বগুড়ায় দীর্ঘ ১৯ বছর পর শাহজাহান হত্যা মামলার রায়ে আদালত শেখেরকোলা ইউপি চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা রশিদ মৃধা সহ ১১জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে।
একই সঙ্গে তাদেরকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
সোমবার দুপুরে বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক হাবিবা মণ্ডল এই রায় ঘোষণা করেন। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এপিপি নাছিমুল করিম হলি।
যাবজ্জীবন দণ্ডিতরা হলো- বগুড়া সদর উপজেলার শেখেরকোলা ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নেতা রশিদুল ইসলাম মৃধা, বিপ্লব মিয়া, রাসেল মিয়া, জুয়েল প্রাং, সবুজ আকন্দ, উজ্জ্বল আকন্দ, আঃ মান্নান, পিলু খন্দকার, মোখলেছার রহমান মুকুল, আঃ হামিদ খোকা আকন্দ এবং জাহেদুর রহমান। এদের মধ্যে বিপ্লব, রাসেল ও জুয়েল পলাতক থাকলেও অন্যরা রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মামলা সুত্রে জানা যায়, ২০০৩ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি বগুড়া সদরের শেখেরকোলা ইউনিয়নে ভোট অনুষ্ঠিত হয়। ভোটে আব্দুস সাত্তার খা এবং রশিদুল ইসলাম ওরফে রশিদ মৃধা চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এতে রশিদ মৃধা জয়লাভ করে ১১ ফেব্রুয়ারি তার দলীয় কর্মীদের নিয়ে মোটরসাইকেল যোগে বিভিন্ন স্থান ঘোরেন এবং সৌজন্য সাক্ষাত করেন। পথিমধ্যে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে শেখেরকোলা ইউনিয়নের দক্ষিণভাগ এলাকার মৃত তমিজ উদ্দিনের ছেলে শাহজাহান ও একই এলাকার আব্দুল মান্নানের সাথে রশিদ মৃধার দেখা হয়। তখন রশিদ মৃধা ভোট না দেয়ার অভিযোগ তুলে শাহজাহানকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এলাকা ছাড়া করার হুমকি দিতে থাকে। রশিদ মৃধার এমন হুমকি পেয়ে তার সহযোগীরা লোহার রড ও লাঠি দিয়ে শাহজাহানের উপর আক্রমণ করে। এক পর্যায়ে তারা শাহজাহানের মাথায় এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে এলোপাথাড়ি আঘাত করে । পরে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় শাহজাহান ১৩ ফেব্রুয়ারি ভোরে মারা যান। পরে ওইদিনই রশিদ মৃধাকে প্রধান আসামি করে ১১জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের ভাই মাহমুদূর রহমান। পরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তৎকালীন সদর থানার এসআই মোস্তাফিজুর রহমান ১১ জুন রশিদ মৃধাকে প্রধান আসামি করে ১১জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ পত্র দাখিল করেন।
সরকার পক্ষের আইনজীবী নাছিমুল করিম হলি জানান, এ মামলায় আদালত ১১জনের সাক্ষ্য নেন। সাক্ষ্য ও অন্য তথ্যের ভিত্তিতে আসামির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাদের এ সাজা দিয়েছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন