বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মহানগর

প্রশাসনিক জটিলতাজনিত হয়রানি বন্ধে ৮ দফা দাবিতে ঢাবি শিক্ষার্থীর অবস্থান

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩০ আগস্ট, ২০২২, ১২:৩৬ পিএম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) প্রশাসনিক জটিলতাজনিত নানারকম হয়রানির শিকার হয়ে হয়রানি বন্ধে ৮ দফা দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বিল্ডিং (প্রশাসনিক ভবন) এর সামনে শিক্ষার্থীদের পক্ষে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন ইংরেজি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী হাসনাত আব্দুল্লাহ।

মঙ্গলবার সকাল ১১ টা থেকে এই অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন হাসনাত। বেলা সাড়ে বারোটার দিকে তার সাথে যোগ দেয় আরো কয়েকজন শিক্ষার্থী। হাসনাত জানিয়েছেন এই অবস্থান কর্মসূচি চলবে আরো ঘন্টাখানেক। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি বরাবর স্মারক লিপি প্রদান করবেন তারা। অতঃপর একটি সংবাদ সম্মেলন করার কথাও জানান হাসনাত।

লিখিত বক্তব্যে হাসনাত বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গতবছরই তার গৌরবময় শতবর্ষ পূর্ণ করেছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় আজ ১০১ তম বছরে এসেও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক জটিলতাজনিত হয়রানি কমেনি। এখনো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন , হল অফিস ও বিভাগীয় অফিসের মধ্যে কাজের সমন্বয়হীনতার প্রবল অভিযোগ রয়েছে। যেখানে বাংলাদেশের সরকারি , আধা - সরকারি ও স্বায়ত্ব শাসিত সবক্ষেত্রে ডিজিটাইজড পদ্ধতিতে সেবা দেওয়ার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশনেত্রী শেখ হাসিনা কাজ করে যাচ্ছেন, সেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো শতবর্ষী ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানে এখনো এনালগ পদ্ধতির ধূলো মলিন ফাইলপত্রের ভারে ন্যুব্জ। যার ফলশ্রুতিতে এবং কর্মকর্তাদের গাফলতিতে গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র হারানোর খবর শিক্ষার্থীদের মধ্যে মাঝেমধ্যেই শোনা যায়। এটি ডিজিটাল যুগে সনাতনী নির্যাতনের নামান্তর।
এছাড়াও রেজিস্ট্রার ভবনের কর্মকর্তা - কর্মচারীদের স্বেচ্ছাচারিতা এবং নিয়মানুবর্তিতায়ও ঘাটতি রয়েছে বলে দাবি করেন হাসনাত। তিনি বলেন, তাদের কাজে দীর্ঘসূত্রিতা ও আছে। কাজের ব্যাপারে তাদের অলসতা এবং দায়মুক্তির খবর বিশ্ববিদ্যালয়ে 'লাঞ্চের পর আসুন সুলভ' আচরণ হিসেবে সর্বজনবিদিত। এছাড়াও কর্মকর্তা - কর্মচারীদের অফিস টাইমে নির্বাচনী প্রচারণা সহ বিভিন্ন ব্যক্তিগত কাজে ব্যস্ত থাকতে দেখা যায়। অনেকে অফিস টাইমে নিজস্ব ব্যবসায়ও সময় দেন।

হাসনাত বলেন, অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের সাথে তাদের আচরণ মনিব - গোলাম পর্যায়ের। এমতাবস্থায় আমরা মনে করি যে ডিজিটাল বাংলাদেশের সারথি হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মডেল হিসেবে উপস্থাপিত হতে উপরোল্লিখিত সমস্যাগুলো নিরসন হওয়া প্রয়োজন ।

সমস্যাগুলো সমাধানকল্পে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বস্তরের শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ৮ দফা দাবি পেশ করেন হাসনাত। দাবিগুলো হলো; ০১. শিক্ষার্থীদের হয়রানি নিরসনের জন্য ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কাজের জবাবদিহিতা নিশ্চিতকল্পে শিক্ষক ও ছাত্র প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে অভিযোগ সেল গঠন করতে হবে। যেখানে সেবাগ্রহীতারা সুনির্দিষ্ট প্রমাণাদির ভিত্তিতে অভিযোগ জানাতে পারেন। ০২. প্রশাসনিক সকল কার্যক্রম অনতিবিলম্বে ডিজিটাইজড করতে হবে। ০৩. নিরাপত্তা ও হারিয়ে যাওয়া কাগজপত্র তদন্তের স্বার্থে অফিস সমূহের অভ্যন্তরে প্রতিটি রুমে পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে। ০৪. প্রশাসনিক ভবনে অফিস সমূহের প্রবেশদ্বারে ডিজিটাল ডিসপ্লে স্থাপন করতে হবে। ডিসপ্লেতে অফিস সমূহের নাম, কক্ষ নম্বর ও সেখানে প্রদত্ত সেবার বিবরণী, কর্তব্যরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নাম ও ছবি সহ প্রয়োজনীয় তথ্যাবলি প্রদর্শন করতে হবে। ০৫. কর্মকর্তা - কর্মচারীদের জন্য স্বাস্থ্যকর ও সুন্দর কর্ম পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। প্রশাসনিক ভবনের ক্যান্টিনেরও সংস্কার করতে হবে। ০৬. কর্মকর্তা - কর্মচারীদের আধুনিক সাচিবিক বিদ্যা, পেশাদারিত্ব, মানুষিক ও আচরণগত প্রশিক্ষণ আইন করে বাধ্যতমূলক করতে হবে। প্রয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থিত মানসিক সেবা প্রদানকারী বিভাগ ও সেন্টারসমূহের শরণাপন্ন হতে হবে। ০৭. অফিস চলাকালীন প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ব্যক্তিগত, ব্যবসায়িক কিংবা রাজনৈতিক কোনো কাজেই লিপ্ত থাকতে পারবে না। সে নিরিখে প্রশাসনিক ভবনের অভ্যন্তরে অবস্থিত কর্মচারী ইউনিয়ন অফিস বাধ্যতামূলকভাবে তাদের ক্লাবসমূহে স্থানান্তর নিশ্চিত করতে হবে। ০৮. কর্মকর্তা - কর্মচারীদের নির্বাচনকালীন প্রচারণা পরিবেশবান্ধব করতে হবে । বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক শিক্ষা পরিবেশ বজায় রাখতে, বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্য হানিকর ও পরিবেশ বিপর্যয়কারী অপ্রয়োজনীয় পোস্টার লিফলেট ও ব্যানার ব্যবহার আইন করে নিষিদ্ধ করতে হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন