গুড গভর্নেন্সের অভাবে এ্যাকচুয়াল বাজেট ও মূল বাজেটের মধ্যে ২৫ শতাংশ গ্যাপ তৈরি হয় বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মো. আখতারুজ্জামান। তিনি বলেন, কোন প্রকল্প যখন শুরু হয় তখন সেই প্রকল্পের সফল সমাপ্তি যথাসময়ে ঘটে না। ফলে বাজেটের তুলনায় খরচ বেড়ে যায়। গতকাল মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর মুজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সেন্টার অন বাজেট এন্ড পলিসির উদ্যোগে ‘বাজেট ২০২২-২৩: অতিমারী থেকে সমৃদ্ধির পথে অগ্রযাত্রা’ শীর্ষক প্রাক-বাজেট সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার ও সেন্টার অন বাজেট এন্ড পলিসির চেয়ারম্যান প্রফেসর মমতাজ উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে সংলাপে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি (শিক্ষা) প্রফেসর ড. এএসএম মাকসুদ কামাল বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন। সেন্টারের পরিচালক প্রফেসর ড. এম আবু ইউসুফ এবং ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের প্রফেসর ড. কাজী মারুফুল ইসলাম মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর এবং অর্থনীতি বিভাগের প্রফেসর ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান সানেমের নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান প্রবন্ধের উপর আলোচনায় অংশ নেন।
ভিসি প্রফেসর ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, করোনা মহামারি পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বাজেট বরাদ্দের ক্ষেত্রে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষার বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দেয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষা এই তিনটি গুরুত্বপূর্ণ খাত নিয়ে আজকের আলোচনা। গত ২০২১-২২ অর্থবছরে শিক্ষা খাতে জাতীয় আয়ের (জিডিপি) ২ দশমিক শূণ্য ৮ শতাংশ ব্যয় করা হয়, যা আন্তর্জাতিক মানদÐে ন্যূনতম ৪-৬ শতাংশ হওয়া উচিত। সামাজিক সুরক্ষা খাতে জিডিপির ন্যূনতম ৩ শতাংশ ব্যয় হওয়া উচিত। স্বাস্থ্য খাতে আমরা ১ থেকে ১ দশমিক ৫ শতাংশ ব্যয় করি, সেটি ন্যূনতম ৩ শতাংশ হওয়া উচিত। এই তিনটি খাতে জিডিপির অন্তত; ১০ শতাংশ ব্যয় করা উচিত। সেখানে আমরা তার অর্ধেকে আছি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে শিক্ষা খাতে বাজেটের সর্বোচ্চ বরাদ্দ ছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আমলে, ১৯৭৩ সালে। আমরা এখনো সেখানে পৌঁছাতে পারিনি। মূল প্রবন্ধে জাতীয় বাজেটে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষিখাতকে অগ্রাধিকার দেয়ার আহŸান জানানো হয়। প্রবন্ধকারদ্বয় বলেন, বিদ্যমান ও উদীয়মান চ্যালেঞ্জগুলোকে মোকাবেলা করে নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের দিকে নজর দিতে হবে।
টেকসই অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি এবং স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, ন্যায়পরায়ণতা, দূরদর্শিতা এবং সামাজিক শুদ্ধাচার নিশ্চিত করতে হবে।
তারা করোনার প্রভাবে শিক্ষার ক্ষতি নিরূপণ এবং কার্যকর পরিকল্পনা প্রণয়নে যথাযথ অর্থ বরাদ্দের পাশাপাশি বিশেষজ্ঞদের নিয়ে স্বাধীন শিক্ষা ঘাটতি মোকাবেলা কমিশন গঠনের প্রস্তাব দেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন