নিজ ক্যাম্পাসে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বুলবুল আহমদ হত্যার ঘটনায় জড়িত তিনজন স্থানীয় ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করেছে জালালাবাদ থানা পুলিশ। সিলেট মেট্রোপলিটন পুুলিশের উপ পুলিশ কমিশনার আজবাহার আলী শেখ ইনকিলাবকে জানান, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসনের মামলার পর তদন্ত সাপেক্ষে গত মঙ্গলবার রাত ও বুধবার সকালের অভিযানের ভিত্তিতে পর্যায়ক্রমে এ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে এ হত্যাকাণ্ডের সাথে বাংলা বিভাগের ছাত্রী মার্জিয়া আক্তার ঊর্মির কোনো সম্পৃক্ততা নেই ।
গতকাল জালালাবাদ থানায় প্রেসব্রিফিং এ আজবাহার আলী শেখ জানান, গত মঙ্গলবার ভোরে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটককৃত সন্দেহজনক তিনজন ব্যক্তির মধ্যে আবুল হোসেন নামে একজন মঙ্গলবার রাত ১২টায় সে সহ আরো দুইজন এই লোমহর্ষক ঘটনা ঘটিয়েছে স্বীকারোক্তি দেন। পরবর্তীতে তদন্তের ভিত্তিতে পর্যায়ক্রমে কামরুল ইসলাম ও মোহাম্মদ হাসান নামে দুজনকে গ্রেফতার করে তিন আসামিকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে তারা প্রত্যেকেই ঘটনার সাথে তাদের সম্পৃক্ততার কথা অকপটে স্বীকার করে। ঘটনায় ব্যবহৃত ছুরি এবং ভিক্টিমের মোবাইল কোথায় আছে তা জানালে আসামি কামরুল ইসলামকে নিয়ে বিশ^বিদ্যালয়ে প্রাচীর লাগোয়া টিলারগাঁওয়ে তার বাড়ি থেকে ছিনতাইকৃত মোবাইল ও ছুরি উদ্ধার করা হয়।
বুলবুল হত্যাকাণ্ডের দিন রাত থেকে ঘটনার একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী মার্জিয়া আক্তার ঊর্মির মানসিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে নগরীর মাউন্ট এডোরা হাসপাতালে পুলিশের বিশেষ নজরদারিতে রাখা হয়। তবে কাউকে কিছু না জানিয়ে গতকাল বিকেলে হাসপাতাল ছেড়ে চলে আসেন এবং তার ফোনের সব কললিস্ট মুছে ফেলে। এছাড়া বুলবুলের ‘প্রেমিকা’ হওয়া সত্ত্বেও ঘটনার দিন বুলবুলকে উদ্ধারের কাজে সাহায্য চাওয়া প্রথম ব্যক্তি ফাহিমের কাছে মার্জিয়া বুলবুলকে চিনেন না বলে দাবি করেন তিনি। এসব কারণে সাময়িকভাবে তাকে সন্দেহ ও জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও হত্যাকাণ্ডের সাথে তার সম্পৃক্ততা নেই বলে জানিয়েছেন আজবাহার আলী শেখ। আজবাহার আলী শেখ বলেন, মার্জিয়ার কললিস্ট এবং তার মোবাইল আমরা পরীক্ষা করে দেখেছি। ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে আমরা যে এতদূর পর্যন্ত যাদের সম্পৃক্ততা পেয়েছি তাদের কারো কোনো সম্পৃক্ততা মার্জিয়ার কললিস্টে পাওয়া যায়নি। এছাড়া মার্জিয়া কিছুটা দূরে থাকায় ছিনতাইকারীরা তার ফোন নেয়নি।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ছিনতাই বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত তদন্তে আমরা যতদূর জেনেছি এটি একটি পরিপূর্ণ ছিনতাইয়ের ঘটনা। তারা (ছিনতাইকারী) বিকেল ৪টা থেকেই টিলায় অবস্থান করছিল, সাড়ে ৪টার দিকে ২ জন সেখান থেকে চলে যায় কথা বলতে বলতে বাকি ২ জন টিলায় অবস্থান করে, সন্ধ্যার পরে কামরুল আসে। সন্ধ্যার পর তারা ভিক্টিম বুলবুল ও মার্জিয়াকে একাকী পেয়ে তাদের কাছে মোবাইল ও টাকাপয়সা দাবি করে ছিনতাইয়ের সময় বুলবুলের সাথে ধাক্কাধাক্কি ধস্তাধস্তি হয়। বুলবুলের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় এর চিহ্ন রয়েছে। ছুরিকাঘাতের পর ছিনতাইকারীরা বুলবুলের মানিব্যাগ না নিয়ে শুধু মোবাইল নিয়ে চলে যাওয়ার বিষয়ে আজবাহার আলী শেখ বলেন, ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে তারা ছুরিকাঘাত করেছে, তাদের বয়স কম তাই রক্ত দেখে তারা তাৎক্ষনিকভাবে ছিটকে তিনজন তিনদিকে চলে যায়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন