আইপিএল নিলামের প্রথম দিন সাকিব আল হাসানকে কেনেনি কোনো দলই। গতকাল দ্বিতীয় দিন তার দল পাওয়ার একটা সুযোগ ছিল। কিন্তু দ্বিতীয় দফা নিলামেও দল পেলেন না তিনি। ব্যাঙ্গালুরুতে নিলামের শেষ দিনের শেষ ধাপ ‘অ্যাকসিলারেটেড অকশন।’ এই ধাপের দ্বিতীয় পর্বে অবিক্রিত ক্রিকেটার ও বাকি থাকা অন্য ক্রিকেটারদের মধ্যে যাদের প্রতি ফ্র্যাঞ্চাইজিদের আগ্রহ আছে, তাদের তালিকা নিয়ে আবার নাম তোলা হয়। এখানে দ্বিতীয় নামটিই ওঠে সাকিবের। ফ্র্যাঞ্চাইজিদের কাছ থেকে এই তালিকা পাওয়া বলে এবার তার দল পাওয়ার বাস্তব সম্ভাবনাই ছিল। কিন্তু ২ কোটি ভিত্তিমূল্যের ক্রিকেটারের প্রতি আগ্রহ দেখায়নি কোনো দল।
২০১০ আসরের পর তাই প্রথমবার আইপিএলের নিলাম থেকে হতাশ হতে হলো সাকিবকে। কেবল নিষিদ্ধ থাকার কারণে ২০২০ সালে আইপিএলে ছিলেন না বাংলাদেশের অলরাউন্ডার। এই এক দশকে এখনো পর্যন্ত আইপিএলে ৭১টি ম্যাচ খেলেছেন সাকিব। ব্যাট হাতে রান করেছেন ৭৯৩। বল হাতে উইকেট ৬৩টি। আইপিএলে কলকাতার হয়ে ২০১২ ও ২০১৪ সালে শিরোপা জিতেছে সাকিবের দল। হায়দরাবাদের হয়ে একবার হয়েছেন রানার্সআপ (২০১৮)।
এখন তার খেলার সুযোগ আছে কেবল চোট বা অন্য কোনো কারণে কেউ অনুপস্থিত থাকলে সেই ক্রিকেটারের বদলি হিসেবে। যদি কোনো দল দ্বিতীয় দফা নিলাম শেষেও খেলোয়াড় কিনতে চায় এবং কেউ কোনো খেলোয়াড়ের নাম প্রস্তাব করে, তবে আবার নিলামে নাম ওঠার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু সাকিবের ভিত্তিমূল্য ২ কোটি রুপি। পাঁচটি দলের তহবিল এরই মধ্যে এর নিচে নেমে গেছে। বাংলাদেশের লিটন কুমার দাস, তাসকিন আহমেদ ও শরিফুল ইসলামের নামই ওঠেনি নিলামে। নিলাম থেকে আইপিএলে এবার তাই বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি মুস্তাফিজুর রহমান। নিলামের প্রথম দিনে ভিত্তিমূল্য ২ কোটি রুপিতে বাঁহাতি পেসারকে দলে নেয় দিল্লি ক্যাপিটালস।
সাকিব এখন ব্যস্ত বিপিএলে। আজ টুর্নামেন্টের প্রথম কোয়ালিফাইয়ার ম্যাচে তিনি ফরচুন বরিশালকে নেতৃত্ব দেবেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে। এবারের বিপিএলে দুর্দান্ত ফর্মে আছেন সাকিব। প্রথম তিন ম্যাচে সেভাবে রানের দেখা পাননি। চতুর্থ ম্যাচ থেকে ফর্মে ফেরেন। সে ম্যাচে করেছিলেন ২৭ বলে ৪১। সাকিবের ব্যাট এরপর থেকে হাসছেই। সর্বশেষ পাঁচ ম্যাচে তার পারফরম্যান্স এমন- ৪১ রান ও ১০ রানে ২ উইকেট, ৫০ রান ও ২৩ রানে ৩ উইকেট, ৫০ রান ও ২০ রানে ২ উইকেট, ৩৮ রান ও ২৩ রানে ২ উইকেট এবং অপরাজিত ৫১ রান ও ২১ রানে ১ উইকেট। সব মিলিয়ে সাকিব এবারের বিপিএলে ৯ ম্যাচে করেছেন ২৭৬ রান, ৩৪.৫০ গড়ে। রান তুলেছেন ১৪৬.৮০ স্ট্রাইক রেটে। আর বোলিংয়ে নিয়েছেন ১৫ উইকেট, ১১.৭৩ গড়ে। ওভারপ্রতি দিয়েছেন মাত্র ৪.৯৫ করে রান। সর্বোচ্চ রান-সংগ্রাহকের তালিকায় সাকিব আছেন চার নম্বরে, উইকেটশিকারির তালিকায় আছেন তিনে। এমন ফর্মের পরেও আইপিএলে দলই পেলেন না সাকিব! গত আসরে কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে বাজে পারফরম্যান্সই হয়তো কাল হলো তার। ৮ ম্যাচ খেলে মাত্র ৯.৪০ গড় ও ৯৭.৯১ স্ট্রাইক রেটে রান করেছিলেন মোট ৪৭, উইকেট নিয়েছিলেন স্রেফ ৪টি।
সাকিব দল না পেলেও প্রথম দফায় অবিক্রিতদের মধ্যে দ্বিতীয় দফায় দল পাওয়া উল্লেখযোগ্য নাম ডেভিড মিলার, ঋদ্ধিমান সাহা, ম্যাথু ওয়েড, অ্যালেক্স হেলস ও ক্রিস জর্ডান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন