সৈয়দ আমরুজ্জামান সবুজ, শাহরাস্তি (চাঁদপুর) থেকে : শাহরাস্তি পৌরসভা নির্বাচনে নৌকা ও ধানের শীষের হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা পৌর এলাকার ১২টি ওয়ার্ডে জনমত জরীপে লক্ষ্য করা গেছে। আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হাজী আঃ লতিফের সাথে মনোয়ন চাওয়া বাকি ৫ প্রার্থী নৌকা প্রতীকের পক্ষে নির্বাচনী মাঠে গণসংযোগে নেমে পড়ায় কিছুটা এগিয়ে নৌকা। আজ ১৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে চাঁদপুর জেলার অন্যতম শাহরাস্তি পৌরসভার নির্বাচন। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাত ১২টায় প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা শেষ হয়েছে। ইতোমধ্যে শাহরাস্তি পৌরসভার ১২টি ওয়ার্ডের ১২ ভোট কেন্দ্রের ভোট গ্রহণের দায়িত্ব পালনকারী প্রিজাইডিং, সহকারী প্রিজাইডিং ও পুলিং এজেন্টদের প্রশিক্ষণ শেষ করা হয়েছে। ঐতিহ্যবাহী শাহরাস্তি পৌরসভা নির্বাচনে দায়িত্বে থাকা জেলা রিটার্নিং অফিসার ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারাও সর্বশেষ প্রস্তুতি নিয়েছেন। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে নির্বাচনকে ঘিরে শাহরাস্তি পৌর এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নিয়েছেন। তফসিল ঘোষণা থেকে শুরু করে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। এমনকি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রার্থী ও সমর্থকদের মধ্যে কোন উত্ত্যক্ত ভাব লক্ষ্য করা যায়নি। তবে মেয়র, মহিলা কাউন্সিলর ও সাধারণ কাউন্সিলরদের প্রচার-প্রচারণাও কোন অংশে কম হয়নি। প্রার্থীরা তাদের নিজ নিজ সমর্থকদের নিয়ে অবিরাম প্রচার-প্রচারণা ও নির্বাচনী আচরণ বিধি মেনে গণসংযোগ চালিয়েছে। শাহরাস্তিতে জাতীয় সংসদ, উপজেলার পরিষদ, এমনকি পৌর নির্বাচনেও ইতোপূর্বে শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ পৌরসভা নির্বাচনও এমনটি প্রত্যাশা করেছেন এখানকার সাধারণ ভোটাররা। আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী হাজী আবদুল লতিফ (নৌকা) ও বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী মোস্তফা কামাল (ধানের শীষ)। এ দু’জন প্রার্থী আশাবাদী অতীতের ন্যায়, আজ পৌরসভা নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হবে। গত ১৩ তারিখ সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকা ঘুরে জানা গেছে, কেউ কাউকে নাহি ছাড়ে সমানে সমান। অর্থাৎ উভয় মেয়র প্রার্থীর পক্ষে মানুষের সুদৃষ্টি রয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, উভয় মেয়র প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। শাহরাস্তি পৌর নির্বাচনে ২৬ হাজার ৩৮ জন ভোটার ১২টি ভোটকেন্দ্রে ভোট প্রদান করবেন আজ। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার হচ্ছে ১২ হাজার ৯৬৭ জন এবং মহিলা হচ্ছে ১৩ হাজার ৭১ জন। ১নং ওয়ার্ড কাজিরকামতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে ২ হাজার ১৬৫ জন, ২নং ওয়ার্ড বাদিয়া এম হক উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে ১ হাজার ৩৭১ জন, ৩ নং ওয়ার্ড সূয়াপাড়া জি কে উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে ২ হাজার ২১৯ জন, ৪নং ওয়ার্ড করফুলেন্নেছা মহিলা ডিগ্রী কলেজ ভোটকেন্দ্রে ২ হাজার ৮৯৮ জন, ৫নং ওয়ার্ড উপলতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে ২ হাজার ১৩৯ জন, ৬নং ওয়ার্ড ঐতিহ্যবাহী শাহরাস্তি বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে ২ হাজার ১৪৭জন, ৭নং ওয়ার্ড নিজমেহার মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে ২ হাজর ৪৮১ জন, ৮নং ওয়ার্ড নিজমেহার নূরানী তালিমুর কোরআন আরাবিয়া মাদ্রাসা ভোটকেন্দ্রে ২ হাজার ৩৬৫ জন, ৯নং ওয়ার্ড বাত্তলা দক্ষিণ পাড়া ফোরকানিয়া মাদ্রাসা ভোটকেন্দ্রে ২ হাজার ৩২৭ জন, ১০নং ওয়ার্ড সেনগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে ১ হাজার ৭৭৬ জন, ১১নং ভাটুনিখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে ১ হাজার ৮৭২ জন এবং ১২নং ওয়ার্ড নোয়াগাঁও উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে ২ হাজার ২৮৭ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। শাহরাস্তি পৌর নির্বাচনে দায়িত্বে থাকা জেলা রিটার্নিং অফিসার ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আতাউর রহমানের সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, সুষ্ঠু, সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন সম্পন্ন করার লক্ষ্যে আমাদের যা যা প্রস্তুতি নেয়ার প্রয়োজন তা আমরা গ্রহণ করেছি। ভোটকেন্দ্র ও তার আশপাশ এলাকায় কোন বিশৃঙ্খলা যাতে না ঘটে সেজন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী দ্ধারা নিরাপত্তাবলয় সৃষ্টি করা হবে। শুধু তাই নয় ভোটের আগের দিন থেকে শুরু করে ভোটের পরদিন পর্যন্ত পৌর এলাকায় বিজিবি, র্যাবের ৩টি টিম, পর্যাপ্ত পুলিশ ও আনসার সদস্যরা নিয়োজিত থাকবেন। কেন্দ্রে পর্যাপ্ত পরিমাণে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত থাকবে। কোথাও কোন গোলযোগ দেখা দিলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্র্রেটের নেতৃত্বে সেখানে ব্যবস্থা নেয়া হবে। শাহরাস্তি পৌরাবাসী সব সময় শান্তিপ্রিয়, আমার বিশ্বাস সকলের সহযোগিতায় শাহরাস্তি পৌরসভায় একটি সুন্দর নির্বাচন করা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন