শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

হাওরে ঢলের সার্বিক অবনতি

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ফের ভারী বর্ষণ : আসছে ঢল-বান বাঁধ ভেঙে তলিয়ে যাচ্ছে ফসল

শফিউল আলম | প্রকাশের সময় : ১৯ এপ্রিল, ২০২২, ১২:০০ এএম

দেশের হাওর অঞ্চলে আকস্মিক ঢল-বানের পরিস্থিতি সার্বিক অবনতির দিকে রয়েছে। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বিশেষত আসাম, মেঘালয় ও অরুণাচল প্রদেশে ফের ভারী বর্ষণ হচ্ছে। এর ফলে উজান থেকে আসছে পাহাড়ি ঢল। দেশের উত্তর-পূর্বে হাওর অঞ্চলেও হচ্ছে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি। এ অবস্থায় হাওরে একের পর এক বাঁধ ভেঙে গিয়ে কাঁচাপাকা ইরি-বোরো ধান ও অন্যান্য ফল-ফসল, শাক-সবজি ঢল-বানের পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। অকাল ঢল-বানের তোড়ে ফল-ফসল রক্ষার উপায় না দেখে কৃষকের মাথায় হাত। আধাপাকা ফসল কেটে নিয়ে যাচ্ছেন তারা।
পাউবোর বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া গতকাল জানান, বাংলাদেশ ও ভারতের আবহাওয়া বিভাগের তথ্য ও পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং এর সংলগ্ন ভারতের আসাম, মেঘালয় ও অরুণাচল প্রদেশে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

আগামী ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টায় সিলেট, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোণা জেলার প্রধান নদ-নদীসমূহের পানির সমতল ভারী বৃষ্টিপাতের প্রেক্ষিতে সময় বিশেষে দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে। দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সুনামগঞ্জ, নেত্রকোণা ও হবিগঞ্জ জেলার প্রধান নদ-নদীর পানির সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। আপাতত সিলেট জেলার প্রধান নদ-নদীর পানির সমতল হ্রাস পাচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় সিলেট জেলার প্রধান নদ-নদীসমূহের পানির সমতল হ্রাস অব্যাহত থাকতে পারে।

তবে আগামী ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জ জেলার প্রধান নদ-নদীসমূহের পানির সমতল ধীর গতিতে বৃদ্ধি পেতে পারে এবং কতিপয় পয়েন্টে বিপদসীমার কাছাকাছি অবস্থান করতে পারে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় নেত্রকোণা জেলার প্রধান নদ-নদীসমূহের পানির সমতল ধীর গতিতে বৃদ্ধি পেতে পারে এবং বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা অবনতি হতে পারে।
গতকাল হাওর অঞ্চলে নদ-নদী প্রবাহের অবস্থা সম্পর্কে জানা গেছে, পাউবোর পর্যবেক্ষণাধীন ৩৯টি স্টেশনের মধ্যে ১৪টিতে পানি বৃদ্ধি ও ২৩টিতে হ্রাস পায়। দু’টি পয়েন্টে অপরিবর্তিত থাকে। এরমধ্যে পাউবো সূত্রে গতকাল বিকাল পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, সারিগোয়াইন নদীর পানি গোয়াইনঘাটে বিপদসীমার ৩১ সে.মি. এবং বাউলাই নদীর পানি খালিয়াজুরিতে বিপদসীমার ২৩ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সুরমা নদীর পানি সিলেটে বিপদসীমার মাত্র ৭ এবং সুনামগঞ্জে ৯ সে.মি. নিচে অবস্থান করছে।

গত রোববার হাওর অঞ্চলে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পায় ২১টি পয়েন্টে, হ্রাস পায় ১৭টতে। গত শনিবার ২৬টি পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি এবং ১২টিতে হ্রাস পায়। গত শুক্রবার ৩৩টি পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি ও ৬টিতে হ্রাস পায়।
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বের হাওর এলাকা এবং এর সংলগ্ন ভারতের আসাম, মেঘালয় ও অরুণাচলে ভারী এবং মাঝারি থেকে ভারী ধরনের বৃষ্টিপাত হয়েছে। এরমধ্যে সিলেটে ৫৮ মি.মি., লালাখালে ৪৪ মি.মি. এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে ৬৫ মি.মি., গ্যাংটকে ৬৩ মি.মি., ধুব্রিতে ৪৮ মি.মি., তেৎপুরে ৪২ মি.মি. বৃষ্টিপাত হয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন