শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

ঢাকায় এসেই কলাপাড়ার ৫ গুণ বেশি দাম

তাল দেহের জন্য অনেক উপকারী

এ এম মিজানুর রহমান বুলেট, কলাপাড়া (পটুয়াখালী) থেকে | প্রকাশের সময় : ২৪ জুন, ২০২২, ১২:০৭ এএম

তালের শাঁস কিংবা পানি তাল পছন্দ করেন না এমন মানুষ খুব কমই আছেন। তবে প্রচন্ড দাবদাহে তালের কদর কয়েকগুন বেড়ে যায়। মধু মাসের সুমিষ্ট রসালো ফলের পাশাপাশি দিনে দিনে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে পুষ্টিগুনে সমৃদ্ধ তালের জনপ্রিয়তা।

পটুয়াখালীর কলাপাড়াসহ আশেপাশের এলাকার চাহিদা মিটিয়ে রাজধানীতেও যাচ্ছে ফরমালিনমুক্ত তালের শাঁস। আর এই ফল সরবরাহে গ্রামের পর গ্রাম ছুটে বেড়াচ্ছেন কলাপাড়ার গাছি এবং পাইকাররা। কৃষকের বাড়িতে গিয়ে ডেকে ডেকে পানিতাল সংগ্রহ (স্থানীয় ভাষায়) করছেন। আর তা দূর-দূরান্তে সরবরাহ করে তারা বেশ ভালোই লাভের মুখ দেখছেন।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, কলাপাড়ার ধুলাসার ইউনিয়ন পরিষদের বাবলাতলা বাজারের কাছেই পানি তালের হাট। বিভিন্ন ছোট ছোট যানবাহনে করে করে নিয়ে আসা হচ্ছে শত শত সবুজ রংয়ের কাঁচা তালের ছড়া। আর ঘাম ঝরিয়ে একটি টিনশেডের ঘরে এসব ফল নামানোর কাজে সহায়তা করছেন বেশ কয়েকজন যুবক।
স্থানীয় ফল সংগ্রহকারী মাসুদ রানার আড়তঘর এটি। তিনি ছোট ফড়িয়াদের মাধ্যমে গ্রাম থেকে স্থানীয় কৃষকদের তাল, কচি ডাবসহ বিভিন্ন ফল সংগ্রহ করে রাজধানী ও অন্যান্য জেলা-উপজেলায় সরবরাহ করেন। পাইকারদের মাধ্যমে ফল সংগ্রহ করে প্রতিদিন অন্তত ১৫ হাজার তাল রাজধানীর কাওরানবাজারে পাঠানো হয়।

বর্তমানে প্রচন্ড গরম থাকায় রাজধানীতে তালের শাঁসের চাহিদা অনেক। প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠা ভেজালমুক্ত এই ফলটি কিনে খেতে দামের বিষয়ে খুব একটা আমলে আনছেন না ক্রেতারা। তাই চাহিদার কমতি নেই। পাঁচ টাকা দরে তাল কিনে ছয় টাকায় বিক্রি করছেন রাজধানীর আড়ততদারদের কাছে। কিন্তু সেখানে পরিবহন খরচসহ বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকা দরে। বৈশাখ থেকে শুরু করে জৈষ্ঠ্যের শেষ পর্যন্ত এই তাল রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকায় পাঠানো হয়।

তাল সংগ্রহকারী হৃদয় হাসান জানান, গত দু’মাস ধরে গ্রামে গ্রামে ঘুরে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা দরে তালের শত কিনে গাছির মাধ্যমে সংগ্রহ করে মাসুদ রানার ঘরে ৫ টাকা দরে বিক্রি করছেন। ফড়িয়া ইমাম হোসন জানান, শুরুতে তেমন লাভের মুখ না দেখলেও এখন বেশ ভালোই লাভ হচ্ছে। সকাল হলেই বেরিয়ে পরেন তালের সন্ধানে। বিকেলের মধ্যে সংগ্রহের ফল বিক্রি করেন মাসুদের আড়তে। তবে গ্রামীণ সড়কগুলোর উন্নতি হলে তালের শাঁস বিক্রি আরো জনপ্রিয় হয়ে উঠবে বলেও জানান তিনি।

কলাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ আর এম সাইফুল্লাহ ইনকিলাবকে জানান, পানি তাল অথবা তালের শাঁস স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে কলাপাড়া থেকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাঠানো হচ্ছে। এতে করে কৃষকরা বেশ লাভবান হচ্ছেন। আমরা মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের তালগাছ রোপনের বিষয়ে আরো উদ্বুদ্ধ করার উদ্যোগ নিয়েছি।

কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. চিন্ময় হালদার বলেন, তালের শাঁসে ভিটামিন এ, বি ও সি, জিংক, পটাশিয়াম, আয়রন, ক্যালসিয়ামসহ অনেক খনিজ উপাদান রয়েছে। এছাড়া গরমের দিনে তালের শাঁসে দেহের পানি শূন্যতা দূর করে। এমনকি কচি তালের শাঁসে রক্ত শূন্যতা দূর করাসহ চোখের দৃষ্টি শক্তি ও খাবারের রুচি বাড়ায়।

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (2)
Saddam Hossain Akanda ২৪ জুন, ২০২২, ৫:৫৩ এএম says : 0
খুবই দু:খজনক।
Total Reply(0)
Manzurul Islam ২৪ জুন, ২০২২, ৫:৫৪ এএম says : 0
কৃষক দাম পায় না আর ব্যবসায়ীরা লুটে নেয়।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন