দেশের পাঁচ জেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় ৬ জন নিহত ও আরো ২৭ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে নোয়াখালীর চাটখিল ও হাতিয়া উপজেলায় পৃথক দুর্ঘটনায় এক স্কুলছাত্রীসহ দুইজন, কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে মোটরসাইকেল ও বাইসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে একজন, বাগেরহাটে যাত্রাবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নারীসহ ২ জন ও পঞ্চগড়ে এক পাথর ব্যবসায়ীর নিহত হয়েছে। এছাড়াও মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে পদ্মা সেতু থেকে নামার সময় একটি যাত্রীবাহী বাস উল্টে গিয়ে ১০ যাত্রী আহত হয়েছেন। আমাদের সংবাদদাতাদের পাঠানো তথ্যে এ প্রতিবেদন।
নোয়াখালী ব্যুরো জানায়, নোয়াখালীর চাটখিল ও হাতিয়া উপজেলায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় এক স্কুলছাত্রীসহ দুইজন নিহত হয়েছে। এতে আহত হয়েছে আরও দুইজন।
নিহতরা হলো, চাটখিল উপজেলার পাঁচগাঁও ইউনিয়নের বারইপাড়া গ্রামের নূর ইসলাম মোল্লার ছেলে মো. শাহজাহান মোল্লা ও হাতিয়া পৌরসভার গুল্লাখালি গ্রামের আলমগীর হোসেনের মেয়ে নিহা আক্তার। নিহত নিহা গুল্লাখালি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু শ্রেণির ছাত্রী ছিলো। গত সোমবার দিবাগত রাতে এবং গতকাল মঙ্গলবার এসব দুর্ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় বাসিন্দা জিল্লুর রহমান বলেন, গতকাল মঙ্গলবার বিদ্যালয় ছুটির পর বাড়ি যাচ্ছিল স্কুলছাত্রী নিহা আক্তার। কিছু দূর যাওয়ার পর পিছন থেকে দ্রুত গতির একটি টমটম গাড়ি পিছন থেকে তাকে ধাক্কা দিলে সড়কে পড়ে মাথা ও শরীরের বিভিন্ন অংশ থেতলে গিয়ে সে অচেতন হয়ে পড়ে। পরে স্থানীয়রা তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক নিহাকে মৃত ঘোষণা করেন।
স্টাফ রিপোর্টার, কুষ্টিয়া থেকে জানান, কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে মোটরসাইকেল ও বাইসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে একজন নিহত ও তিনজন আহত হয়েছে। গত সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে কুষ্টিয়া রাজবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কের ফুলতলা নামক স্থানে এই সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত মোটরসাইকেল চালক খোকসা উপজেলার শ্যামগঞ্জ গ্রামের মৃত ইউসুফ আলীর ছেলে মো. সাগর হোসেন।
স্থানীয়রা জানান, রাত সাড়ে ৮টার দিকে দ্রুতগামী একটি মোটরসাইকেল খোকসার দিকে যাবার সময় কুমারখালী অভিমুখী তিনটি বাইসাইকেল একসাথে চালিয়ে আসা অবস্থায় মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলে মোটরসাইকেল চালক মারা যান। আহতদের কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে গেলে চিকিৎসক মোটরসাইকেল চালক সাগরকে মৃত ঘোষণা করেন।
বাগেরহাট জেলা সংবাদদাতা জানান, বাগেরহাটে যাত্রাবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ঘটনাস্থলে নারীসহ ২ জন নিহত হয়েছে। এতে আরো ১২ জন আহত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে খুলনাÑঢাকা মহাসড়কের ফকিরহাট উপজেলার পালেরহাট নামক স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত মনির মল্লিক পিরোজপুর জেলার সিদ্দিক মল্লিকের ছেলে। অপর নিহত নারীর পরিচয় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
মোল্লাহাট হাইওয়ে থানার ওসি শেখ আবুল হোসেন জানান, ঢাকা থেকে খুলনা গামি মেঘনা পরিবহনের একটি যাত্রবাহী বাস দ্রুতগতি থাকায় ফকিরহাট উপজেলার পালেরহাট নামক স্থানে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে থাকা গাছের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতদের লাশ উদ্ধার করে ও আহতদের হাসপাতালে প্রেরণ করে।
পঞ্চগড় জেলা সংবাদদাতা জানান, পঞ্চগড়ে সড়ক দুর্ঘটনায় এক পাথর ব্যবসায়ীর নিহত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার সদ্দারপাড়া এলাকায় এই দুর্ঘটনাটি ঘটে। জানা যায়, নিহত রাজু ওই পাথর ব্যবসায়ী ও দিনাজপুর জেলার মুরাদপুর গ্রামের হবিবর রহমানের ছেলে।
লৌহজং (মুন্সীগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে পদ্মা সেতু এক্সপ্রেসওয়ে সড়কে বেপরোয়া গতিতে পদ্মা সেতু থেকে নামার সময় উল্টে গেছে ঢাকাগামী একটি যাত্রীবাহী বাস। এতে বাসের ১০ যাত্রী আহত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর সোয়া ১টার দিকে পদ্মা সেতু উত্তর থানার তিনশ গজ অদূরে এ দুর্ঘটনা ঘটে। আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে হাইওয়ে পুলিশ।
পদ্মা সেতু এলাকায় ট্রাফিক ইন্সপেক্টর মো. জিয়া দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, আহত কয়েকজনকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন। তিনি জানান, এতে কিছু সময় যান চলাচলে সমস্যা হয়। পদ্মা উত্তর থানার ওসি আলমগীর হোসাইন জানান, ঘটনার পরপরই বাসের চালক পালিয়ে গেছেন। দুর্ঘটনাকবলিত বাসটি সরিয়ে নেয়ার পর যান চালচল স্বাভবিক রয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন