রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে টিসিবির কার্ড কার্যক্রমে সুফল মেলেনি : টিআইবি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১২ আগস্ট, ২০২২, ১২:০৩ এএম

নিম্ন আয়ের এক কোটি পরিবারকে টিসিবির ‘ফ্যামিলি কার্ড’ প্রদানের মাধ্যমে সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য সরবরাহ কর্মসূচি গ্রহণ করে সরকার। টিসিবি’র এই কার্ড প্রাপ্তি এবং সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য ক্রয়ের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সুশাসনের ঘাটতি পরিলক্ষিত হয়েছে। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট দপ্তরসমূহের সক্ষমতা যাচাইপূর্বক যথাযথ প্রাতিষ্ঠানিক প্রস্তুতি না নিয়ে দ্রæত এ ধরনের কর্মসূচি গ্রহণ, উপকারভোগীর তালিকাভুক্তি ও পণ্য ক্রয়ে স্বচ্ছতার ঘাটতি ও অনিয়ম-দুর্নীতির ফলে দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠী এই ইতিবাচক উদ্যোগের পরিপূর্ণ সুফল পায়নি বলে জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, প্রকৃত উপকারভোগীদের উল্লেখযোগ্য অংশ ফ্যামিলি কার্ড তালিকা থেকে বাদ পড়ে, উপকারভোগীদের চাহিদা, পণ্য ক্রয়ের সামর্থ্য এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর প্রবেশগম্যতা ও অন্তর্ভুক্তির বিষয়গুলো যথাযথভাবে বিবেচনা না করায় এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য ব্যাহত হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ‘টিসিবির ফ্যামিলি কার্ড কার্যক্রমে সুশাসনের চ্যালেঞ্জে’ শীর্ষক শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে টিআইবি আয়োজিত এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলা হয়। টিসিবির ফ্যামিলি কার্ড কার্যক্রমে সুশাসনের চ্যালেঞ্জ উত্তরণে দশ দফা সুপারিশ করেছে সংস্থাটি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, উপদেষ্টাÑনির্বাহী ব্যবস্থাপনা প্রফেসর ড. সুমাইয়া খায়ের, গবেষণা ও পলিসি বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল হাসান। গবেষণা ও পলিসি বিভাগের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো শাহজাদা এম আকরামের তত্ত¡াবধানে তৈরি গবেষণাটি উপস্থাপন করেন একই বিভাগের রিসার্চ ফেলো মোহাম্মদ নূরে আলম এবং রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট মুহা. নূরুজ্জামান ফরহাদ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন টিআইবির আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের পরিচালক শেখ মনজুর-ই-আলম। গবেষণা জরিপে ৩৫টি জেলার ৩০-৩৫ জন করে মোট ১ হাজার ৪৭ জন উপকারভোগী অংশগ্রহণ করেন।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, উপকারভোগী তালিকায় করোনাকালে ‘২ হাজার ৫০০ টাকা নগদ সহায়তা’ কর্মসূচির আওতাভুক্ত ৩৮ লাখ ৫০ হাজার উপকারভোগীদের সবাইকে রেখে নতুন করে ৬১ লাখ ৫০ হাজার জনকে যুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু তাদের ৩৯ দশমিক ৫ শতাংশ ফ্যামিলি কার্ড পাননি। এর মধ্যে ৮০ দশমিক ৪ শতাংশ সম্ভাব্য উপকারভোগীকে অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে বাদ দেওয়া হয়। জরিপে মোট অংশগ্রহণকারী নারীদের ৩৪ দশমিক ৪ এবং পুরুষদের মোট ৩১ দশমিক ৪ শতাংশ অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে কার্ড পাননি বলে অভিযোগ করেন। তারা বলেন- তালিকাভুক্তির ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও তথ্য প্রচারে ঘাটতি এবং সুপারিশ বা তদবির জোগার করতে না পারা, রাজনৈতিক বিবেচনা, স্বচ্ছল ব্যক্তিদের তালিকাভুক্তি, একই পরিবারে একাধিক কার্ড প্রদান, ছবি পরিবর্তন করে তালিকাভুক্তদের কার্ড অন্যদের দিয়ে দেওয়া, ঘুষ না দেওয়ার কারণে সরকারের এই কর্মসূচির সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, প্রায় ১ কোটি পরিবারকে এ কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্তের কারণে প্রায় ২৫-৩০ শতাংশ সুবিধাবঞ্চিত দরিদ্র জনগোষ্ঠীর উপকার পাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল। তবে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি এবং ব্যবস্থাপনার ঘাটতির কারণে বাস্তবে এ প্রশংসনীয় উদ্যোগ প্রত্যাশিত সাফল্য অর্জন করতে পারেনি। স্বচ্ছতার অভাব, অনিয়ম, দুর্নীতি এবং রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের কারণে প্রকৃত অনেক উপকারভোগী তালিকাভুক্ত হতে পারেনি। তালিকা প্রণয়ন এবং বিতরণের ক্ষেত্রে অনিয়ম পরিলক্ষিত হয়েছে। সচ্ছল ব্যক্তিদের একাংশ এমনকি রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সচ্ছল আত্মীয়স্বজনদেরকেও তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। অথচ এই উদ্যোগে প্রকৃত অর্থে যাদের সুফল লাভ করার কথা, সেই অস্বচ্ছল দরিদ্র নাগরিকরাই বঞ্চিত হয়েছেন। ###

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন