আত্মপ্রত্যয়ী ও উদ্যোমী নারীদের স্বপ্নযাত্রায় সবসময়ই সারথি হয়ে পাশে ছিল ফেয়ার অ্যান্ড লাভলী ফাউন্ডেশন। এরই ধারাবাহিকতায় নারীদের ব্যবসা, কারিগরি ট্রেনিং ও উচ্চশিক্ষায় স্কলারশিপ দিয়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় ফেয়ার অ্যান্ড লাভলী ফাউন্ডেশন। ফেয়ার অ্যান্ড লাভলী ফাউন্ডেশন ২০১৫ সালে “তোমার স্বপ্ন করো সত্যি” নামক ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে ব্যবসা, কারিগরি ট্রেনিং ও উচ্চশিক্ষায় অংশগ্রহণ করতে আগ্রহী নারীদের কাছ থেকে আবেদনপত্র আহবান করে। এতে সারাদেশ থেকে ৭ হাজারেরও অধিক আবেদনপত্র জমা পড়ে। সেখান থেকে যাচাই-বাছাই শেষে ৩৫৭ জন নারীকে নির্বাচন করা হয়। যাদের মধ্যে ৩৫০ জনকে কারিগরি ট্রেনিং ও উচ্চশিক্ষায় স্কলারশিপ এবং ৭ জনকে ব্যবসা শুরুর মূলধনের সনদ দেয়া হয়। নির্বাচিত এই ৩৫৭ জন থেকে একজনের সাথে স্বপ্নপূরণের গল্প নিয়েই আজকের প্রতিবেদন।
দিতি আক্তার
কারিগরি ট্রেনিং সনদপ্রাপ্ত
ফেয়ার অ্যান্ড লাভলী ফাউন্ডেশনের সহায়তায় বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের একজন সাধারণ নারীর আত্মপ্রত্যয়ী, কর্মোদ্যোম হয়ে উঠার অসাধারণ গল্প শুনব আজ। এ গল্পের মূল চরিত্র দিতি আক্তার যিনি কিনা ফেয়ার অ্যান্ড লাভলী ফাউন্ডেশনের “তোমার স্বপ্ন করো সত্যি” ক্যাম্পেইনে কারিগরি ট্রেনিং সনদপ্রাপ্ত। বগুড়ার নদীভাঙ্গন কবলিত এলাকা সারিয়াকান্দির কুতুবপুর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রাম কাজলা। বিশ্ব যখন প্রযুক্তির চরম উৎকর্ষতার শীর্ষে তখন এ গ্রাম বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত হয় এই মাস দুয়েক আগে। এ গ্রামেরই কৃষক বাবার সন্তান দিতি আক্তার, ৩ ভাই বোনের মধ্যে যার অবস্থান দ্বিতীয়। বিজ্ঞান বিভাগের মেধাবী ছাত্রী দিতির কাছে কম্পিউটার ছিল যেন রূপকথার বিষয় যা কিনা শুধু পাঠ্যবইয়েই সীমাবদ্ধ। সে আরো আশ্চার্যান্বিত হয় যখন সে তার এক বড় ভাইয়ের মাধ্যমে জানতে পারে কম্পিউটার শুধু পাঠ্যপুস্তকেই সীমাবদ্ধ নয়, এটি বর্তমানে অর্থনীতির চাকা ঘুরানোরও একটি হাতিয়ার যা দ্বারা আয় করে স্বাবলম্বীও হওয়া যায়। তখন থেকেই তার মনের গভীরের সূক্ষ্ম কোণে জায়গা করে নেয় কম্পিউটারের মাধ্যমে আয় করার বিষয়টি। কিন্তু যে গ্রামে বিদ্যুতই বিলাসিতা সেখানে কম্পিউটার তো যেন দূর আলোকবর্ষের তারা। এমনি করে হঠাৎ একদিন স্থানীয় এনজিওর মাধ্যমে দিতি জানতে পারে ফেয়ার অ্যান্ড লাভলী ফাউন্ডেশনের ব্যাপারে। স্বপ্ন পূরণের সুযোগটি সে লুফে নেয় এবং ফরম পূরণ করে রাজশাহীতে ইন্টারভিউ দিয়ে নির্বাচিত হয়। তারপর রংপুর থেকে বেসিক কম্পিউটার এবং অনলাইন আউটসোর্সিং-এর উপর ২ মাসের কোর্স সফলতার সাথে সম্পন্ন করে। এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে দিতি আবেগাপ্লুত হয়ে বলে “ফেয়ার অ্যান্ড লাভলী ফাউন্ডেশনের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। যে আমি কখনো কম্পিউটার ছুয়েঁও দেখিনি সেই আমিই যে একসময় কম্পিউটার-এর উপর কোর্স করব, অনলাইন আউটসোর্সিং-এর কাজ শিখে উপার্জন করব এই পুরো ব্যাপারটিই আমার কাছে স্বপ্নের মতো এবং ব্যাখ্যাতীত। এর সম্পূর্ণ কৃতিত্ব ফেয়ার অ্যান্ড লাভলী ফাউন্ডেশনের। উনাদের আমার অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে জানাই ধন্যবাদ।”
দিতি আক্তার বর্তমানে বগুড়ার কাহালু ডিগ্রি কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষে প্রাণীবিজ্ঞানে অধ্যয়নরত। একই সাথে ফেয়ার অ্যান্ড লাভলী ফাউন্ডেশনের সহায়তায় তিনি তার অর্জিত কারিগরি ট্রেনিংকে কাজে লাগিয়ে অনলাইন আউটসোর্সিং-এর ডাটা এন্ট্রির কাজ করে স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন। কিন্তু তিনি এখানেই থেমে থাকতে চান না, তার স্বপ্নটা আরো বড় কিছু করার। নিজের একটা টিম দাঁড় করানোর ইচ্ছা যারা তার সাথে একযোগে কাজ করবেন। নিজের একটা প্রতিষ্ঠানও করার ইচ্ছা আছে তার যেখান থেকে তিনি আরো অনেককে প্রশিক্ষণ দিয়ে স্বাবলম্বী করে তুলতে চান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন