জয়পুরহাটে পরকীয়ার জেরে স্বামীকে হত্যার ঘটনায় স্ত্রীসহ তিনজনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন জয়পুরহাট জেলা ও দায়রা জজ আদালত।
আজ ২৪ ফেব্রুয়ারি দুপুরে জয়পুরহাট জেলা ও দায়রা জজ নুর ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন। এ সময় শুধু সেলিম মিঞা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বাকি নিহতের স্ত্রী আসামি আকলিমা ঘটনার পর গ্রেফতার হলেও পরে জামিন নিয়ে পলাতক রয়েছেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট উপজেলার দেওগ্রাম ডুগডুগি গ্রামের নিহত আব্দুর রহিমের (৩৭) স্ত্রী আকলিমা খাতুন (২৭), শালগ্রামের মৃত শহিদুল ইসলামের ছেলে সেলিম মিঞা (৩৪) ও গোপালপুর গ্রামের মৃত গোলাপ রহমানের ছেলে আইনুল (৩৭)।
মামলার বিবরণে জানা যায়, আকলিমা খাতুনের স্বামী রহিম বাদশাকে (৩৭) গলা কেটের হত্যার অভিযোগে তাদের এ দণ্ড দেয়া হলো।নিহত রহিম বাদশা দিনাজপুর জেলার দেওগ্রাম ডুগডুগি গ্রামের শাহাদত হোসেন ওরফে সাদার ছেলে। রহিম বাদশা একজন ভাড়ায় চালিত মাইক্রোবাসের চালক ছিলেন।
আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী নৃপেন্দ্রনাথ মন্ডল পিপি জানান, স্বামীর সহকারী হিসেবে কাজ করত সেলিম মিঞা। এই সুবাদে তাদের বাড়িতে যাতায়াত ছিল। পরে তাদের মধ্যে পরকীয়ার সম্পর্ক তৈরি হয়। দীর্ঘ দিন ধরে চলা এ সম্পর্কের জেরে তারা অবৈধ সম্পর্কেও জড়িয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে তারা আকলিমা খাতুনের স্বামী রহিম বাদশাকে তাদের পথের কাটা মনে করেন। তারা রহিম বাদশাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। ২০১৬ সালের ১০ জুলাই রাতে আকলিমারর পরকীয়া প্রেমিক সেলিম মিঞা তার বন্ধু আইনুলকের নিয়ে রহিম বাদশাকে মাইক্রোবাসের মধ্যে গলাকেটে হত্যা করে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার বারকান্দি নামের স্থানে রাস্তার ধারে মাইক্রোবাসে চালকের আসনে বসা অবস্থায় মরদেহ রেখে চলে যান। এরপর পরদিন ১১ জুলাই নিহত রহিম বাদশার পিতা শাহাদত হোসেন ওরফে সাদা বাদী হয়ে পাঁচবিবি থানায় অজ্ঞাতনামা হত্যা মামলা করেন।
এরপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তৎকালীন পাঁচবিবি থানার ওসি তদন্ত কিরণ কুমার, ১৩ জুলাই রহিম বাদশার স্ত্রী আকলিমা খাতুনের পরকীয়ার প্রেমিক সেলিম মিঞা, ১৪ জুলাই রহিম বাদশার স্ত্রী আকলিমা খাতুন ও ১৬ জুলাই আইনুলকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠান। গ্রেপ্তার পর তিন আসামিই আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছিলেন। এবং ২০১৬ সালের ২৭ ডিসেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তৎকালীন পাঁচবিবি থানার ওসি তদন্ত কিরণ কুমার রায় তিন জনের নামে আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল করেন।
আইনজীবী নৃপেন্দ্রনাথ মন্ডল পিপি জানান, কারাগারে থাকার পর আসামি আকলিমা জামিনে ছিলেন। তাঁর অনুপস্থিতিতে দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালতের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ নুর ইসলাম এ রায় দেন। রায় ঘোষণার পর দণ্ডপ্রাপ্ত সেলিম মিঞাকে ও আইনুলকে জয়পুরহাট কারাগারে পাঠানো হয়। তবে আসামিরা এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করতে পারবেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন