বিবাহের মাত্র তিন মাসের মাথায় যৌতুকের কারণে গরিব পরিবারে জন্ম নেওয়া শরিফার সংসার ভাঙলো। উল্লেখ্য তাদের বিবাহের নিকাহনামা মতে দেখা যায়, কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের হাটশ-হরিপুর গ্রামের জামিরুল ইসলাম ওরফে টিক্কার ছেলে বিপ্লব হোসেন গত ১৩ই মার্চ ২০২২ তারিখে আলমপুর ইউনিয়নের দহকুলা গ্রামের মৃত শরীফ উদ্দিনের কন্যা শরীফার (তালাকপ্রাপ্ত) সাথে ২ লক্ষ টাকা দেনমোহরে বিবাহ করেন।
দেনমোহরের টাকা পরিশোধ না করে বিবাহের পর দিন থেকে যৌতুক লোভী স্বামী বিপ্লব ২ লক্ষ টাকার জন্য শরীফার উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাতে থাকে। বিয়ের পর শরীফাকে নিজ বাড়িতে প্রথমে না তুলে ভাদালিয়া এলাকায় একটি বাসায় রেখে নির্যাতন করতো। অবশেষে শরিফা গত ১২ মার্চ ২০২২ তারিখে কুষ্টিয়া মডেল থানায় বিপ্লবের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করে। উক্ত অভিযোগের কারণে বিপ্লব তার নিজ বাড়ি হাটশ হরিপুরে শরীফাকে নিয়ে যাওয়ার পরপরই তার ওপর শুরু হয় বর্বরোচিত নির্যাতন। যৌতুকের টাকা না দিতে পারায় সর্বশেষ গত ১০ জুন শরীফাকে তার নিজ বাড়ি থেকে এক কাপড়ে বের করে দেয় তার যৌতুকলোভী স্বামী বিপ্লব।
অবশেষে কোন উপায়ান্তর না পেয়ে শরিফার মাতা গত ১৫ জু বিপ্লবের বাড়িতে যান এবং জামাইকে বিষয়টি মীমাংসার জন্য দাওয়াত দিয়ে আসে। শ্বাশুড়ীর কথামত বিপ্লব গত ১৭ জুন দহকুলা গ্রামে তার শ্বশুর বাড়িতে আসেন। শ্বশুর বাড়িতে এসেই তিনি ২ লক্ষ যৌতুকের টাকা দাবি করে বলেন, এখনই টাকা প্রদান করেন তা না হলে আপনার মেয়েকে আমি ঘরে তুলবো না বলে রাগারাগি করে চলে যান।
এদিকে শরিফা প্রতিবেদককে জানায় ১৭ তারিখে আমাদের বাড়ি থেকে চলে যাওয়ার পর পরই আমার কোনো অনুমতি না নিয়ে বিপ্লব নতুন বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। অবশেষে আমি আদালতের শরণাপন্ন হয়েছি।
আদালতের নথি সূত্রে জানা যায়, শরিফা বাদী হয়ে গত ২৬/০৬/২০২২ তারিখে ২০১৮ সালের যৌতুক নিরোধ আইনের ৩ ধারায় বিপ্লব হোসেনকে বিবাদী করে কুষ্টিয়া বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে কুষ্টিয়া সি আর ৭৯৭/২০২২ নং মামলা দায়ের করেন। উক্ত মামলায় গত ২৭ তারিখে বাদী শরীফার জবানবন্দি গ্রহণ করেন মাননীয় আদালত। আদালত বাদীর জবানবন্দি রেকর্ড পূর্বক আগামী ২৫/০৮/২০২২ তারিখে বিবাদীকে আদালতে হাজিরের নির্দেশ প্রদান করেন।
এ বিষয়ে শরীফা আরো বলেন, তার স্বামী কবুরহাট মোড়ে তার আত্মীয় রাশেদের কারখানায় কাজ করে। যৌতুকলোভী ও নির্যাতনকারী স্বামী বিপ্লবের কঠোর ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি কামনা করছি যে, পরবর্তীতে আর কোন নারী তার লালসার শিকার যেন না হতে হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন