প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে বিশেষ কিছু নেই বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের যে তথ্য আমরা পেয়েছি তাতে বিশেষ কিছু নেই। এই সফরের ফলাফল যেটুকু প্রকাশ হয়েছে তা গতানুগতিক। গতকাল শনিবার জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানীস্থ কার্যালয়ে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় পার্টি নেতা এএনএম রফিকুল আলম সেলিমের সভাপতিত্বে পলাশ উপজেলা নেতৃবৃন্দের সাথে এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।
জিএম কাদের বলেন, সরকারের জনসমর্থন না থাকায় যেনতেন নির্বাচন করতে মাতামাতি করছে নির্বাচন কমিশন। তারা নির্বাচনে পরাজিত হলে সার্বিকভাবে পরাজিত হবে, অস্তিত্ব সংকটে পড়বে। নির্বাচন কমিশন আগে থেকেই দায় এড়াতে বিভিন্ন ধরনের কথা বলছে। কখনো বলছে রাজনৈতিক দলগুলো সহায়তা না করলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব হবে না। আবার কখনো বলছে, কাউকে নির্বাচনে নেয়া নির্বাচন কমিশনের কাজ না। তাদের বুঝতে হবে নির্বাচন কমিশনের প্রতি আস্থা নেই বলেই রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনে যেতে চাচ্ছে না।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, নির্বাচন কমিশনের উচিৎ সবার আস্থা অর্জনে চেষ্টা করা। শুধু আওয়ামী লীগ ও তাদের কিছু মিত্র ছাড়া কেউই নির্বাচনে ইভিএম চায়নি, কিন্তু নির্বাচন কমিশন হঠাৎ করেই ইভিএম-এ নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছে। দেশের মানুষ নির্বাচনে ইভিএম চায় না। আর এসব কারণেই দেশের মানুষ নির্বাচনের ওপর আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। প্রশাসনের প্রতিটি স্তরে দলীয় লোক নিয়োগ করা হয়েছে। আবার ভোটের সময় পোলিং বুথে আওয়ামী লীগের কর্মী নিয়োগ দেয়া থাকে, তারা সহায়তার নামে ইভিএম-এ ভোটারদের ভোট দিয়ে দেন। এভাবে চলতে দেয়া যায় না।
জাপা চেয়ারম্যান বলেন, দেশ রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকটের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। অথচ, সাধারণ মানুষই হচ্ছেন দেশের মালিক, তারা ভোটের মাধ্যমে প্রতিনিধি নির্বাচিত করবেন। আবার প্রতিনিধি অপছন্দ হলে আবার ভোটের মাধ্যমে প্রতিনিধি পরির্বতন করতে পারবেন। কিন্তু এখন সাধারণ মানুষের মালিকানা ছিনতাই হয়ে গেছে। দেশের মানুষ এখন আর প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারে না। পছন্দ না হলে প্রতিনিধি পরিবর্তনও করতে পারেনা সাধারণ মানুষ। এখন আর প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ নেই শুধু বাংলাদেশ আছে।
জিএম কাদের বলেন, প্রজাতন্ত্র আছে শুধু অলংকার হয়ে। দেশ চলছে শাসক ও প্রশাসক দিয়ে। প্রশাসকদের জবাবদিহিতা থাকে শুধু শাসকদের কাছে। প্রশাসক নিয়োগ করা হয় শোষণের জন্য। জনগণের কাছে কারো জবাবদিহিতা থাকেনা। দেশের কোথাও জবাবদিহিতা নেই, তাই দুর্নীতিতে দেশ ভেসে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, একটি সরকার বারবার ক্ষমতাসীন হওয়ার মানে দেশের স্থিতিশীলতা নয়। দেশের স্থিতিশিলতা থাকলে ক্ষমতায় কে এলো আর কে গেলো তাতে কোন সমস্যা হয় না। দেশে আসলে স্থিতিশীলতা নেই, কেউ ক্ষমতা ছাড়লে চরম বিশৃংখলা সৃষ্টি হবে। কারণ, এখন রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে সবাই শত্রু মনে করে। এমনটি হওয়া উচিৎ নয়। আমরা চাই সহনশীল পরিবেশে সবাই যার যার রাজনীতি করবেন, কেউ কাউকে শত্রু ভাববেন না। আমরা কোন ব্যক্তি নয়, রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন চাই।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন