শিক্ষা,চিকিৎসা,বিশুদ্ধ পানি,নিরাপদ বাসস্থানসহ পর্যাপ্ত নাগরিক সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত বিচ্ছিন্ন দ্বীপ লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআব্দুল্লাহ ইউনিয়ন,প্রকাশ চরগজারিয়া।
এ ইউনিয়নটি বিচ্ছিন্ন এক চরে অবস্থিত।
যার চারদিকে রয়েছে মেঘনানদী। নোয়াখালীর হাতিয়া,ভোলার তজুমদ্দীন, চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ ও লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার সীমান্তবর্তী ইউনিয়ন এটি। বিচ্ছিন্ন এ ইউনিয়নের নির্বাচন নিয়ে আতংক আর উৎকন্ঠায় রয়েছে গোটা উপজেলাবাসী।
মেঘনানদীর ওপাড়ে ভোট, নিয়ন্ত্রণ হয় এপার থেকে। পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী না থাকলে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন ভোটাররা।
বিচ্ছিন্ন দ্বীপের এই ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন জমে উঠেছে। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ভোটারদের মন জয় করতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা,দিচ্ছেন এলাকার উন্নয়নের বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি। চরআব্দুল্লাহ ইউনিয়নটি মেঘনানদী থেকে জেগে উঠা নতুন চর।এই ইউনিয়নের চারদিকে রয়েছে মেঘনানদী। যাতায়াতর মাধ্যম হিসেবে নৌকা-ট্রলার বা স্পীড বোর্ড। এই দুর্গম চরটিতে প্রায় ১৫ হাজার মানুষের বসবাস। এর মধ্যে ভোটার সংখ্যা রয়েছে ৬৯৩৭ জন।
দুই উপজেলার সীমান্তবর্তী হওয়ায় সুষ্ঠ ভোট নিয়ে আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন সকল প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা। ২০১৭ সালের ২৩ মে চরআব্দুল্লাহ ইউনিয়নের সর্বশেষ ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগ সমর্থিত কামাল উদ্দীন মন্জু। এ বছর নির্বাচন কমিশনের তফসিল মতে আগামী ২৭ জুলাই অনুষ্ঠিত হবে নির্বাচন। প্রথমে নির্বাচন কমিশন দূর্গম এই চরে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট হওয়ার কথা বললেও পরে আবার ইভিএম পদ্ধতি পরিবর্তন করে ব্যালেট পেপারে ভোট গ্রহনের সিদ্ধান্ত নেয়। ওই ইউনিয়নটির ৯টি ভোট কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানান ভোটার ও প্রার্থীরা।
চরআব্দুল্লাহ ইউপি নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বর্তমান চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি কামাল উদ্দীন মন্জু ও আনারস প্রতিক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ বেলাল হোসেন।
এছাড়াও সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ৯ এবং সাধারণ সদস্য পদে ২১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
ইউনিয়নবাসীর দীর্ঘদিনের দাবী দূর্গম চরের বাসিন্দাদের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে একটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নির্মাণ ও চুরি,ডাকাতি,চিনতাই, হত্যা ও অপহরণ সহ চরের জনগনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে একটি পুলিশ ক্যাম্প বা ফাঁড়ি থানা স্থাপনে যিনি ভূমিকা রাখতে পারবে তাকেই এবার বিবেচনা করবেন বলে জানান ভোটাররা।
নৌকার প্রার্থী কামাল উদ্দীন মন্জু বলেন,এখন পর্যন্ত শান্তি পূর্ণ ভাবে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছি।কোন ধরনের ঝামেলা নেই। শান্তি পূর্ণ নির্বাচন উপহার দিতে আমরা প্রশাসনকে সার্বিক সহযোগিতা করছি।
স্বতন্ত্র প্রার্থী বেলাল হোসেন বলেন,চরআব্দুল্লাহ ইউনিয়নটির ৯ টি কেন্দ্রই ঝুঁকিপুর্ন।সরকার দলীয় প্রার্থী ও তাদের কর্মীরা হুমকি ধমকি দিচ্ছে। ভোটাররা চরম আতংকের মধ্যে রয়েছে। পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েনের দাবী জানান এই প্রার্থী।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)এসএম শান্তনু চৌধুরী বলেন,চরআব্দুল্লাহ ইউনিয়নটি একটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপ। যোগাযোগ ব্যবস্থা তেমন ভাল নেই। তবুও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমরা পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন সহ একটি অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন