জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান বলেছেন, পদ্মাসেতু নির্মাণের বিরোধী কুশীলবরা হয়তো জানতেন গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধি বাঙালির তীর্থে পরিণত হবে। তিনি বলেন, আত্মমর্যাদার পদ্মাসেতু হবার পর দল বেঁধে মা তার সন্তানকে নিয়ে, বোন তার ভাইকে নিয়ে যেভাবে টুঙ্গিপাড়ায় পিতার সমাধিস্থলে শ্রদ্ধা জানাতে যায়, স্মরণ করে- এখন তো আমার কাছে মনে হয় পদ্মাসেতু নির্মাণের বিরোধী কুশীলবরা জানতো পদ্মাসেতু হলে গোটা বাংলাদেশ একাকার হয়ে টুঙ্গিপাড়ায় একই মোহনায় মিশে যাবে। যেই টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর কফিন নিয়ে যাওয়া হয়েছিল সারাজীবনের জন্য বিস্মৃত করবে বলে। কিন্তু ইতিহাস সেই শিক্ষা দেয় বঙ্গবন্ধু ফিরে আসে মানুষের হৃদয়ে হৃদয়ে। টুঙ্গিপাড়ার সেই সমাধি আজ মানুষের একটি তীর্থে পরিণত হয়েছে। এর কারণ মানুষ তার আদর্শের কাছে ফিরে যায়। আদর্শের কাছে ফিরে যাওয়া মানে পিতার কাছে ফিরে যাওয়া।’
গত শুক্রবার রাতে অনলাইন প্লাটফর্ম গুগল মিটে বঙ্গবন্ধু পরিষদ দক্ষিণ কোরিয়া শাখা আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে ড. মশিউর রহমান বলেন, আজকে আমরা যারা ইউরোপ, আমেরিকার কল্যাণ রাষ্ট্র দেখে পুলকিত হই। বঙ্গবন্ধু ১৯৭৫ সালেই বাংলাদেশকে কল্যাণ রাষ্ট্র হিসেবে তৈরির লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিলেন। সেটি আর কিছু নয়, শোষিতের গণতন্ত্র। হাজার বছর ধরে নিপীড়ন, বঞ্চনা, নিগ্রহের শিকার বাঙালিকে মুক্তির গান শুনিয়েছিলেন তিনি। আজকে আমরা যারা বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করছি, শোক প্রকাশ করছি এর অর্থ শোককে শক্তিতে রূপান্তর করতে হবে। শক্তির অন্বেষণে নতুন প্রেরণা নিয়ে আমাদের এগোতে হবে।’
তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যার মাধ্যমে বাংলাদেশকে হত্যা করা হয়েছে। কেন তৎকালীন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ তার মিত্ররা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার করলো। কারণ তারা জানতো বঙ্গবন্ধু শুধু দক্ষিণ এশিয়ায় নয়, বিশ^ নেতায় পরিণত হচ্ছিলেন। বঙ্গবন্ধু প্রচলিত নিয়ম ভেঙে ফেলতে চেয়েছিলেন। তিনি কর্তৃত্বপূর্ণ সমাজ কাঠামো চাননি। তিনি নতুন অর্থনৈতিক ব্যবস্থার মডেল হিসেবে দ্বিতীয় বিপ্লবের কর্মসূচি ঘোষণা করলেন। এটি বাস্তবায়ন করতে পারলে বিশে^ বাংলাদেশ হতো রোল মডেল। স্বাধীন বাংলাদেশ ২১টি বছর সামরিক শাসনের যাঁতাকলে পিষ্ঠ ছিল। এই সময়টিতে দেশের প্রকৃত ইতিহাস থেকে আমাদের দূরে রাখা হয়েছে। পুরো সময়টা জুড়েই অন্যায়, অগণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ঠাঁসা ছিল দেশ। মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস মুছে ফেলা হয়েছে। অর্থনৈতিক কাঠামো বলতে কিছুই ছিল না। সাম্প্রদায়িক ও ধর্মভিত্তিক সমাজ তৈরির চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা গণঅভ্যুত্থানের ডাক দিলেন, স্বৈরাচার নিপাতের ডাক দিলেন। বঙ্গবন্ধুর কন্যার নেতৃত্বে ২১ বছর পর বাংলাদেশ আবার ঘুরে দাঁড়ালো।’
বঙ্গবন্ধু পরিষদ দক্ষিণ কোরিয়া শাখার সভাপতি আবু বকর সিদ্দিক রানার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি ডা. এস এ মালেক, সাধারণ সম্পাদক আ ব ম ফারুক, মতিউর রহমান লাল্টু প্রমুখ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন