ভারতে গ্রেপ্তার হয়ে রিমান্ডে থাকা প্রশান্ত কুমার হালদার (পি কে হালদার)সহ ১২ জনের বিরুদ্ধে নতুন আরেকটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলায় তাঁদের বিরুদ্ধে এফএএস (ফাস) ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের ৪৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে। কাগুজে প্রতিষ্ঠান দিয়া শিপিং লিমিটেডের নামে এ টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছিল। গতকাল বৃহস্পতিবার দুদকের সহকারী পরিচালক রাকিবুল হায়াত বাদী হয়ে ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার আসামিরা হলেন এনআরবি গেøাবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক এমডি ও পলাতক আসামি প্রশান্ত কুমার হালদার, দিয়া শিপিং লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক শিব প্রসাদ ব্যানার্জি, পরিচালক পাপিয়া ব্যানার্জি, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের চেয়ারম্যান এম এ হাফিজ, সাবেক চেয়ারম্যান মো. সিদ্দিকুর রহমান ও ভাইস চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলম, পরিচালক অরুণ কুমার কুÐু, অঞ্জন কুমার রায়, মো. মোস্তাইন বিল্লাহ, উজ্জল কুমার নন্দী, সত্য গোপাল পোদ্দার ও এফএএস ফাইন্যান্সের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী
পি কে হালদার ক্ষমতার অপব্যবহার ও জালজালিয়াতি করে নিজের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান এফএএস থেকে ভুয়া ও কাগুজে প্রতিষ্ঠান দিয়া শিপিং লিমিটেডের নামে ৪৪ কোটি টাকা ঋণ অনুমোদন দিয়ে তা উত্তোলন করে আত্মসাতে সহযোগিতা করেন। এফএএস ফাইন্যান্সের ১৬৩তম বোর্ড সভায় ঋণ অনুমোদন হয়। ঋণ অনুমোদনের পর ২০১৪ সালের ২৯ ডিসেম্বর থেকে ২০১৫ সালের ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে এই ঋণ ছাড় হয়। পরে এ টাকা আত্মসাৎ করে নিজের নামে থাকা ব্যাংক হিসাবে বা তার স্বার্থসংসিøষ্ট প্রতিষ্ঠান বা ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর ও রূপান্তরের মাধ্যমে পাচার করেন, যা বাংলাদেশ ব্যাংকের বিএফআইইউ-এর তদন্তে ধরা পড়ে।
এ বিষয়ে দুদকের ভারপ্রাপ্ত সচিব ও মহাপরিচালক সাঈদ মাহবুব খান সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। তিনি জানান, আসামিদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার এবং ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে প্রায় ৪৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। দÐবিধির ৪০৯/ ৪২০/ ৪৬৮/ ৪৭১/ ১০৯ ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারা এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ৪ (২), (৩) ধারায় মামলা করা হয়েছে।
সংস্থাটির ভারপ্রাপ্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান জানান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠক হয়েছে। সেখানে পি কে হালদারকে দেশে ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের একটি টিমকে ভারতে পাঠানো হতে পারে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, পিকে হালদারকে ফেরাতে আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে আমরা চিঠি পাঠিয়ে অনুরোধ করি। সেই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জরুরি বৈঠক ডাকে। যেখানে আইন মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটসহ সবাই উপস্থিত ছিলেন। সেখানে আমরা এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বিস্তারিত আলাপ আলোচনা করি।
সাঈদ মাহবুব খান বলেন, পিকে হালদারকে ফেরানোর বহিঃসমর্পন যে আইন বিদ্যমান রয়েছে, তার সমস্ত আইন বিধির দ্বারা কীভাবে তাকে দ্রæত দেশে ফিরিয়ে আনতে পারি সেই বিষয়ে আলোচনা হয়। তাকে ফেরত আনতে যে সমস্ত ডকুমেন্ট প্রয়োজন সেগুলোর একত্রিত করার সিদ্ধান্ত হয়। আমরা খুব দ্রæত সেসব প্রস্তুতি সম্পন্ন করব। প্রশান্ত কুমার হালদারকে ভারত থেকে ফেরাতে প্রয়োজনে ভারতের পশ্চিমবেঙ্গে আন্তঃমন্ত্রণালয়ে কমিটি করে টিম পাঠানো হতে পারে। ক‚টনীতিক চ্যানেলসহ অন্যান্য যে সমস্ত চ্যানেল ব্যবহার করে তাকে দ্রুত আনা যায় আমরা সেই চেষ্টা করব।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন