পাবনা শহরের পেটের ভেতর দিয়ে বয়ে চলা এক সময়ের স্রোতস্বিনী ইছামতী নদীতে কয়েকযুগ পর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়েছে। গতকাল সোমবার নদীর পাশে দুইটি ভেকু মেশিন দিয়ে বহুতল ভবনসহ ৪০টির বেশি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে করা হয়। এর আগে ঢাক ঢোল পিটিয়ে গতবছর ৩০ মার্চ নদী উদ্ধারে উচ্ছেদ অভিযান ও পুনঃখননের উদ্বোধন করা হয়। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই তা বন্ধ হয়ে যায়। কিন্ত শহরের ভেতর অভিযান হয়নি। পাবনা শহরীবাসীর দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি ছিল শহরের পেটের ভেতর দিয়ে বয়ে চলা লাইফ সার্পোটে থাকা এ নদীর কে প্রবাহমান করার। দীর্ঘ আন্দোলনের পর এই অবৈধ উচ্ছেদ অভিযান ও নদী খননকে সাধুবাদ জানিয়ে শহরবাসী।
পাবনা শহররের বাসিন্দা মো শাহজাহান জানান, গতকাল থেকে ৪৫ বছর আগে এ নদীতে আমরা সাঁতার কেটে গোসল করেছি, পানি ছিল স্বচ্ছ। নদীতে নৌকা চলতো। অনেকে শহরে মালামাল আনা নেওয়ার কাজে এই নদীর খেয়াঘাট ব্যবহার করতো। কিন্ত দীর্ঘদিন যাবত নদীর বুকে অবৈধ স্থাপনা গড়ে ওঠে নদী হারার যৌবন। শহরের বেশিরভাগ ময়লা আবর্জনা নদীতে ফেলা হয় এভাবে নদী ভরে যায়। নদীর বুক থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে আমরা আনন্দিত।
পাবনা শহরে নতুন প্রজন্মে কাছে ইছামতী নদী মানে একটা ময়লা ভর্তি নালা এ বিষয়ে, শিশু আফিয়া তাহসিন বলেন, এটা যদি নদী হয় তাহলে নৌকা চলবে অনেক পানি থাকবে, আমরা সাঁতার কেটে গোসল করবো। কিন্তু এখানে তো পানি নেই, নৌকাও নেই!
শিশু তাহসিন এই বক্তব্য সম্পর্কে তারা বাবা মো. তারিক হাসান সজিব জানান, ছোটবেলা থেকেই নতুন প্রজন্ম এক সময়ের স্রোতস্বিনী এই ইছামতী নদীটিকে ময়লা আর্বজনায় ভরপুর দেখছে। তারা অবহেলিত হয়েছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা এই ইছামতী নদীর সৌন্দর্যকে তারা দেখতে পায়নি। তবে এই উচ্ছেদ অভিযান ও খননে নদীর আগের চেহারা ফিরে আসবে এবং শিশুরা পাবনা শহরে এই নদীকে ঘিড়ে সুন্দর পরিবেশ পাবে বলে তিনি আশা করেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, পৌর এলাকার ৭.৬৭ কিমি নদীর পাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও নদী খননের কাজ করা হবে। সারা দেশের মতো ছোট নদী, খাল ও জলাশয় পুনঃখনন প্রকল্পের আওতায় পাবনায় ইছামতি নদী পুনঃখনন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এ অভিযান চলবে বলে জানিয়েছেন, পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তা ইঞ্জিনিয়ার মো. মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, বিভিন্ন জটিলতায় নদী উদ্ধার অভিযান বন্ধ ছিল কিন্ত এখন আর বাঁধা নেই।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন