ময়মনসিংহের ফুলপুরে পারিবারিক কলহের জের ধরে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামী আনারুলের বিরুদ্ধে। বুধবার (২০ অক্টোবর) রাত আনুমানিক ১টার দিকে উপজেলার পয়ারী ইউনিয়নের আমলিতলা গ্রামে এই হত্যার ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ অভিযান চালিয়ে ঘাতক স্বামীকে গ্রেফতার করেছে।
এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ফুলপুর উপজেলার পয়ারী ইউনিয়নের গড়পয়ারী (আমলিতলা) গ্রামের মৃত ইদ্রিস আলী ছেলে আনারুলের (৩৬) সাথে দীর্ঘদিন ধরে তার স্ত্রী রোজিনা খাতুনের (৩০) পারিবারিক কলহ চলে আসছিল। বুধবার রাত অনুমান ১ টার দিকে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে পারিবারিক বিষয় নিয়ে ঝগড়া ও কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে স্বাামী আনারুল তার স্ত্রী ৩ সন্তানের জননী অন্তঃসত্ত্বা রোজিনা খাতুনকে দা দিয়ে কুপিয়ে মারাত্বক আহত করে উঠানে ফেলে রাখে। সাথে সাথে লোক মারফত সংবাদ পেয়ে পৌর এলাকার গোদারিয়া গ্রাম থেকে রোজিনার মা রোকেয়া মেয়ের বাড়ি আমলিতলা গিয়ে নাতী মীমের সহযোগিতায় রোজিনাকে উদ্ধার করে ফুলপুর উপজেল স্বাস্থ কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন।হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষনা করেন। সংবাদ পেয়ে ফুলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন ও ডিউটিরত কিলো অফিসার এসআই বকুল সাহা সঙ্গীয় ফোর্স সহ হাসপাতালে উপস্থিত হয়ে রোজিনার লাশ উদ্ধার করেন এবং অভিযান চালিয়ে ঘাতক স্বামী আনারুলকে গ্রেফতার করেন।
রোজিনার মা বিধবা রোকেয়া মেয়ের মৃত্যুশোকে বার বার মূর্ছা যাচ্ছিলেন।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে রোজিনার মা রোকেয়া জানান, নাতী চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী মীম আমাকে মোবাইলে সবকিছু জানানোর পর দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। সেখানে যাওয়ার পর আমার দিকেও তেড়ে আসে আনারুল। পরে কম কথা বলে কোনমতে রোজিনাকে নিয়ে হাসপাতালে নিয়ে আসি। হাসপাতালে আনার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক রোজিনাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ফুলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, রাত অনুমান ৪ঃ৩০ ঘটিকার সময় ফুলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থেকে ডিউটিরত ডাক্তার ফোন দিয়ে জানান যে, হাসপাতালে একজন মহিলাকে মৃত অবস্থায় নিয়ে এসেছেন,যার শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। সংবাদ প্রাপ্তির সাথে সাথে আমি ও ডিউটিরত কিলো অফিসার এসআই বকুল সাহা সঙ্গীয় ফোর্স সহ হাসপাতালে উপস্থিত হয়ে একজন মৃত মহিলার লাশ দেখতে পাই। তার নাম রোজিনা খাতুন (৩০)। সাথে সাথে স্বামী আনারুলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে রক্ত মাখা দা ,কাপড়-চোপড়, রক্ত মাখা মাটি সহ অন্যান্য আলামত জব্দ করা হয়েছে। লাশের সুরতহাল পূর্বক ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণসহ পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন