ইরানে ২২ বছর বয়সী তরুণী মাহসা আমিনির পুলিশি হেফাজতে মৃত্যুর পর অষ্টম দিনের মতো বিক্ষোভ চলছে। বিক্ষোভে এ পর্যন্ত ৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে। একটি বেসরকারি মানবাধিকার সংস্থার বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি আজ শনিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
অসলোভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা ইরান হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, সরকার বিরোধী বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে অন্তত ৫০ জন নিহত হয়েছেন। তবে ইরান সরকারের তথ্যমতে, নিহতের সংখ্যা ১৭ জন। এর মধ্যে পাঁচজন নিরাপত্তাকর্মীও রয়েছেন।
গত ১৩ সেপ্টেম্বর পোশাকবিধি না মানার অভিযোগে মাহসা আমিনিকে তেহরান থেকে গ্রেপ্তার করেছিল ইরানের নৈতিকতাবিষয়ক পুলিশ (মোরালিটি পুলিশ)। তিন দিন পর শুক্রবার হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। অভিযোগ উঠেছে, পুলিশের নির্যাতনের কারণেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। এরপর শুরু হয় বিক্ষোভ।
ইরান হিউম্যান রাইটস বলেছে, ইরানের অন্তত ৮০টি শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, রাজধানী তেহরানের আশপাশের শহরগুলোতে বিপুলসংখ্যক মানুষ জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করছেন। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও সামরিক বাহিনীর সদস্যদের সংঘর্ষ হয়েছে। এর আগে সরকার-সমর্থকেরাও সমাবেশ করেছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র গতকাল শুক্রবার বলেছে, তারা ইন্টারনেট পরিষেবা সম্প্রসারণের জন্য ইরানের ওপর রপ্তানি নিষেধাজ্ঞাগুলো শিথিল করতে যাচ্ছে। এর আগে গত বৃহস্পতিবার স্পেসএক্সের মালিক ইলন মাস্ক বলেছেন, তিনি ইরানে তাঁর কোম্পানি স্টারলিঙ্ক স্যাটেলাইট পরিষেবা চালু করার জন্য নিষেধাজ্ঞা থেকে অব্যাহতি চাইবেন।
ইরান হিউম্যান রাইটস আরও জানিয়েছে, ইরানের নৈতিকতা পুলিশের হেফাজতে মাহসা আমিনির মৃত্যুর পর তাঁর জন্মস্থান কুর্দিস্তান থেকেই বিক্ষোভের সূত্রপাত হয়। কিন্তু এখন তা কেবল কুর্দিস্তানে সীমাবদ্ধ নেই, ছড়িয়ে পড়েছে সারা দেশে। প্রতিষ্ঠানটি আরও জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে গত বুধবার রাতেই ১১ জন মারা যান। দেশের উত্তরাঞ্চলের মাজান্দারান প্রদেশের আমল শহরে তাদের মৃত্যু হয়। একই দিনে একই প্রদেশের বাবল শহরে মারা যান আরও ৬জন।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে যোগ দিতে এখন নিউইয়র্কে রয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। তিনি বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘আমাদের অবশ্যই বিক্ষোভকারী এবং ভাঙচুরকারীদের মধ্যে পার্থক্য করতে হবে।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন