রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

মাদারীপুরে প্রতিবন্ধী তরুণীকে ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা পরে গর্ভপাত

মাদারীপুর থেকে স্টাফ রির্পোটার | প্রকাশের সময় : ২২ অক্টোবর, ২০২২, ৩:২১ পিএম

মাদারীপুরে খাবারের প্রলোভন দেখিয়ে ১৪ বছর বয়সী এক বুদ্ধি প্রতিবন্ধী তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় মেয়েটি তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে তাকে চিকিৎসার কথা বলে জোড়পূর্বক গর্ভপাত করানো হয়েছে বলেও অভিযোগ করা হয়।
এ ঘটনায় গত সোমবার মেয়েটির পরিবার মাদারীপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালে একটি মামলার আবেদন করেন। পরে আদালত মাদারীপুর সদর মডেল থানায় তদন্তের জন্য পাঠালে শুক্রবার মামলাটি রেকর্ড করা হয়। মামলা হওয়ার পর থেকেই ধর্ষণে অভিযুক্ত দুই ভাই পলাতক রয়েছেন।
মামলার এজাহার ও ভুক্তভোগী পরিবারটি সূত্র জানায়, মাদারীপুর সদর উপজেলার ঘটমাঝি ইউনিয়নের রামরানাদিয়া এলাকার সিদ্দিক সিকদার (৪০) পাশ^বর্তী এলাকার একটি বাড়িতে দৈনিক মজুরিতে ইরি ধানের খেতে কাজ করতেন। গত ২৮ মে ওই বাড়ি গৃহকর্তা শহরে একটি কাজে গেলে তার বুদ্ধি প্রতিবন্ধী মেয়েটি বাড়িতে একা ছিলেন। এ সুযোগে সিদ্দিক ওই প্রতিবন্ধী মেয়েটির ঘরে ঢুকে খাবারের নানা প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করে। বিষয়টি কাউকে না বলতে প্রাণনাশের ভয়ও দেখানো হয়। কিছুদিন পরে মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হয়। এরপর স্থানীয় ব্যক্তিরা ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে সালিশ বৈঠক বসায়। কিন্তু এতে কোন সমাধাণ না হলে গত ১৩ আগস্ট শহরের মেরী স্টোপস ক্লিনিকে প্রতিবন্ধী ওই তরুণীকে চিকিৎসা কথা বলে সিদ্দিকের বড় ভাই ইউনুস সিকদার (৪৫) নিয়ে আসে। পরে বেসরকারি ওই ক্লিনিকেই ওই তরুণীর জোড়পূর্বক গর্ভপাত করানো হয়।
এ ঘটনায় ওই তরুণী বাবা অভিযুক্ত সিদ্দিক ও তার ভাই ইউনুসের বিচার চেয়ে মাদারীপুর সদর থানায় মামলা করতে গেলে তাকে আদালতে মামলা করতে পরামর্শ দেওয়া হয়। পরে প্রতিবন্ধী ওই তরুণীর বাবা গত সোমবার মাদারীপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালে সিদ্দিক সিকদার ও তার বড় ভাই ইউনুস সিকদারকে আসামি করে একটি মামলার আবেদন করেন। পরে আদালত থেকে মামলাটি থানায় তদন্তের জন্য পাঠানো হলে শুক্রবার সকালে থানায় মামলাটি রেকর্ড করা হয়।
ধর্ষণের শিকার ওই তরুণীর বাবা বলেন, ‘আমি এলাকায় ভয়ে থাকি। ওরা আমার সঙ্গে খারাপ কাজ করেও গলাবাজি করে। আমাদের মারতে আসে। এতদিন আমার মেয়ে ছাড়া অন্য কোন শক্তি ছিল না। এ কারণে সব অনেক কষ্টে সহ্য করেছি। আমার ছেলে বিদেশ থেকে আসার পরে ওরে নিয়ে থানায় মামলা করতে যাই। কিন্তু থানায় মামলা না নিলেও আদালতে মামলা করলে পরে পুলিশ বিষয়টি গুরুত্ব দেয়। যে আমার মেয়ের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে এই ক্ষতিটা করেছে আমি তার বিচার চাই।’
অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে শুক্রবার রাতে রামরানাদিয়া এলাকার সিদ্দিক সিকদারের বাড়িতে যায় এই প্রতিবেদক। গিয়ে দেখা যায়, সিদ্দিকের ঘরটি তলাবদ্ধ। তার বড় ভাই ইউনুসও বাড়িতে নেই। তবে ইউনুসের স্ত্রী কাঞ্চনি বেগম বলেন, ‘ওই মেয়ে এর আগেও তো অনেকের সঙ্গে খারাপ কাজ করেছে। এলাকায় অনেক ঘটনা আছে। আমার দেবরের সঙ্গে ওই মেয়ে কিছু করেছে কিনা তা বলতে পারবো না। তবে ষড়যন্ত্র করে আমার স্বামী ও দেবরের নামে মামলা দিয়ে হয়রানি করতাছে।’


এ সম্পর্কে মাদারীপুর সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এ এইচ এম সালাউদ্দিন বলেন, ‘প্রতিবন্ধী ওই তরুণীকে ধর্ষণের ঘটনায় থানায় মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। এ ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের ধরতে পুলিশ কাজ করছে।’

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন