এবার কৃচ্ছ্রসাধনের লক্ষ্যে গমের রুটির বদলে চালের রুটি খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান। তিনি বলেন, গমের রুটি না খেলে সেটি আমদানি করতে হবে না, এতে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে। গতকাল রোববার রাজধানীর নিউ ইস্কাটনে বিয়াম ভবনের মাল্টিপারপাস হলে আয়োজিত ‘ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সচেতনতা বৃদ্ধিকরণ’ প্রকল্পের অধীন দুটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের কর্মপরিকল্পনা-বিষয়ক ওয়ার্কশপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ পরামর্শ দেন।
ফরিদুল হক খান বলেন, গমের আটার রুটি খাব না। তাহলে আমার গম ইমপোর্ট করতে হবে না। আমার ফরেন কারেন্সি যেটা আছে, সেটাতে শর্ট পড়বে না। আমার ডলার শর্ট পড়বে না। আমরা সবাই যেন গমের আটার রুটি খাওয়ার জন্য অস্থির হয়ে গেছি। আমরা তিন মাস গমের রুটি না খাই। দেখি না কী হয়? আমরা চালের আটার রুটি খাব। অসুবিধা কোথায়?
জিনিসপত্রের দাম অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে সামান্য বেড়েছে দাবি করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সবাই বলে জিনিসের দাম বেড়েছে। সবাই বলে এটা হয়েছে, সেটা হয়েছে। জিনিসের দাম কী (কতটুকু) বেড়েছে, বাংলাদেশের মানুষ বুঝতে পারছেন না। এখানে সামান্য বেড়েছে, তাতেই মানুষের মনে অশান্তির সৃষ্টি হয়েছে। এই যে ভোজ্যতেল, সেটি আসে কোত্থেকে? সব আসে ইউক্রেন-রাশিয়া থেকে। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ হওয়ার কারণে সারা বিশ্বে ধস নেমেছে। এমনও দেশ আছে এক কেজি চালের দাম ৫০০ টাকা। অথচ বাংলাদেশের মানুষ এখনো স্বল্পমূল্যে সব খাচ্ছেন।
লন্ডনে পেট্রলের দাম তিন গুণ বেড়েছে উল্লেখ করে ফরিদুল হক খান বলেন, বাংলাদেশে পেট্রলের দাম হলো ৯০ টাকা। লন্ডনে গিয়ে দেখি, পেট্রলের দাম এক পাউন্ড ছিল। এক পাউন্ডের দাম হলো ১১০ টাকা। সেখানে এখন পেট্রলের দাম ৩.৫৩ পাউন্ড। এর মানে হচ্ছে, লন্ডনে ৩৭০-৩৮০ টাকা এক লিটার পেট্রলের দাম। আর আমাদের এখানে সরকার দিচ্ছে ৯০ টাকায়। অথচ মানুষ বুঝতে পারে না কিছু।
সউদী আরব ও অস্ট্রেলিয়ার দ্রব্যমূল্যের প্রসঙ্গ টেনে প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান বলেন, সউদী আরবে যান না কেন? আমাদের হজযাত্রীদের জিজ্ঞাসা করেন, তারা একটা ডিম খেয়েছেন ৫ রিয়াল দিয়ে। ১ রিয়াল ২৪ টাকা ধরে ১২০ টাকা একটা ডিমের দাম। আর বাংলাদেশে ১২০ টাকায় খাচ্ছেন কতগুলো ডিম। আমার মেয়ে অস্ট্রেলিয়ায় থাকে। ও বলল, ‘বাবা, যদি আমরা গোশত কিনতে যাই, সেটি ভাগ করে বিক্রি করে। মুরগির কলিজা, গিলা বা রান তারা কেটে ভাগ করে বিক্রি করে। দাম শুনলে মাথা ঘুরে যায়।
ওই দেশে একটা মুরগির দাম বাংলাদেশি টাকায় তিন হাজার টাকা। বাঙালি মায়ের পেটে বাস করছেন। কিন্তু বোঝেন না যে মা এই দেশের জন্য কতটুকু করছেন।
বিদ্যুতের ঘাটতি প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিদ্যুতের একটু ঘাটতি হয়েছে। বিদ্যুৎ তৈরি করতে দরকার হয় গ্যাস ও তেলের। দুটিই ইউক্রেন-রাশিয়া থেকে আমদানি করতে হয়। সেখান থেকে এখন এগুলো আনতে গেলে বিদ্যুতের দাম তিন-চার গুণ বেড়ে যায়। অন্য দেশ থেকে এনে বিদ্যুতে দ্বিগুণ ভর্তুকি দিচ্ছে। সরকারের আয়ের টাকা ভর্তুকি দিতেই শেষ। তবে আগামী তিন মাসের মধ্যে এসব অনেকাংশ সমস্যারই সমাধান হবে। ইতিমধ্যে রাশিয়া গ্যাস ও ভোজ্যতেল দেওয়ার জন্য রাজি হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন