শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ধর্ম দর্শন

মুমিন জীবনে অনুসরণীয় চরিত্র

মুহাম্মদ ইয়াসিন আরাফাত ত্বোহা | প্রকাশের সময় : ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

পূর্ব প্রকাশিতের পর
ঐ সত্তার কসম যার হাতে আমার প্রাণ, আজ যদি মুহাম্মদের মেয়ে ফাতিমাও চুরি করতো তবে আমি তার বেলায়ও হাত কাটার নির্দেশ দিতাম। যে ব্যক্তি স্বয়ং নিজের কন্যার ব্যাপারে এমন সীদ্ধান্ত দিতে প্রস্তুত থাকেন তার চরিত্রের ব্যাপারে জাত শত্রুও বিরূপ ধারণা করবেনা নিশ্চয়ই।

হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মজলিসে শুরা গঠন করে রাষ্ট্রকার্য পরিচালনা করতেন। মদীনার মসজিদে এ পরামর্শ পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত হত। মুসলিম উম্মাহর গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সুষ্ঠু, সুচিন্তিত সিদ্ধান্ত গ্রহণের উপরই জনগণের সৌভাগ্য ও দুর্ভাগ্য একান্তভাবে নির্ভর করে। এ কারণে নেতৃত্ব ও কর্তৃত্বের বিষয়টি সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। তাই রাসূলে কারীম সা. রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে নেতৃত্ব নির্বাচনে যোগ্য প্রার্থীকে নিয়োগ করেন। তিনি নেতৃত্ব নির্বাচনে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কেবলমাত্র যিনি যোগ্য ও বিশেষজ্ঞ নিরপেক্ষভাবে তাকেই কেবলমাত্র তিনি মনোনীত করতেন। এ ক্ষেত্রে পক্ষপাতদুষ্ট কিংবা ক্ষমতা বা পদের জন্য লালায়িত ব্যক্তিকে নেতা নির্বাচন করতেন না। তিনি যোগ্য নেতৃত্ব নির্বাচনের ক্ষেত্রে যে অনুপম আদর্শ স্থাপন করেছেন তা স্থান-কাল-পাত্রভেদে সকল যুগে সকল মানুষের জন্য এক অনুসরণীয় দৃষ্টান্ত। এ মর্মে তিনি সকলের উদ্দেশ্যে ঘোষণা করেন, ‘‘আল্লাহর নামে শপথ করে বলছি, আমি এই দায়িত্বপূর্ণ কাজে এমন কোন ব্যক্তিকে নিয়োগ করব না, যে তা পাওয়ার জন্য প্রার্থী হবে, অথবা এমন কাউকেও নয়, যে তা পাওয়ার জন্য লালায়িত হবে।

হযরত মুহাম্মদ (সা.) বিশ্বের শ্রেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ ছিলেন। একজন যোগ্য অর্থনীতিবিদ হিসেবে একটি সুন্দর ভারসাম্য অর্থনীতির রূপরেখা প্রণয়ন করে গেছেন তিনি। তিনি রাষ্ট্রের আর্থ-সামাজিক প্রশাসনিক উন্নয়ন তথা ধনী দরিদ্র বৈষম্য দূর করার লক্ষ্যে একটি উৎপাদনমুখী অর্থনৈতিক ব্যবস্থা কায়েম করে গেছেন। বিধিবদ্ধ ব্যক্তি মালিকানা নির্ধারণ, অপব্যয় নিষিদ্ধকরণ , সুদ প্রথার বিলোপ সাধন, যাকাতভিত্তিক অর্থব্যবস্থা, শ্রমিকের অধিকার প্রতিষ্ঠা, বেকার সমস্যার সমাধান, সম্পদ বণ্টনের জীবিকার্জন ও ব্যবসা বাণিজ্যে প্রেরণা, ভিক্ষাবৃত্তির উচ্ছেদ সাধন, ভারসাম্যপূর্ণ ভাতা, মূল্যবৃদ্ধির আশায় প্রয়োজনীয় দ্রব্য আটকিয়ে না রাখা, ওজনে ফাঁকি না দেয়া, অন্যায়ভাবে সম্পদ আত্মসাৎ না করা ইত্যাদি নীতি সমূহ তিনি বাস্তবায়ন করে মানুষকে অর্থনৈতিক মুক্তি দিয়েছেন।

মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ২৩ বছরের নবুওয়তি জিন্দেগির মধ্যেই তিনি মানবজাতি, মানবসভ্যতা এবং মানুষের অগ্রগতির কাফেলা যাতে অত্যন্ত সাফল্যের সঙ্গে চলতে পারে এবং আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের দরবারে গিয়ে সাফল্যের সঙ্গে তাঁর রেজামন্দি ও মাগফেরাত পাওয়ার অধিকারী হয়, তারই একটা পূর্ণ রূপরেখা রেখে গেছেন। নবুয়তের শেষ ১০ বছর তিনি মদিনায় রাষ্ট্র প্রধান ছিলেন। তার রাষ্ট্রে আয়তন ছিলো আমাদের বাংলাদেশের মতো অন্তত ১৬টি দেশের সমান। তাঁর ইন্তেকালের সময় মুসলমানদের জন্য তাঁর রেখে যাওয়া রাষ্ট্রটির আয়তন ছিল পৌনে আট লাখ বর্গমাইল। অথচ বাংলাদেশের আয়তন মাত্র পঞ্চান্ন হাজার বর্গমাইল। প্রায় ১৬টির সমান একটি বিশাল রাষ্ট্র হুজুর আকরাম (সা) সাহাবায়ে কেরামের মধ্যে রেখে গিয়েছিলেন। মাত্র ২০ বছর সময়ের মধ্যে সাহাবায়ে কেরাম (রা) এই রাষ্ট্রের আয়তন ২৬ লাখ বর্গমাইলে সম্প্রসারিত করতে সক্ষম হয়েছিলেন। হযরত ওসমানের (রা) খেলাফতকালে দাঁড়িয়েছিল ইসলামী খেলাফতের আয়তন ২৬ লাখ বর্গমাইলে। এটা কোনো কল্পকাহিনী নয়। ইতিহাস আছে, ভূগোল আছে এবং এ প্রমাণ মানচিত্র রয়েছে। প্রতিটি মানচিত্রে এই রেকর্ড লিপিবদ্ধ রয়েছে।

মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদা মক্কা মোয়াজ্জমায় ঘোষণা করেছিলেন, দেখ আজকের যুগে তোমরা এমন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছো যে, একজন মানুষ তার বাণিজ্য কাফেলা নিয়ে যথেষ্টসংখ্যক লোকলস্কর সঙ্গে নিয়েও এক শহর থেকে অন্য শহরে নিরাপদে পৌঁছতে পার না, পথে ওঁৎ পেতে বসে রয়েছে লুটরো এবং তস্করের দল। অথচ শুধু কালেমা ‘লাইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’ প্রতিষ্ঠা করলে দেখবে, এমন এক সময় আসবে সুদূর ইয়েমেন থেকে কোনো যুবতী নিঃসঙ্গ অবস্থায় মাথার ওপর সোনা-চাঁদির বোঝা নিয়ে মক্কা মোয়াজ্জমা পর্যন্ত সফর করবে, তার দিকে চোখ তুলে দেখার মতো কোনো দুষ্কৃতকারীর অস্তিত্ব আর থাকবে না। সাহাবায়ে কেরামের সময়কার শাসনব্যবস্থায় আমরা দেখতে পাই, হযরত ওমর (রা) তার খেলাফতকালে তৃতীয় বর্ষে মদিনা মুনাওয়ারায় ইসলামী খেলাফতের বিভিন্ন এলাকার প্রাদেশিক শাসনকর্তাদের এক মহাসম্মেলন আহ্বান করেছিলেন। সে মহাসম্মেলনে তিনি ভাষণ দিতে গিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, মনে রেখ, এখান থেকে সাড়ে সাতাশ মাইল দূরের ফোরাত নদীর তীরেও যদি একটি কুকুর না খেয়ে মারা যায়, তার জন্য কিয়ামতের ময়দানে ওমরকেই জবাবদিহি করতে হবে।

ইসলামের নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বর্ণাঢ্য জীবন চরিত্র পৃথিবী বাসীকে বিমোহিত করেছে। আফসোস যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এতদ উত্তম আদর্শ হওয়া সত্ত্বেও মুসলমানদের বড় অংশ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বাদ দিয়ে কথিত রাজনীতিবিদদেরকে নিজেদের আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করে সে সকল ব্যক্তিদের নামে স্লোগান হাঁকায়; যা মুসলমান হিসেবে আমাদের জন্য কলঙ্কজনক অধ্যায়। অনেকে হরহামেশাই বলে দেন আমাদের ধর্মের নবীকেতো আমরা আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করেছি কিন্তু অমুক অমুক নেতারা হলেন আমাদের রাজনৈতিক আদর্শ। যারা এমন বক্তব্য দেন তারা নিঃসন্দেহে বুদ্ধিপ্রতিবন্দী নয়তো রুচিহীন মানুষ। কেননা একজন মানুষের সামনে দশ প্রকারের খাবার পরিবেশন করে যদি বলা হয় আপনি এখান থেকে এক প্রকার গ্রহণ করতে পারবেন, তাহলে সে ব্যক্তি দশ প্রকারের মধ্যে উত্তম খাবারটিই গ্রহণ করবেন। তিনি যদি উত্তম খাবারটি বাঁছাই না করেন তবে বুঝতে হবে খাবার সম্পর্কে তার জ্ঞানের ত্রুটি আছে নয়তো তার রুচিহীনতা বিদ্যমান। তদ্রুপ পৃথিবীর ইতিহাসে একমাত্র ব্যক্তি মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যিনি হলেন সর্বপ্রকার উত্তম আদর্শ। কোনো মুসলমান যদি রাসূল আকরামকে বাদ দিয়ে অন্য কাউকে রাজনৈতিক বা অন্য ক্ষেত্রে আদর্শ হিসেবে মেনে নেয় তবে সে ব্যক্তির ইমান প্রশ্নবিদ্ধ। যিনি রাসূলকে ধর্মীয় আদর্শ হিসেবে মেনে নিয়ে অন্য কোনো ব্যক্তিকে রাজনৈতিক আদর্শ মেনে নেয় তিনি বিশ্ববাসীকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে এই বার্তা দেন যে, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ধর্মীয় জীবনে সেরা মানুষ হলেও রাজনৈতিক জীবনে তিনি সেরা মানুষ হতে পারেন নি (নাউযুবিল্লাহ)। তিনি যদি রাজনৈতিক জীবনেও সেরা মানুষ হতেন তাহলে তিনি রাসূল ব্যতিত অন্য কাউকে রাজনৈতিক জীবনে আদর্শ হিসেবে মেনে নিতেন না।

আমরা সবাই জানি গোলাম আহমদ কাদিয়ানীর অনুসারীরা নিজেদেরকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উম্মত মনে করে। তারা আল-কুরআনকে নিজেদের জীবন বিধান হিসেবে মেনে নেয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু তারা মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে শেষ নবী হিসেবে না মেনে গোলাম আহমদকে শেষ নবী হিসেবে মেনে নেয়ায় পৃথিবীর সকল ওলামায়ে কেরাম একমত যে কাদিয়ানী সম্প্রদায় কাফের। কাদিয়ানী সম্প্রদায় খতমে নবুয়ত না মানার কারণে যদি তারা কাফের হয় তাহলে আজকের সময়ে যারা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বাদ দিয়ে অন্য কাউকে আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করে তবে তারা কেন কাদিয়ানীদের অনুরূপ চরিত্রের হবে না?

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইন্তেকালের পর আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসীন হলে মদিনার দুটি গোত্র ইসলামের স্পষ্ট বিধান যাকাত অস্বীকার করে। তাঁরা বললো, আমরা তো মুহাম্মাদের কাছে এতোদিন যাকাত দিয়ে এসেছি, মুহাম্মদ সাঃ যেহেতু এখন আর নেই তাই আমরা এখন যাকাত দিবনা। আবু বকর রাঃ তাঁদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ঘোষণা দিলেন! ভাবা যায়, শুধুমাত্র যাকাত দিবেনা বলে তাঁদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ঘোষণা দিয়ে দিয়েছেন! তিনি বলেছিলেন, ‘‘আল্লাহর কসম, যে ব্যক্তি সালাত ও যাকাতের মধ্যে পার্থক্য করবে আমি তাদের বিরুদ্ধে জিহাদ করব” (বুখারী ও মুসলিম, কিতাবুয যাকাত)।

কোনো মুসলমান যদি ইসলামী শরীয়তের অকাট্য দলীলে প্রমাণিত কোনো বিষয়কে মেনে না নেয় তবে সে কাফের। সুতরাং যারা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতায়ালা কর্তৃক ঘোষিত ও নির্ধারিত আদর্শ মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, আন্তর্জাতিক জীবনের কোনো একটিতে আদর্শ হিসেবে মেনে না নেয় তবে তার ইমানের ব্যাপারে প্রশ্ন থেকে যায়। কোনো ব্যক্তি যিনি নিজেকে মসলিম হিসেবে দাবি করেন তিনি কখনো কোনো ভাবেই মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ব্যতিত অন্য কাউকে আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করতে পারেন না।

বর্তমান সময়ে যে সকল ব্যক্তি নিজেদেরকে মুসলমান দাবি করেন আবার রাজনৈতিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ব্যতিত অন্য কাউকে আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করেন, তারা মূলত আবু জাহেল ও আবু লাহাবের আধ্যাত্মিক সন্তান। আবু-জাহেল ও আবু লাহাবরা কা’বার অভ্যন্তরে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আদর্শ হিসেবে মেনে নিতে দ্বিধাবোধ করেননি কিন্তু কা’বার চত্ত্বরের বাহিরে রাসূলকে আদর্শ হিসেবে মেনে নিতে পারেনি। তারা জানতো রাসূলকে কা’বার অভ্যন্তরে নবী হিসেবে মেনে নিলে তাদের ক্ষমতা ও প্রভাবের কোনো ক্ষতি হবে না কিন্তু যদি কা’বার বাহিরে সমাজ জীবনেও যদি রাসূল কে মেনে নেয় তবে তাদের ক্ষমতা টিকে থাকবেনা। বর্তমান সময়েও যারা রাসূলের আদর্শকে মসজিদের বাহিরে মেনে নিতে পারে না, তারাও তাদের ক্ষমতা হারানোর ভয় করেন। যারা ধর্মনিরপেক্ষতা, জাতীয়তা, সমাজতন্ত্র, পুঁজিবাদ, জায়নবাদ ইত্যাদি মতা আদর্শের ভিত্তিতে ক্ষমতায় আরোহন করেছেন তারা তাদের গদি হারানোর ভয়েই মূলত মসজিদের বাহিরে ইসলাম ও রাসূলের আদর্শ মেনে নিতে অস্বীকৃতি করেন। যিনি নিজেকে মুমিন হিসেবে দাবি করেন তিনি কোনো ভাবেই রাসূল কে বাদ দিয়ে অন্য কাউকে আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করতে পারেন না।

ইসলাম গ্রহণের পূর্বে হযরত ওমর রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ছিলেন কাফের সম্প্রদায়ের তেজোদীপ্ত যুব নেতা। যার জন্য রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর দরবারে হেদায়েতের দোয়া করেছেন। হযরত ওমর এতো বেশি সাহসী ছিলো যে, সে স্বয়ং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে হত্যা করতে আসেন। কিন্তু হত্যা করতে এসে রাসূলের অনুপম চরিত্র দেখে ইসলাম গ্রহণ করেন। ইসলাম গ্রহণের পর ইসলামের প্রভাবে হযরত ওমরের ক্ষমতা ও দাপট পূর্বের চেয়েও সহস্র গুণে বেড়ে যায়। বর্তমানেও যারা রাসূলের অনুসরণে ক্ষমতা হারানোর ভয় করেন, তারা রাসূলের আদর্শকে আঁকড়ে ধরলে অনেক বেশি ক্ষমতার অধিকারী হবেন। যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর আস্থা ও বিশ্বাস রাখেন তিনি নিশ্চয়ই রাসূলের পথে ফিরে আসবেন। তখন তার জন্য অপেক্ষা করবে দুনিয়াবী কল্যাণ ও পরকালীন মুক্তি।

পরিশেষে বলবো, সত্যের মহানায়ক এবং আদর্শ চরিত্রবান বিশ্বনবীর জীবনকে আমরা নানাদিক পর্যালোচনা করলে আমরা এ সিদ্ধান্তে আসতে পারি যে, জগতে যদি কোন পূর্ণাঙ্গ সুন্দর সার্থক মহামানব এসে থাকেন তবে তিনি হযরত মুহাম্মদ (সা.)। মহানবী সা. এর জীবন ছিল এক মহা সমুদ্রের মত। অনন্তকাল আহরণ করলেও সমুদ্রের মনিমুক্তা শেষ হবার নয়। মানুষের পূর্ণাঙ্গ জীবন ধারায় তিনি পরিপূর্ণ আদর্শ। তিনি শুধু একটি মানবিক সত্ত্বা নয়, তিনি তাওহীদ রেসালত ও আখেরাতের দিকে আহবানকারী জীবন্ত সংবিধান। মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতায়ালা আমাদেরকে রাসূলের আদর্শে আদর্শিত হয়ে জীবন ধারণের তাওফিক দান করুক, আমিন।

লেখক, প্রাবন্ধিক ও কলামিস্ট।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন