টানা তিন দিনের ভারী বর্ষন আর উজান এলাকার পানি নেমে আসায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার মেঘনা,ধলেশ্বরী আর লঙ্গন নদীতে হু হু করে করে বাড়ছে বন্যার পানি। মাত্র তিন দিনের ব্যবধানেই স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কায় দেখা দিয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার ১৩ টি ইউনিয়নের অনেকগুলো গ্রামে। ইতি মধ্যে নিম্নাঞ্চলের অনেকেই পানি বন্ধী হয়ে পরেছে। ইতোমধ্যে রাস্তাঘাট আর আমন ধানের ফসলী জমি তলিয়ে গেছে পানিতে। চরম আতংকে নির্ঘুম রাত কাটছে নিম্নাঞ্চলে বসবাসকারী মানুষের। ভারী বর্ষন ও পানি নিষ্কাশনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় নাসিরনগর সদর সহ বিভিন্ন হাট বাজার, স্কুল কলেজ, মাদরাসায় জলাবদ্ধতার কারণে দেখা দিয়েছে জনদূর্ভোগ। উপজেলার বিস্তীর্ণ জনপদ চাতলপাড় ইউনিয়নের চকবাজার ও বিলের পাড়ের প্রায় ৩০ থেকে ৪০ টি পরিবারের বাসিন্দারা নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার আতঙ্কে ভয়াবহ পরিস্থিতিতে দিনাতিপাত করছে।
ইতোমধ্যে বুড়িশ্বর ইউনিয়নের আশুরাইল,শ্রীঘর,ফান্দাউক ইউনিয়নের, আতুকোড়া,রসূলপুর,সিংহগ্রাম এবং ধরমন্ডল ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকার রোপা আর বুনা আমন ধান সব বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে।উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু সাঈদ তারেক জানায় বুড়িশ্বর,ফান্দাউক আর ধরমন্ডল ইউনিয়নের প্রায় ২ হাজার হেক্টর বুনা আর রোপা আমন ধানের জমি বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। অথচ দ্বিগুনেরও বেশী বলে মনে করছে স্থানীয় কৃষকরা।
অনেকের মতে, এবারের বন্যা ১৯৮৮ সালের বন্যাকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশংকা করছে। পর্যাপ্ত আশ্রয় কেন্দ্র না থাকায় বন্যা পরিস্থিতি বেগতিক হলে আশ্রয় পাওয়া নিয়ে শঙ্খায় আছে উপজেলাবাসী। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে আশ্রয় কেন্দ্রে পরিনত করলেও বানভাসি মানুষের সংকুলান হবেনা মনে মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
গতকাল বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় জরুরি সভা করে বন্যার্তদের জরুরী চিকিসা সহায়তা দিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ সংসদীয় ২৪৩ নাসিরনগর আসনের মাননীয় সংসদ সদস্যে বি এম ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম এমপির নির্দেশে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ অভিজিৎ রায়ের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। আজ থেকে ওই টিম বিভিন্ন গ্রাম পরিদর্শন করেছে। সার্বক্ষনিক বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করার জন্য উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে একটি মনিটরিং কমিটিও গঠন করা হয়েছে যাতে করে যেকোনো পরিস্থিতিতে বন্যা কবলিত মানুষের কাছে সুপেয় পানি সহ শুকনো খাবারের কোন সমস্যা দেখা না দেয়। তবে উপজেলাবাসীর দাবী, বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে যদি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় তাহলে জনমনে যে আতংক বিরাজ করছে তার কিছুটা লাগব হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন