ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতি সৈয়দ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই বলেছেন, যে দেশে ফজরের আজান শুনে মানুষের ঘুম ভাঙে। যে দেশে ৯২ শতাংশ মানুষ মুসলমান। কোরআনে মদকে হারাম করা হয়েছে সেখানে সার্কুলার জারি করে মদকে সহজলভ্য করে যুব সমাজকে ধ্বংসের পথে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। যা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। তিনি বলেন, একদিকে মদকে সহজলভ্য করা হচ্ছে অপরদিকে শিক্ষা সিলেবাস থেকে ইসলামি শিক্ষা সঙ্কুচিত করা হচ্ছে। স্বাধীনতার ৫১তম বছরেও দেশের মানুষ নিরাপত্তাহীন। আকাশচুম্বী দ্রব্যমূল্যের কারণে জনগন আজ দিশেহারা। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ এই সরকারের পদত্যাগ চাই।
গতকাল শনিবার বাদ জোহর বগুড়ার সূত্রাপুর কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজশাহী বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন। সমাবেশে তিনি আরো বলেন, একদল ঘাদানিক শ্বেতপত্রের নাটক সাজিয়ে দেশের উলামায়ে কেরাম ও মাদরাসাসমূহের হিংসার বিষবাস্প ছড়াচ্ছে। তাই দেশ ও ইসলামদ্রোহী এই ঘাদানিক চক্র ও তাদের নেপথ্যের ইন্ধনদাতাদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। অন্যথায় ভবিষ্যতে এরা আরো ঘৃণ্য কাজ করার দুঃসাহস দেখাতে উৎসাহ পাবে। সমাবেশে তিনি দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধগতি রোধ, সব ধরনের মদ নিষিদ্ধ, বাধ্যতামূলক ইসলামি শিক্ষা চালু, শিক্ষা সিলেবাস থেকে ডারউইনবাদ বাতিল, কারাবন্দি মজলুম আলেমদের মুক্তি, নির্বাচনকালীন জাতীয় সরকার গঠন, নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর থেকে নির্বাচিত সরকারের দায়িত্ব গ্রহণকালীন সময় পর্যন্ত ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ারসহ সেনা মোতায়েন, ইভিএম ব্যবহার বন্ধ, বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলসহ সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের বোধ বিশ্বাসের আলোকে দেশ পরিচালনার জন্য ১৫ দফা দাবি উত্থাপন করেন।
বিশাল এই সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন, সমাবেশ বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক ও ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর উত্তরবঙ্গের প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন আল্লামা আব্দুল হক আজাদ। সমাবেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী বলেন, দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব আজ বিপন্ন। সরকারের দায়িত্বশীলরাই দুর্নীতির স্বীকৃতি দিচ্ছে। এটা পরিষ্কার আওয়ামী লীগ বিএনপি দিয়ে দুর্নীতি দমন সম্ভব নয়। সমাবেশে মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, দুর্নীতিবাজ ও লুটেরা সিন্ডিকেটের হাতে দেশের মানুষ আজ জিম্মি। এই অবস্থা থেকে উত্তোরণের জন্য সবাইকে আজ ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সৃষ্টি করতে হবে গনজাগরণ। সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা আব্দুল হক আজাদ বলেন, দুর্নীতি ও প্রতিহিংসার দুষ্টচক্র থেকে দেশকে বাঁচাতে ইসলামি শাসনের বিকল্প নেই।
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন, দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, সহকারী মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক সৈয়দ বেলায়েত হোসেন, দফতর সম্পাদক মাওলানা লোকমান হোসেন জাফরী, সহ প্রশিক্ষণ সম্পাদক মুফতি দেলওয়ার হোসেন সাকি সংগঠনের যুব ও ছাত্র শাখার কেন্দ্রীয় ও বিভাগীয় পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ। সভামঞ্চে বগুড়া জেলা সভাপতি মাওলানা মামুনুর রশীদ জেলা নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। দিনভর বৃষ্টির মধ্যে ইসলামী আন্দোলনের এই বিভাগীয় শহরে বাস, মিনিবাস, কার, মিনি ট্রাকসহ শতাধিক যানবাহনে রাজশাহী বিভাগের জেলাসমূহ থেকে বহু মানুষ অংশ গ্রহণ করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন