে দিয়েছে। এভাবে আমি বিভিন্ন মানুষের কাছে ৫ কোটি ২০ লাখ টাকার মতো পাই। সবশেষ আমি নোবেল নামে একজনকে বিশ্বাস করি। যাকে আমি মিনারেল ওয়াটার প্ল্যান্টের দায়িত্ব দিয়েছিলাম। কিন্তু দুই বছরেও সেই প্ল্যান্টের যন্ত্র সে কেনেনি। পরে তার কাছে টাকা ফেরত চাইলে, ঝগড়া হয়। এরপর সে দুই দফায় ১ লাখ ২০ হাজার টাকা দেয়। বাকি টাকা সে আমাকে দিচ্ছে না। মানুষ কেন এতো লোভী হয়?
বাবারা না খেয়েও সন্তানদের খাওয়ানোর চেষ্টা করে। ফ্যামিলিকে দেওয়ার চেষ্টা করে কিন্তু ফ্যামিলি অনেক সময় অনেক কিছু বুঝতে চায় না। কেনো বুঝতে চায় না কেনো বুঝে না?
নিজেকে আর মানায় নিতে পারলাম না। যারা দেখছেন এটাই হয়তো আপনাদের সঙ্গে আমার জীবনের শেষ দেখা। পৃথিবী ছেড়ে কেউ যেতে চায় না। হয়তো আমি দুইদিন পরে যেতাম দুইদিন আগে যাচ্ছি। সবাই ক্ষমা করে দিও। ছেলে-মেয়েকে বলবো তোমরা দুইজনে মিলমিশে চলো। একে অন্যের খোঁজ খবর নিও, আর বাবা হিসেবে আমাকে ক্ষমা করে দিও। ভালো থেকো।
আমি যেটা দিয়ে সুসাইড করছি সেটা অবৈধ কিছুনা। এই পিস্তলের লাইসেন্স আছে। আত্মীয় স্বজন যারা আছো আমি যেই কবরস্থানটা তৈরি করেছি সেখানে দাফন করো না। আমাকে মোহাম্মাদপুর বেরীবাধে যেই একটা কবরস্থান হয়েছে সেখানে দাফন করে দিও। আমি যা দিয়ে মারা যাব তা কোনো অবৈধ অস্ত্র নয়। আমার লাইসেন্স করা বৈধ অস্ত্র। এই দেখুন এর মেয়াদ এক বছর রিনিউ করা হয়েছে। কলেমা তৈয়ব- লা ইলাহা ইল্লালাহু মুহাম্মাদুর রসুলুল্লাহ। কলেমা শাহাদাৎ- আশ্শাহাদু আল্লা ইলাহা ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রসুলুহু। (গুলি)
(সংকলিত অংশ)

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন