আম্বিয়া বেগম (৪০) গাজীপুরের কোনাবাড়ির একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। ঈদ উদযাপন করবেন নাটোরের গ্রামের বাড়িতে। তাই পরিবার নিয়ে বাড়ি যাচ্ছেন। পরিবহনে মাত্রাতিরিক্ত ভাড়ার কারণে গরুর ট্রাকে করেই রওনা দিয়েছেন। এজন্য জনপ্রতি ভাড়া দিতে হয়েছে ৯০০ টাকা করে। শুধু আম্বিয়া নন, তার মতো অন্য পোশাকশ্রমিকরাও এই সংকটে বেছে নিয়েছেন ট্রাক।
তীব্র রোদের মধ্যে ট্রাকে দাঁড়িয়ে থেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাড়ি রওনা দিয়েছেন তারা। আম্বিয়া বেগম বলেন, পরিবার নিয়ে যাচ্ছি বাড়িতে ঈদ করতে। বাস না পেয়ে কোনাবাড়িতে গরুর ট্রাকে উঠেছি নাটোর যাব। জনপ্রতি ভাড়া দিতে হয়েছে ৯০০ টাকা করে। তিনজনের ২৭০০ টাকা নিয়েছে ট্রাকচালক। এমনিতে খোলা ট্রাকে দাঁড়িয়ে আছি। তার ওপর প্রচণ্ড রোদ। এর মধ্যে যানজট আরও কষ্ট বাড়িয়েছে। শুধু পানির পিপাসা লাগে।
আম্বিয়ার মতো গার্মেন্টসে চাকরি করেন লিপি খাতুন। ঈদে বাড়ি যাওয়ার জন্য চন্দ্রা থেকে পিকআপে উঠেছেন সিরাজগঞ্জ যাওয়ার জন্য। দিয়েছেন ৫০০ টাকা করে। কিন্তু অসহ্য গরমে শিশুসন্তানকে নিয়ে পড়েছেন বিপাকে। তারপরও পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে বাড়ি যাচ্ছেন তিনি। ট্রাকচালক শরিফুল ইসলাম বলেন, গরু নিয়ে গিয়েছিলাম ঢাকায়। ফিরতি পথে দালালের মাধ্যমে আব্দুল্লাহপুর থেকে রংপুর পর্যন্ত প্রায় ৪০ জন যাত্রী পেয়েছি। এতে কেউ ৭০০, কেউ ৯০০ টাকা করে ভাড়া দিয়েছে। তবে জনপ্রতি দালালরাই নিয়ে গেছে ২০০ টাকা করে। সিরাজগঞ্জগামী আরেক ট্রাকচালক ফরিদ হোসেন বলেন, গরু নিয়ে দুই দিন আগে গিয়েছিলাম ঢাকার গাবতলীতে। শুক্রবার সকালে ঢাকা থেকে বের হওয়ার সময় যাত্রী পেয়েছি কিছু। সিরাজগঞ্জ পর্যন্ত খোলা ট্রাকে জনপ্রতি ভাড়া নিয়েছি ৫০০ টাকা করে। তবে সড়কে বিভিন্ন পয়েন্টে চাঁদা দিতে হয় আমাদের।
শুক্রবার (৮ জুলাই ) বিকেলে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে দেখা গেছে, নিম্ন আয়ের মানুষজন বাসে চার গুণ বাড়তি ভাড়া ও বাস না পেয়ে বিকল্প হিসেবে খোলা ট্রাক, পিকআপ ভ্যানযোগে পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে যাচ্ছেন বাড়ি। অনেকে পরিবহনের আশায় সড়কে দাঁড়িয়ে আছেন এখনো। এদিকে দিনভর ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের ৩০ কিলোমিটার এলাকায় পরিবহন থেমে থেমে চলাচল করছে। এতে কোথাও যানজট কোথাও ধীরগতিতে চলাচল করছে পরিবহনগুলো। বঙ্গবন্ধু সেতুপূর্ব থেকে টাঙ্গাইলের করটিয়া পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার এলাকায় পরিবহনের দীর্ঘ সারির সৃষ্টি হয়েছিল।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন