শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

বন্যার্তদের সাহায্য করা মহান ইবাদত খুৎবাহ পূর্ব বয়ান

শামসুল ইসলাম | প্রকাশের সময় : ২৭ জুন, ২০২২, ৮:২৩ এএম

বন্যা দুর্গত এলাকার লাখো মানুষ ক্ষুধা পিপাসা অভাব অনটনে আজ জর্জরিত। তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসা সকল পর্যায়ের নাগরিকের ঈমানী এবং নৈতিক দায়িত্ব। বন্যার্তদের সাহায্য করা এক মহান ইবাদত। আজ জুমার খুৎবা পূর্ব বয়ানে পেশ ইমাম এসব কথা বলেন। নগরীর অধিকাংশ মসজিদগুলোতে জুমার বয়ানে পেশ ইমাম ও খতিবরা বন্যা দুর্গত এলাকার মানুষের দুর্ভোগের চিত্র তুলে ধরে তাদের সহায়তায় সমাজের বিত্তশালীদের এগিয়ে আসার আহবান জানান। মসজিদে জুমার নামাজে প্রচুর মুসল্লির সমাগম ঘটে।

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ মানুষেদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব ও গওহরডাঙ্গা মাদরাসার মুহতামিম আল্লামা মুফতি রুহুল আমিন। আজ জাতীয় মসজিদ বাইতুল মোকাররমে খুৎবা পূর্ব বয়ানে তিনি এ আহ্বান জানান। জুমার বয়ানে আল্লামা মুফতি রুহুল আমিন বলেন, বলা মুসিবত আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দার জন্য পরীক্ষা স্বরূপ। বন্যাও তেমনি আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দার জন্য পরীক্ষা। এ সময় অধৈর্য না হয়ে বেশি বেশি আল্লাহ কাছে তওবা করতে হবে। আল্লাহ কোরআনে ইরশাদ করেছেন, পানিতে এবং স্থলে যে ক্ষতি ছড়িয়ে পড়েছে এগুলো তোমাদের হাতের কামাই। অর্থাৎ বন্যাসহ যা কিছু প্রাকৃতিক দূর্যোগ আল্লাহ আমাদের দেন এগুলো সব আমাদের কৃত কর্মের ফল। এ জন্য দূর্যোগ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আমাদের বেশি বেশি তওবা করতে হবে। মুফতি রুহুল আমিন তাঁর বয়ানে আরো বলেন, আজকে সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্লাবিত হয়ে মানুষ মানবেতর জীবন যাপন করছে। খাদ্য, বিশুদ্ধ পানীয় সঙ্কট, আবাসন বসবাসের অনুপযোগী হয়ে যাওয়াসহ নানা সঙ্কটে পানিবন্দি মানুষগুলো। এমতাবস্থায় আমাদের দায়িত্ব যার যে পরিমাণ সমর্থ আছে তা নিয়ে পানিবন্দি মানুষগুলোর সহযোগিতা করা। আল্লাহ ঘোষণা করছেন, তোমরা যা কিছু দান করো তা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ই কর; আর যা কিছু দান করো তার পরিপূর্ণ প্রতিদান দেয়া হবে। এ জন্য আমরা সকলে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য তার দেয়া মাল থেকে পানিবন্দি মানুষের সহযোগিতা করব। ইনশাআল্লাহ।

মুফতি রুহুল আমিন বলেন, প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মাণের যে সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তা সেতু উদ্বোধনের মাধ্যমে সফল হতে যাচ্ছে। পদ্মাসেতু নির্মাণে খতিব আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করেন এবং প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে সেতুকে সমগ্র খারাবি থেকে হেফাজত রেখে যাতে মানুষের কল্যাণে ব্যবহৃত হয় এজন্য বিশেষ দোয়া করেন।

ঢাকার শেওড়াপাড় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব মুফতি সিফাতুল্লাহ রহমানি আজ জুমার বয়ানে বলেন, সিলেট সুনামগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলা বন্যার পানিতে মারাত্মকভাবে প্লাবিত,তাদের বসত ঘরবাড়ি, জমিজামা, রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে। লাখো মানুষ আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে। বন্যা দুর্গত এলাকার মানুষ ক্ষুধা পিপাসা অভাব অনটনে আজ জর্জরিত। তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসা সকল পর্যায়ের নাগরিকের ঈমানী এবং নৈতিক দায়িত্ব। বন্যার্তদের সাহায্য করা মহান ইবাদত।

পবিত্র কোরআন ও হাদিসের আলোকে অসহায় মানুষের সাহায্য করার অনেক ফযিলত এবং সওয়াবের কথা বলা হয়েছে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে "সৎকর্ম ও খোদাভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় করো। নিশ্চয় আল্লাহ তায়ালা কঠোর শাস্তিদাতা।" (সূরা মায়েদা,০২) হযরত সাওবান (রা.) থেকে বর্ণিত নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, "নিশ্চয় যখন কোনো মুসলমান আরেকজন মুসলমান ভাইয়ের সেবা করে সে সর্বদা জান্নাতের বাগানে বসবাস করবে।" (তিরমিযি শরিফ, হাদিস নং ৯৬৭)।
হযরত আলী (রা.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি "কোনো মুসলমান এক সকাল আরেকজন মুসলমানের সেবা করলে সত্তর হাজার ফেরেশতা সন্ধ্যা পর্যন্ত তার জন্য রহমতের দোয়া করতে থাকে। আর যদি একজন মুসলমান আরেকজন মুসলমানের এক সন্ধ্যা সেবা করে সত্তর হাজার ফেরেশতা তার জন্য সকাল হওয়া পর্যন্ত রহমতের দোয়া করতে থাকে এবং তার জন্য জান্নাতে একটি বাগান বরাদ্দ থাকবে।" (তিরমিযি শরিফ, হাদিস নং ৯৬৯)

আবূ হুরায়রাহ্ (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আল্লাহ তায়ালা কিয়ামতের দিন বলবেন, হে বনী আদাম! আমি অসুস্থ ছিলাম। তুমি আমার সেবা করোনি। সে বলবে, হে আমার রব! আমি তোমার কিভাবে সেবা করবো? তুমি তো বিশ্বজাহানের রব! আল্লাহ বলবেন, তুমি কি জানতে না যে, আমার অমুক বান্দা অসুস্থ ছিল? তুমি তার সেবা করোনি। তুমি কি জানতে না যে, তুমি যদি তার সেবা করতে, আমাকে অবশ্যই তার কাছে পেতে। হে আদাম সন্তান! আমি তোমার কাছে খাবার চেয়েছিলাম। তুমি আমাকে খাবার দাওনি। সে বলবে, হে আমার রব! আমি তোমাকে কিভাবে খাবার দিতাম? তুমি তো বিশ্বজাহানের রব। আল্লাহ বলবেন, তুমি কি জানো না, আমার অমুক বান্দা তোমার কাছে খাবার চেয়েছিল? তুমি তাকে খাবার দাওনি। তুমি কি জানতে না যে, সে সময় যদি তুমি তাকে খাবার দিতে তাহলে তা এখন আমার কাছে পেতে? হে বনী আদাম! আমি তোমার কাছে পিপাসা নিবারণের জন্য পানি চেয়েছিলাম। তুমি পানি দিয়ে তখন আমার পিপাসা নিবারণ করোনি। সে বলবে, হে আমার রব! আমি কিভাবে তোমার পিপাসা নিবারণ করতাম? তুমি তো বিশ্বজাহানের রব। আল্লাহ বলবেন, আমার অমুক বান্দা তোমার কাছে পানি চেয়েছিল, তুমি তখন তাকে পানি দাওনি। যদি তুমি সে সময় তাকে পানি দিতে, তাহলে তা এখন আমার কাছে পেতে। সুতরাং কোরআন ও হাদিসের আলোকে একথা প্রতীয়মন হয়েছে যে বন্যার্ত বিপদগ্রস্ত মানুষের সাহায্য করলে ফেরেশতাদের দোয়া এবং মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি পাওয়া যাবে। আল্লাহ আমাদের সকলকে বন্যার্তদের সাহায্যে এগিয়ে আসার তৌফিক দান করুন। আমীন।
ঢাকা গাউসিয়া মার্কেট জামে মসজিদের খতিব মুফতি আব্দুল্লাহ ইয়াহইয়া জুমার বয়ানে বলেন, আল্লাহ্ পবিত্র কোরআনুল কারীমের সূরা আলে ইমরানের ৯৭ নং আয়াতে ইরশাদ করেন, মানুষের মধ্যে যারা কা’বা ঘরে যাওয়ার সামর্থ্য আছে তার জন্য আল্লাহর উদ্দেশ্যে ঐ গৃহের হজ করা অবশ্য কর্তব্য বা ফরয। এতদসত্বেও যে তা অমান্য করবে সে কাফির, আর আল্লাহ্ তার সৃষ্টি জগতের কারো মুখাপেক্ষী নন।’ এছাড়াও মহান আল্লাহ্ সূরা বাক্বারার ১৯৬ নং আয়াতে ইরশাদ করেন, ‘তোমরা আল্লাহর জন্য হজ ও উমরাহ্ পালন কর।’ হজ যে একটি অত্যন্ত ফযিলতপূর্ণ ইবাদত তা নিম্নে বর্ণিত হাদীসে কারীমা দ্বারাও প্রমাণিত। যেমন: হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূল (সা.) ইরশাদ করেছেন: যে ব্যক্তি হজের সংকল্প করে, সে যেন দ্রæত সেটা সম্পাদন করে। কেননা, তোমাদের কারো জানা নেই তোমাদের পরবর্তী জীবনে কী ঘটবে। (আবু দাউদ, মিশকাত: ২৫২৩।

মিরপুরের ঐতিহ্যবাহী বাইতুল মামুর জামে মসজিদের খতিব মুফতি আব্দুর রহিম কাসেমী আজ জুমার বয়ানে বলেন, অভাবী, দূর্দশা ও বিপদগ্রস্থ মানুষকে সাহায্যে করা সওয়াবের কাজ। নফল ইবাদাত থেকেও উত্তম আমল। আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি লাভের অন্যতম উপায়। যে মানুষকে সাহায্য করে আল্লাহ তায়ালাও তাকে সাহয্যে করেন। হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি দুনিয়াতে কোন মুমিনের দুঃখ, দূর্দশা ও বিপদ দূর করার চেষ্টা করবে, আল্লাহ তায়ালা কিয়ামতের দিন তার দুঃখ দূর্দশা দূর করবেন। আর যে ব্যক্তি কোন সঙ্কটাপন্ন ব্যক্তির সঙ্কট নিরসন করবে, আল্লাহ দুনিয়া ও আখেরাতে তার যাবতীয় সঙ্কট নিরসন করে দিবেন। (তিরমিজি শরীফ)। আল্লাহ তায়ালা ততক্ষণ পর্যন্ত বান্দার সাহায্য করেন যতক্ষণ পর্যন্ত বান্দা অন্য কোন মুসলমান ভাইয়ের সাহায্য করে। (মুসলিম শরীফ, হাদিস নং ২৩১৪)। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেন, তোমরা ক্ষুধার্তকে খাদ্য দাও, অসুস্থদের খোঁজ খবর নাও, বস্ত্রহীন লোকদের বস্ত্র দাও এবং বন্দিকে মুক্ত করে দাও। (বোখারি, হাদিস : ২৪১৭)। তিনি আরও বলেন, যে কোন বস্ত্রহীন মুসলমানকে বস্ত্র প্রদান করে আল্লাহ তায়ালা তাকে জান্নাতের মধ্যে সবুজ বস্ত্র পরিধান করাবেন। (তিরমিজি, হাদিস নং ২৮৩৫)। খতিব বলেন, আজ বৃহত্তর সিলেটের মানুষ চরম বিপর্যস্থ ও বিপদগ্রস্থ। দু:খ দূর্দশায় নিপতিত। ঘরবাড়ী, সহায় সম্বল সব কিছু হারিয়ে তারা এখন নি:স্ব। অনাহারে, অর্ধহারে দিনাতিপাত করছেন তারা। জীবন বাঁচাতে এক মুঠো ত্রাণের জন্য যে অবস্থার সৃষ্টি হয় তা চোখে দেখার মত নয়। বিবেককে নাড়িয়ে তোলে। দু:খে অশ্রæ ঝরতে থাকে। এমতাবস্থায় এইসব বিপদগ্রস্থ মানুষের পাশে দাঁড়ানো আমাদের নৈতিক, মানাবিক ও ঈমানী দায়িত্ব। তাই আসুন আমরা সকলে এই বিপদগ্রস্থ অসহায় মানুষের সহযোগীতায় দ্রæত এগিয়ে আসি। আল্লাহ সকলকে তৌফিক দান করেন। আমিন। ঢাকার মিরপুরের বাইতুল আমান কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব মুফতি আবদুল্লাহ ফিরোজী জুমার খুৎবা পূর্ব বয়ানে বলেন, বৃহত্তর সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বন্যা পরিস্থিতির অবনতির কারণে বিপুল সংখ্যক অসহায় মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় জীবন যাপন করছে। বন্যার্তদের সহায়তায় এগিয়ে আসুন; আল্লাহ খুশি হবেন। শুধু নামাজ, রোজাসহ অন্যান্য বিধিবদ্ধ ইবাদত পরকালে নাজাতের জন্য যথেষ্ট নয়। যারা সমাজের অসহায় বন্যাদুর্গত গরিব মানুষের পাশে দাঁড়ায় না; তারা আল্লাহ ও তার রাসূলের সা. কাছে কখনোই প্রিয়ভাজন হতে পারবে না। বিপদগ্রস্থ মানুষের কল্যাণে এগিয়ে আসা অনেক সওয়াবের কাজ। নগদ টাকা পয়সা, খাদ্য, বস্ত্র, বিশুদ্ধ পানি, ওষুধসহ যার যা কিছু আছে, তা নিয়েই স্বতঃস্ফূর্তভাবে বন্যার্তদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসা ঈমানী দায়িত্ব ও নববী আদর্শ। এ প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, “কোনো মুসলমান অন্য মুসলমানকে কাপড় দান করলে আল্লাহ তায়ালা তাকে জান্নাতের পোশাক দান করবেন। ক্ষুধার্তকে খাদ্য দান করলে আল্লাহ তায়ালা তাকে জান্নাতের সুস্বাদু ফল দান করবেন। কোনো তৃষ্ণার্ত মুসলমানকে পানি পান করালে মহান আল্লাহ তায়ালা তাকে জান্নাতের সিলমোহরকৃত পাত্র থেকে পবিত্র পানীয় পান করাবেন।” (সুনান আবু দাউদ)। খতিব আরও বলেন, খেদমাতে খালক্ব বা সৃষ্টির সেবা গুরুত্বপূর্ণ একটি বিধান ও ইবাদত। এ ব্যাপারে ত্রæটি হলে কেয়ামতের দিন আল্লাহর সামনে জিজ্ঞাসিত হতে হবে। তাই যে যেখানেই আছেন; সামর্থ্য অনুযায়ী বন্যার্তদের সহযোগিতায় হাত বাড়িয়ে দেন। মহল্লার যুবকরা সংগঠিত হয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ত্রাণ সংগ্রহ করে আমানতদারিতার সাথে বন্যার্তদের মাঝে বিতরণ করুন। মহাগ্রন্থ আল কোরআনের "সূরা কসাস" এর ৭৭ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, তোমরা মানুষের প্রতি তেমন অনুগ্রহ কর (সাদক্বাহ বা যে কোন উপায়ে) যেমন আল্লাহ তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ করেছেন। বিশ্ব মানবতার মুক্তির দিশারী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, "যে ব্যক্তি কোনো মুমিনের পার্থিব একটি মুসিবত দূর করবে, আল্লাহ তায়ালা কিয়ামতের দিন তার মুসিবতসমূহ দূর করে দিবেন। আর যে ব্যক্তি কোনো অভাবী মানুষকে সচ্ছল করে দিবে, রব্বে কারীম তাকে ইহকাল ও পরকালে সচ্ছল করে দিবেন এবং আল্লাহ বান্দার সাহায্য করবেন যদি বান্দা তার ভাইয়ের সাহায্য করে।" (সহীহ মুসলিম)। মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে আমল করার তৌফিক দান করেন। আমিন। ঢাকার লালমাটিয়া মসজিদে বায়তুল হারামের খতিব মাওলানা কাজী আবু হোরায়রা জুমার বয়ানে বলেন, বানভাসি বন্যার্তদের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়ানো আমাদের ঈমানী দায়িত্ব। আল্লাহ তায়ালা কোরআনুল কারীমে ইরশাদ করেন, আল্লাহ তোমাদের ঈমানী পরীক্ষা নেন বিভিন্ন ধরনের মুসিবত দিয়ে আর এসব মুসিবতে তারাই কামিয়াব হন যারা ধৈর্য্য ধারণ করেন ও ঈমানের উপর অবিচল থাকেন। অপরদিকে যাদের উপর মুসিবত আসেনি তারা বিপদগ্রস্থদের পাশে দাঁড়ান কিনা তাদের ও ঈমানী পরীক্ষা নেন। রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন " তোমরা যদি পৃথিবীতে একে অপরের সাহায্যে এগিয়ে আস এবং দয়া পরায়ন হও তাহলে আরশের মালিক আল্লাহ তায়ালা তোমাদের প্রতি রহমত নাজিল করবেন। রাসুল সা. আরো বলেছেন, " হাশরের ময়দানে আল্লাহ তায়ালা বলবেন, হে বান্দাহ! আমি ক্ষুধার্ত ছিলাম তুমি আমাকে খাবার দাওনি, বান্দাহ বলবে ইয়া রব আপনার কি খাবারের প্রয়োজন হয়? আপনি কি খাবার খান? আল্লাহ বলবেন, আমার বান্দাহরা খাবারের অভাবে ছটপট করেছিল তুমি যদি তাকে বা তাদেরকে খাবার দিতে তাহলে তা আমাকেই দেয়া হতো। চিন্তা করুন সেদিন আমরা আল্লাহর নিকট কি জবাব দেব? আজ লাখো মানুষ বন্যার কবলে পড়ে সহায়- সম্পদহারা হয়ে না খেয়ে কাতরাচ্ছে। তারা পানির মধ্যে হাবুডুবু খাচ্ছে আমাদের ঈমানী দায়িত্ব হলো যার পক্ষে যতটুকু সম্ভব তাদের পাশে দাঁড়ানো। আসুন আমরা সকলেই বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াই। টাকা পয়সা ও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ এবং শুকনো খাবার তাদেরকে পৌঁছিয়ে দেই তা না করলে আমরা আল্লাহর নিকট জবাবদিহি করতে হবে আল্লাহ আমাদের তৌফিক দান করুন। আমিন।

ঢাকা লালবাগ চৌধুরী বাজার জামে মসজিদের খতিব মুফতি আ ফ ম আকরাম হুসাইন জুমার বয়ানে বলেন, আবু হুরায়রা (রা.) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূল সা. বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর উদ্দেশ্যে হজ্জ করেছে, যার মধ্যে সে অশ্লীল কথা বলেনি বা অশ্লীল কার্য করেনি, সে হজ্জ হ’তে ফিরবে সেদিনের ন্যায় (নিষ্পাপ অবস্থায়) যেদিন তার মা তাকে প্রসব করেছিলেন’। অর্থাৎ সে কাবীরা ছাগীরা, প্রকাশ্য গোপনীয় সকল গুনাহ থেকে ঐরূপ মুক্ত হয়ে ফিরে আসে। যেরূপ একজন শিশু গুনাহমুক্ত হয়ে জন্মগ্রহণ করে। বুখারী হা-১৫২১; মুসলিম হা-১৩৫০; মিশকাত হা-২৫০৭। আব্দুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রা.) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা হজ ও ওমরাহর মধ্যে ধারাবাহিকতা বজায় রাখো (অর্থাৎ সাথে সাথে কর)। কেননা এ দু’টি মুমিনের দরিদ্রতা ও গোনাহ সমূহ দূর করে দেয়। যেমন (কামারের আগুনের) হাপর লোহা, স্বর্ণ ও রৌপ্যের ময়লা দূর করে দেয়। আর কবুল হজের প্রতিদান জান্নাত ব্যতীত কিছুই নয়’। তিরমিযী হা ৮১০।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন