বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

পদ্মা সেতু নিয়ে অপবাদ দিয়ে বিশ্বব্যাংক বঙ্গবন্ধু পরিবারকে হেনস্তা করেছে

গাজীপুর জেলা আওয়ামীলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের

গাজীপুর জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৯ মে, ২০২২, ৩:৫৬ পিএম

বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি বলেছেন, বাঙালি জাতির স্বপ্ন দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল তথা সারাজাতির স্বপ্ন পদ্মা সেতু নিয়ে বিশ্বব্যাংক আমাদেরকে অপবাদ দিয়ে বঙ্গবন্ধু পরিবারকে হেনস্তা করেছে। প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, সজিব ওয়াজেদ জয়, পুতুল, ববিসহ সবাইকে এই পদ্মা সেতুর জন্য হেনস্তা হতে হয়েছিল।

শেখ হাসিনার সাহস ও সততার সোনালী ফসল এই পদ্মা সেতু। বাংলাদেশের সামর্থের স্মারক এই পদ্মা সেতু। আগামি জুন মাসে পদ্মা সেতুতে গাড়ি চলাচল করবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিগগিরই সময় দেবেন। আমরা সময়মতো পদ্মা সেতু উদ্বোধনের তারিখ সেতু বিভাগ থেকে প্রেস কনফারেন্স করে সমগ্র জাতিকে জানিয়ে দেব।
তিনি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলেন, শতভাগ সততার সাথে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। বিশ্ব ব্যাংক অবশেষে নিজেরাই স্বীকার করেছে পদ্মা সেতু প্রকল্প থেকে সরে গিয়ে তারা ভুল করেছে।
মন্ত্রী বৃহস্পতিবার দুপুরে শহরের রাজবাড়ি মাঠে গাজীপুর জেলা আওয়ামলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে ঢাকা থেকে ভার্চুয়ালী বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, পদ্মা সেতুর এত ব্যয় নিয়ে ফখরুল সাহেব এত কথা বলেন। খর¯্রােতা পদ্মা নদীতে ফেরি চলাচলও বন্ধ হয়ে যায়। অ্যামাজানের মতো পদ্ম নদীর খর¯্রােত আর কোন নদীতে নেই। এখন সাত মিনিটে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার পদ্মা সেতু পার হওয়া যাবে। আর ফেরিতে গেলে সময় লাগে দুই থেকে আড়াই ঘন্টা।
আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কৃষি মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক এমপি সকাল ১১টায় সম্মেলন উদ্বোধন করেন। গাজীপুর জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আ.ক.ম মোজাম্মেল হক এমপি’র সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন সবুজ এমপি’র সঞ্চালনায় সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ মির্জা আজম এমপি, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মোঃ জাহিদ আহসান রাসেল এমপি, শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক মোঃ সিদ্দিকুর রহমান, সদস্য মোঃ আনোয়ার হোসেন, মোঃ সাহাবুদ্দিন ফরাজী, মোঃ ইকবাল হোসেন অপু এমপি, মোহাম্মদ সাইদ খোকন, সিমিন হোসেন রিমি এমপি, মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আজমতউল্লাহ খান, অধ্যাপিকা রুমানা আলী টুসি এমপি, জেলা পরিষদের প্রশাসক আখতারউজ্জামান, মহানগর আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আতাউল্লাহ মন্ডল প্রমুখ।
এদিকে সম্মেলনকে ঘিরে সকাল থেকে গাজীপুরের রাজবাড়ি মাঠে হাজার হাজার নেতাকর্মীদের ঢল নামে। সম্মেলন শুরু হওয়ার আগেই সম্মেলনস্থল নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। চান্দনা-চৌরাস্তা থেকে জয়দেবপুর শহর পর্যন্ত যানবাহন চলাচল বিঘিœত হয়। শিববাড়ি মোড় থেকে অনুষ্ঠানস্থল ও জোরপুকুরপাড় পর্যন্ত অটোরিকশাসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। প্রচন্ড গরম উপেক্ষা করে হাজার হাজার নেতাকর্মী বিভিন্ন উপজেলা, ইউনিয়ন এবং মহানগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে মিছিল সহকারে সম্মেলনস্থলে যোগ দেয়। সম্মেলনকে কেন্দ্র করে পুরো শহর জুড়ে পুলিশ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করে। সম্মেলনস্থলের চারপাশ ও শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অর্ধশতাধিক সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়। এছাড়া সম্মেলনস্থলের নিকটে সিসি ক্যামেরার পর্যবেক্ষণ সেন্টার বসানো হয়। গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার বরকত উল্লাহ, উপ-কমিশনার (ক্রাইম) জাকির হাসান পর্যবেক্ষণ সেন্টারে উপস্থিত ছিলেন।
ওবায়দুল কাদের এমপি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের পর ছয় বছর নির্বাসনে ছিলেন দেশরতœ শেখ হাসিনা এবং বঙ্গবন্ধুর আরেক কন্যা শেখ রেহানা। ছয় বছর পর আওয়ামীলীগ যখন কলহ কোন্দলে জর্জরিত তখন ঐকের প্রতিক হয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে সর্বসম্মতভাবে আওয়ামীলীগের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন। ছয় বছর পর অনেক বাধা বিপত্তি, প্রতিবন্ধকতা ও প্রতিরোধের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনা বাংলার মাটিতে পদার্পণ করেছিলেন।
শেখ হাসিনা এসেছিলেন বলে তাঁর প্রত্যাবর্তনে আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় প্রত্যাবর্তন দেখলাম। বাংলাদেশে গণতন্ত্রের সংগ্রামী সূচনা দেখলাম এবং এই গণতন্ত্রের সংগ্রামে সারা বাংলাদেশ ঘুরে ঘুরে ঝঞ্ঝা বিক্ষুব্ধ বাংলায় ঐক্যের, সংগ্রামের, স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে অবরুদ্ধ গণতন্ত্রকে শৃংখলমুক্ত করার ডাক দিয়েছিলেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। তিনি এসেছিলেন বলেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা জয়বাংলার ধ্বণি আবার ফিরে এসেছে, আবারো ফিরে এসেছে নিষিদ্ধ সেই ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ। আবারো ফিরে এসেছে মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ। শেখ হাসিনা প্রত্যাবর্তন করেছিলেন বলেই অবরুদ্ধ গণতন্ত্র শৃংখলমুক্ত হয়েছিল। শেখ হাসিনা ফিরে এসেছিলেন বলেই ভারতের সাথে গঙ্গা চুক্তি করেছিলাম, সীমান্ত বিরোধ নিষ্পত্তি হয়েছিল। ছিটমহল সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান হয়। আমরা সমুদ্র বিজয় করতে পেরেছিলাম, মহাকাশ বিজয় করেছিলাম। তিনি ফিরে এসেছিলেন বলেই বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, বঙ্গবন্ধু হত্যা বিচার করে বাংলাদেশকে কালিমা ও কলংকমুক্ত করা হয়েছে। তিনি ফিরে এসেছিলেন বলেই সারাদেশ বিদ্যুতের আলোতে আলোকিত হয়েছে, আমরা অন্ধকার থেকে আলোর পথে যাত্রা করেছি। যে বাংলাদেশে এক সময় ঘন্টার পর ঘন্টা লোডশেডিং ছিল সেই বাংলাদেশে আজ সর্বত্র আলো জ্বলছে।
তিনি আগামি নির্বাচন ও জাতীয় সম্মেলনকে সামনে রেখে গাজীপুরের নেতৃবৃন্দকে অন্তকলহ বিরোধ মিটিয়ে ঐক্যবব্ধ হওয়ারর আহবান জানিয়ে বলেন এভাবেই আমরা বিজয়ের দ্বারপ্রান্ত পৌঁছাতে পারবো।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন