চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও খুলনার পর আজ রংপুরে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ। এরই মধ্যে রংপুর কালেক্টর ঈদগাহ মাঠে বৃহৎ জনসমাগমের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। এদিকে রংপুর জেলা মোটর মালিক সমিতির ডাকা পরিবহন ধর্মঘট উপেক্ষা করে বিকল্প উপায়ে পায়ে হেঁটে, ট্রেনে, অটোরিকশায় যে যেভাবে পারছেন সমাবেশের মাঠে এসে উপস্থিত হচ্ছেন। রাতেই পুরো মাঠ ভরে যাবে মনে করছেন শীর্ষ নেতারা। বিএনপি সমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থা বিভিন্ন পাড়া, মহল্লা আবাসিক হোটেলে রেইড দিয়ে এক ধরনের ভীতি সৃষ্টি করেছে অভিযোগ উঠে।
সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলগমীর। এতে যোগ দিতে একদিন আগেই সমাবেশস্থলে যোগ দিতে দলবেধে আসে নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ।
বিএনপির রংপুর বিভাগীয় গণসমাবেশের আগে গতকাল ভোর থেকে পরিবহন ধর্মঘট ডেকেছে জেলা মোটর মালিক সমিতি। এতে বন্ধ রয়েছে গণপরিবহন। ফলে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
এদিকে, গণপরিবহন বন্ধ থাকায় আগে ভাগেই সমাবেশস্থলে বিভিন্ন জেলার নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ। বাস বন্ধ থাকায় বিকল্প উপায়ে রংপুরে আসছেন তারা। কেউ মাইলের পর মাইল হেঁটে, কেউ ব্যক্তিগত গাড়ি, রিকশা, অটোরিকশা কিংবা মোটরসাইকেলে করে সমাবেশস্থলে। গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজের পর শহরের বিভিন্ন অলিগলিতে এসব নেতাকর্মীরা অবস্থান নিয়েছেন। কারো হাতে কাথা-বালিশ, কারো হাতে শুকনো খাবার, আবার কারো হাতে প্লাকার্ড। পরিবহন ধর্মঘটের কারণে নানা অসুবিধার মুখে পড়তে হয়েছে তাদের।
কেউ কেউ সরকার দলীয় নেতাকর্মীদের বাধার মুখে পড়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন। বিভিন্ন জেলা থেকে আসা নেতাকর্মীরা বলেন, বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করেই সরকার গণপরিবহন বন্ধ রেখেছে। গণপরিবহন বন্ধ রেখে শহরের প্রবেশ পথে বিভিন্ন পয়েন্ট বাধা দিচ্ছেন সরকার দলের নেতাকর্মীরা। তবে কোন বাধাই এই সমাবেশে জনসমাগম ঠেকাতে পারবে না।
আগে আসা নেতাকর্মীরা শহরের বানিয়াপাড়া এলাকায় খোলা মাঠে চুলা জ্বালিয়ে সবজি-খিচুড়ি রান্না করে ভাগাভাগি করে খেতে দেখা যায়। তাদের কয়েকজন বলেন, গত বৃহস্পতিবার বিকেলে তারা ঠাকুরগাঁও থেকে রওয়ানা হয়ে বানিয়াপাড়া আসেন। সমাবেশস্থল কাছে হওয়ায় তারা সেখানেই কাথা বালিশ নিয়ে রাত্রি যাপন করেন।
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও খুলনা সমাবেশের পর ভিন্নমাত্রা যোগ হচ্ছে রংপুরের সমাবেশে। এই সমাবেশ বিপুল সংখ্যক মানুষ উপস্থিত হবেন। সরকার গণপরিবহন বন্ধ করে আমাদের নেতাকর্মীদের পথরোধ করতে পারবে না। বাধা দিলে আরো বেশি মানুষ আসবে। বিএনপির সমাবেশে যোগ দেয়ার জন্য মানুষ মাইলে পর মাইল পায়ে হেঁটে রওয়ানা করেছেন। তারা রাতের মধ্যে সমাবেশস্থলে জড়ো হবেন। সমাবেশে আসা নেতাকর্মীরা চিড়া, মুড়িসহ বিছানা নিয়ে আসছেন। শত কষ্টের মধ্যেও তারা সমাবেশে যোগ দেবেন।
সমাবেশ উপলক্ষ্যে ক্রমেই রংপুর শহরে বাড়ছে মানুষ। সমাবেশের সমন্বয়কারী ও বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু বলেন, সরকার আমাদের সমাবেশ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র করছে। আমাদের নেতাকর্মীদের বাধা দেয়া হচ্ছে। পরিবহন ধর্মঘটের নামে দেশের মানুকে হয়রানি করা হচ্ছে। তবে কোন বাধা আমাদের সমাবেশ ঠেকাতে পারবে না। মানুষ যে যেভাবে পারছেন সমাবেশে আসছেন। রাতের মধ্যেই পুরো মাঠ ভরে যাবে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন ইনকিলাবকে বলেন, রংপুরের দিকে আসতে থাকা বিএনপি নেতা-কর্মীদের কুড়িগ্রাম-রংপুর মহাসড়ক ও দিনাজপুর-রংপুর মহাসড়কসহ বিভিন্ন আঞ্চলিক সড়কে বাধা দেয়া হচ্ছে। তবে এসব সরকারের কোন লাভ হয়নি। উল্টো নেতাকর্মীরা উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে মাঠে উপস্থিত হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন