বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সোনালি আসর

রূহুল আমীন খানের ছড়া

| প্রকাশের সময় : ২০ নভেম্বর, ২০১৬, ৯:৪৬ পিএম


সেই আমাদের মুন্সি দাদু

যেমনি গুরু তেমনি সাধু
সেই আমাদের মুন্সি দাদু।
ছোট্ট কালেই দেখছি তারে
শিক্ষা দিছেন বাপ-চাচারে।
আমরা এলাম অনেক বাদে
মুন্সি দাদু সেই সুবাদে।

নাম ছিল তাঁর আয়ুব আলী
বাড়ি ছিল নোয়াখালী
সেই কবে দেশ এলেন ছাড়ি
যাননি ফিরে আর সে বাড়ি।
লোকের সাথে এই এলাকার
হয়ে গেলেন এক একাকার।

ছাত্রদেরে সব পড়াতেন
সুরা-কেরাত মশ্ক করাতেন।
সবক দিতেন সবক নিতেন
বারে বারে বুঝিয়ে দিতেন
যেমনি ছিল আদর সোহাগ
তেমনি ছিল শাসন ও রাগ
বেয়াদুবি করলে তাহার
রক্ষা কোনো ছিল না আর
কান মলিতেন শাস্তি দিতেন
পিঠের ওপর বেত মারিতেন
দোষ করে কেউ সাজলে সাধু
বুঝে নিতে মুন্সি দাদু।

গাঁও গেরামের মানুষ যত
মানত তাঁকে পীরের মতো
গাছের প্রথম ফলটা নিয়া
শান্তি পেত হস্তে দিয়া।

(২)
আসত মানুষ তাবিজ নিতে
আসত এটা সেটা দিতে
দোয়া পড়ে জিন ছাড়াতেন
ঝাটা মেরে ভূত তাড়াতেন
বাচ্চাদের ঝাড়-ফুঁ দিতেন
রোগ-বিমারের খবর নিতেন।

হঠাৎ কেহ পড়লে জ্বরে
দৌড়ে যেতেন তাহার ঘরে

কলসি ভরে নিজেই আনি
যতেœ দিতেন মাথায় পানি
টোটকা ছিল অনেক জানা
কোনটা খাবে কোনটা মানা
ভালো করে বুঝিয়ে দিতেন
পথ্য দিতেন তথ্য নিতেন।

গুরু ছিলেন মুষ্টিযোগের
ধন্বন্তরি সকল রোগের
তুলসী পাতা মেন্দি পাতা
নিমের পাতা বেঙের ছাতা
বন অর্জুনের ছাল ছেঁচিয়া
দিতেন ঈষদ গরম দিয়া।

নিজের হাতে কুড়–ল নিয়া
এনে ঝাড়ের বাঁশ কাটিয়া
ভাঙা সাঁকো দিতেন সেরে
সাথে নিয়ে ছাত্রদেরে।

কে বলে তাঁর নেইকো বাড়ি
সকল ঘরই আপন তারি
আপন ভোলা পরেতে হুঁশ
ছিলেন খাঁটি সোনার মানুষ
ফেরেশতাই ছিলেন যেন
মনে জাগে প্রশ্ন কেবল
এমন মানুষ হয় না কেন?

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন