জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদেরের দায়িত্ব পালন সংক্রান্ত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্ট। আগামী সোমবার পর্যন্ত এই স্থগিতাদেশ দেয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে আবেদনের ওপর শুনানির জন্য আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। গতকাল বুধবার চেম্বার জাস্টিস এম.ইনায়েতুর রহিম এ আদেশ দেন।
আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট সাঈদ আহমদ রাজা। জিএম কাদেরের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট শেখ মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম।
আদেশের বিষয়ে সাঈদ আহমদ রাজা বলেন, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে জিএম কাদেরের দায়িত্ব পালনে স্থগিতাদেশ হাইকোর্ট স্থগিত করেছিলেন। হাইকোর্টের সেই আদেশ আগামী সোমবার পর্যন্ত স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্ট। সে পর্যন্ত জিএম কাদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না।
এর আগে গত ২৯ নভেম্বর গঠনতন্ত্র অনুযায়ী জাপা’র চেয়ারম্যান হিসেবে গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদেরের দায়িত্ব পালনে যুগ্ম জেলা জজ আদালতের দেয়া নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। বিচারপতি শেখ আবদুল আউয়ালের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। পরে ওই আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন করা হয়। ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে চেম্বার কোর্ট আদেশ স্থগিত করলেন। এর ফলে জিএম কাদেরের দায়িত্ব পালনের ওপর নিম্ন আদালতের দেয়া নিষেধাজ্ঞা আপাত: জারি থাকল। এর ফলে তিনি এখন চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না।
গত ৪ অক্টোবর জাপা থেকে বহিষ্কৃত নেতা সাবেক এমপি জিয়াউল হক মৃধা জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদেরের দায়িত্ব পালনে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে মামলা করেন। বাদীর আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ৩১ অক্টোবর ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালত জাপা চেয়ারম্যান হিসেবে জিএম কাদেরের দলীয় যাবতীয় কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞার অস্থায়ী আদেশ দেন। পরে জিএম কাদের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার চেয়ে জেলা জজ আদালতে মিস আপিল করেন। আবেদন নামঞ্জুর হয়।
জিয়াউল হক মৃধা তার আবেদনে বলেন, জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ২০১৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর ইন্তেকাল করেন। পরে বিবাদী জিএম কাদের হাইকোর্ট বিভাগের একটি রিট মামলা বিচারাধীন থাকার পরও জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ওই বছরের ২৮ ডিসেম্বর কাউন্সিল করে নিজেকে চেয়ারম্যান হিসেবে ঘোষণা করেন।
গত ৫ মার্চ গাজীপুর মহানগর কমিটির উপদেষ্টা আতাউর রহমান সরকার, সাংগঠনিক সম্পাদক সবুর শিকদার, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ডা: মো: আজিজকে বহিষ্কার করেন জিএম কাদের। এছাড়া গত ১৪ সেপ্টেম্বর তিনি মশিউর রহমান রাঙ্গাকে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য পদ থেকে বহিষ্কার করেন। অন্যদিকে গত ১৭ সেপ্টেম্বর অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধাকেও জাতীয় পার্টি থেকে বহিষ্কার করেন। যা সম্পূর্ণ বেআইনি। তাই ২০১৯ সালের ২৮ ডিসেম্বরের কাউন্সিলসহ চলতি বছর ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বহিষ্কার আদেশগুলো অবৈধ ঘোষণা করতে এবং হাইকোর্ট বিভাগের রিট ১৫০৫১/২০১৯ নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জাতীয় পার্টির পরবর্তী কাউন্সিল স্থগিত রাখতে মামলায় আদেশ চাওয়া হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন