দেশভাগ আধুনিক ভারতের ইতিহাসে চাঁদের কলঙ্কের মতো, চিরস্থায়ী বেদনার দাগ! স্বাধীনতার সাড়ে সাত দশক পরেও যা ভোলা সম্ভব নয়। নতুন করে মনে করালেন তারা। স্বাধীনতার ৭৫ বছর পর দেখা হল দুই ভাইয়ের। ম্যাজিকের মতো অবিশ্বাস্য সেই দেখা! দেশভাগের দাঙ্গায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিলেন সাকির খান ও সাদিক খান। সাদিক চলে যান পাকিস্তানে, সাকির থেকে যান ভারতে। বলিউডের স্ক্রিপ্টকে হার মানিয়ে সম্প্রতি দেখা হয়েছে তাদের। নেপথ্যে এক তরুণ পাকিস্তানি ইউটিউবার।
দেশভাগের আগে পাঞ্জাবের ভাটিণ্ডায় বাড়ি ছিল খান পরিবারের। কিন্তু ৭৫ বছর আগে সব বদলে যায়! সাম্প্রদায়িক সহিংসতার মুখে পড়তে হয় পরিবারটিকে। খুন হন সাকির-সাদিকের বাবা ও বোন। সেই শোকে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন তাদের মা। তখন বড়ভাই সাদিকের বয়স ১০ বছর। কোনওমতে প্রাণ বাঁচিয়ে পাকিস্তানে চলে যায় সে। এদিকে ভারতের ঠিকানায় পড়ে থাকে ছয় মাসের সাকির। গ্রামবাসী ও আত্মীয়দের আশ্রয়ে বড় হয় শিশুটি।
এই নির্মম জীবন কাহিনি থমকাতে পারত এটুকুতেই। কিন্তু তা হয়নি। কারণ সেই ভয়ংকর ট্রাজেডির অর্ধ শতক পরেও বড়ভাইয়ের খোঁজ ছাড়েনি ছোট ভাই। সম্প্রতি স্থানীয় এক চিকিৎসকের সহায়তায় পাকিস্তানের এক ইউটিউবারের সঙ্গে যোগাযোগ হয় সাকির। শেষ পর্যন্ত ইউটিউবার নাসির ধিঁলোই খুঁজে দেন বড়ভাই সাদিককে৷
চলতি বছরের জানুয়ারি মাস সাক্ষী হয় সেই আশ্চর্য পুনর্মিলনের। ৭৫ বছর পর করতারপুর করিডরে দেখা হয় দুই ভাইয়ের। চোখের জলে ভাসেন ভারতীয় সাকির ও পাকিস্তানি সাদিক খান। এই বিষয়ে সাকির খান বলেন, “প্রথমবার দেখা হওয়ার পর কথা বলতে পারিনি। আমরা একে অপরকে জড়িয়ে অনেকক্ষণ ধরে কেঁদেছি কেবল। দুই রাষ্ট্রের শত্রুতার রাজনীতি নিয়ে আমাদের কিছু যায় আসে না।” এদিকে পাকিস্তানের যে ইউটিউবারের সাহায্যে অসম্ভব সম্ভব হয়েছে, তিনি জানিয়েছেন, শুধু এই দুই ভাই নন, কমপক্ষে ৩০০ পরিবারের পুনর্মিলন করিয়েছেন তিনি ও তার টিম। সূত্র: টাইমস নাউ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন