ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের শিক্ষার্থী নির্যাতনের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও তদন্তে গড়িমসি করছেন কমিটির সদস্যরা।
গত ১০ মার্চ এই হলে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আবু তালিবকে নির্যাতন করে একই হলের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ৪ শিক্ষার্থী। অভিযুক্তরা হলেন সমাজকল্যাণ বিভাগের শেখ শান্ত আলম, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ইমদাদুল হক বাঁধন, তথ্য বিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগের শাহাবুদ্দিন ইসলাম বিজয় ও আইন বিভাগের নাহিদুল ইসলাম ফাগুন। তারা সবাই বঙ্গবন্ধু হলের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী এবং সবাই হল ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান শান্ত’র অনুসারি হিসেবে পরিচিত। মেহেদী হাসান শান্ত বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাসের রাজনীতি করে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে বাংলা বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর মো. আব্দুস সোবহান তালুকদারকে প্রধান করে ৪ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন হল প্রশাসন। বাকি সদস্যরা হলেন হলের আবাসিক শিক্ষক ড. সাইফুল হক, ড. আব্দুল খায়ের ও তানজিল শাহ। কমিটি গঠনের পর কমিটি প্রধান প্রফেসর মো.আব্দুস সোবহান তালুকদারের তাৎক্ষণিক মন্তব্য ছিল ‘২ থেকে ৩ দিনের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে পারব’। কিন্তু প্রায় দশ কার্যদিবস অতিবাহিত হলেও এখনো তদন্তের কোন ফলাফল দিতে পারেনি কমিটি।
বিষয়টি জানতে চাইলে তদন্ত কমিটির প্রধান মো.আব্দুস সোবহান তালুকদার বলেন, আমরা ভেবেছিলাম ৩ দিনের মধ্যে বিষয়টি সুরাহা করতে পারব। কিন্তু আমাদের সামনে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন পালন ও দুই দুইটা ছুটির দিন আসায় একটু বিলম্ব হচ্ছে। আমরা আগামীকাল (আজ) রাত ১০টায় এটা নিয়ে বসব। তারপর অতি সত্তর তদন্ত রিপোর্ট জমা দিব।
নির্যাতনের ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আবু তালিব জানান, তদন্ত কমিটির এক সদস্য তার সাথে দু›বার বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছে এবং তাকে নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়ে সমঝোতার প্রস্তাব দিয়েছে। তালিব বলেন, তদন্তের বিষয়ে একজন ডেকে বলছিল যে, আমি চাই তুমি অনেক বড় হও। একদিন আসো, বসো। ওদেরও (অভিযুক্ত) ডাকব একসাথে। সবাই মিলে বসে একটা মিমাংসা করে দিব। ভুক্তভোগী এই শিক্ষার্থী বলেন, ওনি আমাকে যত ধরনের নরম ভাষা আছে সবকিছু দিয়ে বুঝিয়েছে যে ওনি আমার পাশে আছে। এবং আমি যেন বিষয়টি নিয়ে খুব বেশি কিছু না করি। হলের বিষয়টা হলেই যেন সমাধান হয়ে যায়। তবে তদন্ত কমিটির কোন সদস্য তাঁর সাথে এসব কথা বলেছে তা নিরাপত্তার স্বার্থে বলতে রাজি হননি তালিব।
তদন্তে বিলম্বের বিষয়ে জানতে হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. মো. আকরাম হোসেনকে একাধিকবার মুঠোফোনে কল ও মেসেজ করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সাথে কথা বলার কথা জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মো. আখতারুজ্জামান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন