শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

চ্যালেঞ্জ নিতে মুখিয়ে ‘তরুণ’ বাংলাদেশ

নিউজিল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজ

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৫ অক্টোবর, ২০২২, ১২:০০ এএম

চলতি বছরের শুরুতেই দুই টেস্ট সিরিজ খেলতে নিউজিল্যান্ড সফরে গিয়েছিল বাংলাদেশ দল। মাউন্ট মঙ্গানুইয়ের জয়টাও এসেছিল ওই সফরেই। বছরের শেষ দিকে এসে আবারও নিউজিল্যান্ডে তারা, এবার অবশ্য ভিন্ন সংস্করণের দিকে মনোযোগ। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড ও পাকিস্তানের সঙ্গে ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। সংস্করণ আলাদা বলেই দলও স্বাভাবিকভাবেই আলাদা, তবে এমনিতে টি-টোয়েন্টি দলের চেহারাও তো স¤প্রতি বদলে গেছে বেশ। মুশফিকুর রহিম টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নিয়েছে, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ বাদ পড়েছেন। অভিজ্ঞ এই দুজন না থাকাতেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাংলাদেশ দলকে খুব তরুণ মনে হচ্ছে ব্যাটিং কোচ জেমি সিডন্সের। তার মতে অনেকের জন্য ত্রিদেশীয় সিরিজ ও বিশ্বকাপ হবে শেখার মঞ্চ।
ভালো প্রস্তুতির আশা নিয়েই বাংলাদেশ এখন নিউজিল্যান্ডে। দীর্ঘ ভ্রমণের পর রোববার ক্রাইস্টচার্চে পৌঁছায় দল। এরপর বিশ্রামের পালা শেষে গতকালই লিঙ্কনে অনুশীলনে প্রথম ঘাম ঝরান ক্রিকেটাররা। এদিনই যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসে দলের সঙ্গে যোগ দেওয়ার কথা থাকলেও আসেননি অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগ খেলার পর আপাতত ছুটিতে আছেন তিনি। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামীকাল দলের সঙ্গে যোগ দেওয়ার কথা আছে দেশসেরা অলরাউন্ডারের। অনুশীলনে ছিলেন না পেস বোলিং কোচ অ্যালান ডোনাল্ডও। টিকিট-সংক্রান্ত জটিলতায় এখনো দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে দলের সঙ্গে যোগ দিতে পারেননি তিনি।
গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের রানার্স আপ নিউজিল্যান্ড। এবারও তাদের সম্ভাবনা কম নয়। টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তানও বিশ্বের সেরা দলগুলির একটি। র‌্যাঙ্কিংয়ে তারা আছে তিন নম্বরে। বিশ্বকাপের আগে এমন দুটি দলের বিপক্ষে খেলার সুযোগটা কাজে লাগাতে চায় বাংলাদেশ। সিডন্স বললেন, এই দুই দলের সঙ্গে লড়াই জমাতে পারলে বিশ্বকাপের জন্য দলের প্রস্তুতি দারুণ হবে। দলের অনুশীলন শেষে কোচ সিডন্স গণমাধ্যমকে জানান, তাদের দলটি বেশ তরুণ, ‘আমরা দুবাই থেকে এসেছি। সেখানে আরব আমিরাতের বিপক্ষে দুই ম্যাচ খেলেছি, সপ্তাহ খানেক দারুণ অনুশীলন সুবিধা পেয়েছি সেখানে। আমাদের দলটা খুব তরুণ। কিছু সিনিয়র খেলোয়াড় অবসর নিয়েছে বা দলে নেই। তরুণ দল হিসেবে তারা রোমাঞ্চিত। তাদের জন্য এটা শেখার মঞ্চ। দেখা যাক খুব ভালো দুটি দলের বিপক্ষে কেমন খেলি।’
সিডন্স তরুণ বললেও বাস্তবতা বলছে ভিন্ন। ১৫ জনের বাংলাদেশ স্কোয়াডের সবচেয়ে কমবয়সী খেলোয়াড় হাসান মাহমুদ বাইশ পেরিয়েছেন। সবচেয়ে বেশি বয়েসি সাকিব ৩৬ বছরের ঘরে। সাকিব ছাড়াও দলে ত্রিশ পেরুনো আছেন সাব্বির রহমান। স্কোয়াডে ১০ জনের বয়েসই ২৫ বা তার বেশি। গড় বয়েস ২৭ এর বেশি। কেবল বয়স উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলার অভিজ্ঞতা আছে বেশিরভাগের।
এই ত্রিদেশীয় সিরিজ আয়োজনের মূল লক্ষ্য বিশ্বকাপের প্রস্তুতি। এই সংস্করণে ক্রমাগত ধুঁকতে থাকা বাংলাদেশের জন্য এই টুর্নামেন্ট থেকে পাওয়ার আছে অনেক কিছু। দলের ঘাটতি-দুর্বলতার বেশ কিছু জায়গা নিয়ে প্রশ্নের সমাধান খুঁজতে হবে এই টুর্নামেন্ট থেকে। এই সংস্করণে বাংলাদেশের প্রধান চিন্তার কারণ ব্যাটিং। বিশেষ করে ওপেনিং নিয়ে চলছে নানান পরীক্ষা নিরীক্ষা। এশিয়া কাপ থেকে মেইক শিফট ওপেনার সাব্বির ও মেহেদী হাসান মিরাজকে দিয়ে কাজ চালিয়ে নেওয়া শুরু হয়। এই দুজনের জুটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষেও খেলছে, কিন্তু সফল হয়নি। সেদিক থেকে এশিয়া কাপের আগের সিরিজগুলোতে ওপেনিংয়ে রান পাচ্ছিলেন লিটন। দলের সেরা ছন্দের ব্যাটারও তিনি। তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে তিন বা চারে। ত্রিদেশীয় সিরিজেও লিটনের নিচে নামার আভাস দিলেন সিডন্স, ‘সাব্বির ও মিরাজের ওপেনিং তামিম ও লিটনের থেকে বেশ ভিন্ন। লিটন এখানে আছে তিন বা চারে খেলবে। আমাদের এখনো কিছু সিনিয়র খেলোয়াড় আছে কিন্তু তরুণরা খুব উদীপ্ত।’
শুধু প্রতিপক্ষ নয়, উইকেট ও কন্ডিশনের দিক থেকেও এই টুর্নামেন্টকে প্রস্তুতির আদর্শ মঞ্চ মনে করছেন সিডন্স। এমনিতে নিউজিল্যান্ডে এখনও অনেক শীত। অস্ট্রেলিয়ায় বিশ্বকাপের সময় থাকার কথা বেশ গরম। নিউজিল্যান্ডের উইকেটগুলোতে অনেক সময় মুভমেন্টও মেলে, যা অস্ট্রেলিয়ায় দেখা যায় কম। তবে এই টুর্নামেন্টের সব ম্যাচ ক্রাইস্টচার্চের হ্যাগলি ওভালে, যেখানকার উইকেটের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার মিল খুঁজে পান সিডন্স। এখানেই ৭ অক্টোবর পাকিস্তানের বিপক্ষে টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে নামবেন সাকিবরা। বিশ্বকাপের আগে কন্ডিশন ও প্রতিপক্ষ বিচারে এই আসরকে ভীষণ কার্যকর মনে করছেন সিডন্স, ‘ওদের (প্রতিপক্ষ) নিয়ে বেশি কিছু বলার নেই। গত বিশ্বকাপের ফাইনালিস্ট নিউজিল্যান্ড। পাকিস্তান অবশ্যই দারুণ টি-টোয়েন্টি দল। তাদের চ্যালেঞ্জ জানাতে পারলে বিশ্বকাপেও হয়ত ভাল কিছু সম্ভব।’ আর নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশনে নিয়ে তার ভ্যাষ্য, ‘আমরা ৪০ ডিগ্রি তাপমাত্রা থেকে খুব ভালো ঠান্ডা আবহাওয়ায় এসেছি। কন্ডিশন একই থাকবে অস্ট্রেলিয়ায়। এখানকার উইকেট, ইনডোর খুবই ভালো। এজন্য আমরা এখানে এসেছি। প্রাক মৌসুমের অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে এখানকার খুব মিল আছে।’

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন