সড়ক দুর্ঘটনা রোধ এবং দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বাসে ফেসবুক ও টিকটকারদের ভিডিও ধারণ বন্ধে ১৬টি বাস কোম্পানিকে লিগ্যাল নোটিশ দেয়া হয়েছে। ৯ আইনজীবীর পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট মেহেদী হাসান এ নোটিশ দেন। বৃহস্পতিবার দেয়া এ নোটিশের তথ্য গতকাল শনিবার নিশ্চিত করেন এই আইনজীবী।
তিনি বলেন, আমরা ৯ জন আইনজীবী জনস্বার্থে ১৬ দূরপাল্লার পরিবহনের পরিচালক বা মালিকদের বৃহস্পতিবার ডাকযোগে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছে। প্রাপ্তির ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিটি পরিবহনের চালকদের প্রতি গাড়ি চালানোর ক্ষেত্রে অধিকতর সতর্কতা ও সচেতনতামূলক নোটিশ ইস্যু করতে অনুরোধ জানিয়েছি। অন্যথায় ভবিষ্যতে যে কোনো অনাকাক্সিক্ষত দুর্ঘটনার জন্য আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে।
নোটিশে বলা হয়, ঢাকা থেকে দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বাসগুলোর কিছু চালক বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোর কারণে বিভিন্ন সময়ে অনেক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায় অনেক যাত্রী পঙ্গু ও নিহত হয়েছেন। একই সঙ্গে পরিবহনগুলোর অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। গাড়ি চালকদেও বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালানোর পেছনে একটি স্বার্থান্বেষী মহল বিভিন্ন সময়ে পরিচিত ও উৎসাহিত করে চলছে। নোটিশে আরও উল্লেখ করা হয়, একটি স্বার্থন্বেষী মহলের অধিকাংশ ব্যক্তিই ফেসবুক ও টিকটক ব্যবহার করেন। এসব ব্যক্তি ফেসবুক ও টিকটক ছাড়াও অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়াগুলোতে চ্যানেল খুলে দ্রুত গতিতে গাড়ি চালাতে চালককে উৎসাহ দিয়ে ভিডিও ধারণ করেন। সেগুলো পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে তারা অর্থ উপার্জন করেন। নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য তারা বাস চালকদের মধ্যে এক অসুস্থ প্রতিযোগিতার পরিবেশ তৈরি করে চলেছেন। তারা চালকের পাশে বসে বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালানো, ওভারটেকিং, বারবার হর্ন বাজানো, বাউলি, ডিপার লাইট দেয়াসহ উদ্বুদ্ধ ও উৎসাহিত করেছেন। যা সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ সহ প্রচলিত আইনবিরোধী।
যেসব পরিবহনকে নোটিশ পাঠানো হয়েছে, হানিফ পরিবহন, শ্যামলী এন আর ট্রাভেলার্স, গ্রিণ লাইন পরিবহন, এস আর ট্রাভেলস, এনা ট্রান্সপোর্ট, নাবিল পরিবহন, বাবলু এন্টারপ্রাইজ, সোহাগ পরিবহন, সেন্টমার্টিন পরিবহন, সৌদিয়া পরিবহন, ইউনিক সার্ভিস, গোল্ডেন লাইন পরিবহন, দেশ ট্রাভেলস, টি আর ট্রাভেলস, সাকুরা পরিবহন ও ইমাদ এন্টারপ্রাইজ।
নোটিশ প্রেরক আইনজীবীরা হলেন, সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট জাবরিুল হক কাজল, মো. মেহেদী হাসান, মো. হুমায়ুন কবরি সরকার, আদলু সাইন, মুশফিকুর রহমান সেতু, আবু তাহরে রনি, রাশদিুল ইসলাম রাশদে, মো. ওবায়দুল্লাহ কাজী ও মো. মলিন হোসেন।
দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণ ও বাস পরিবহনগুলোর ক্ষয়ক্ষতি রোধে লিগ্যাল নোটিশে ৩টি পরামর্শও দিয়েছেন আইনজীবীরা। (ক) গাড়ির গতিসীমা সর্বোচ্চ ৮০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায় রাখার জন্য প্রতিটি বাসে ডিজিটাল স্পিড মিটার বা অ্যাপ বসানো। (খ) চালকের পাশে ইঞ্জিন কভারের উপরে বসে কোনো যাত্রী বা ফেসবুক ও টিকটকার যেন ভিডিও করতে না পারে এ জন্য সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা। (গ) যাত্রীদের জীবন, মাল ও সম্পদের নিরাপত্তার স্বার্থে টিকিট ও নির্দিষ্ট কাউন্টার ব্যতীত যাত্রী ওঠানামা নিষিদ্ধ করা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন