বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরী উন্নয়ন প্রকল্পে (বিএসএমএসএন) আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে ৯২ জনবল নিয়োগে প্রায় ৩ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে খোদ প্রকল্প পরিচালক (পিডি) ও যুগ্ম সচিব আবদুল্লাহ আল মাহমুদ ফারুকের বিরুদ্ধে। ঘটনার তদন্ত চেয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন হুমায়ুন কবির হিমু নামে এক ভুক্তভোগী।
অভিযোগ থেকে জানা গেছে, বিএসএমএসএনে ৯২ জনবল নিয়োগে গত বছরের ডিসেম্বরে সংবাদপত্রে দরপত্র বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। একই বছরের ১৫ ডিসেম্বর ও চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি সংশোধন করে পুনরায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। ১০টি কোম্পানি দরপত্রে অংশ নিলেও পিডি দরপত্র বাতিল করে আগের শর্ত বাতিল এবং নতুন শিথিল শর্ত দিয়ে ১৪ মে আবারও বিজ্ঞপ্তি দেন। এ শর্ত অনুযায়ী, আসিফ ট্রেডার্সকে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে ৯২ জনকে ওই প্রকল্পে নিয়োগ দেওয়া হয়। পাঁচ বছরের জন্য নিয়োগকৃত কর্মীদের কাছ থেকে ৪ থেকে ৮ লাখ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি আউটসোর্সিং জনবল সরবরাহকারী ঠিকাদার আসিফ ট্রেডার্সের সঙ্গে পিডি আবদুল্লাহ আল মাহমুদ ফারুকের একটি ব্যবসায়িক চুক্তি প্রকাশ হলে দরপত্রের অনিয়ম ও নিয়োগ বাণিজ্যের বিষয়টি ফাঁস হয়। এর আগেও আসিফ ট্রেডার্সের বিরুদ্ধে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে জনবল সরবরাহে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। একটি ৩০০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষরিত ওই চুক্তিতে আসিফ ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী ওমর ফারুককে প্রথম পক্ষ এবং যুগ্ম সচিব আবদুল্লাহ আল মাহমুদ ফারুককে দ্বিতীয় পক্ষ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। এতে তাদের মনোনীত প্রতিনিধি হিসেবে ওমর ফারুকের স্ত্রী আয়েশা বেগম এবং আবদুল্লাহ আল মাহমুদ ফারুকের স্ত্রী রাবেয়া বসরির নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
চুক্তির শর্তানুযায়ী পিডি ফারুক সহযোগিতা করে আসিফ ট্রেডার্সকে কাজ পাইয়ে দেবেন। এতে জনপ্রতি ৩ লাখ করে মোট ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা আদায় করা সম্ভব হবে বলে চুক্তিতে উল্লেখ করা হয়। এ কাজের অর্জিত লভ্যাংশ দুই পক্ষই সমান ভাগে নেবে। এজন্য পিডির নামে ৪৬ লাখ টাকার তারিখবিহীন চেকও ইস্যু করা হয়েছে। সরকারি চাকরির শর্ত লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে অর্থ আদায় এবং নিজস্ব ব্যবসায়িক স্বার্থের মাধ্যমে কোটি টাকা লেনদেনে যুগ্ম সচিব আবদুল্লাহ আল মাহমুদ ফারুকের চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ-বেজার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে চাঞ্চল্য ও অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে। কমকর্তা-কর্মচারী ও ঠিকাদারদের পক্ষ থেকে ওই প্রকল্প পরিচালককে প্রত্যাহার ও শাস্তির আওতায় আনা এবং প্রথম দরপত্রের শর্তানুযায়ী যোগ্য বিবেচিত ঠিকাদারকে কাজ দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে পিডি আবদুল্লাহ আল মাহমুদ ফারুক মোবাইল ফোনে ইনকিলাবকে বলেন,বিষয়টি নিয়ে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। নিয়মের বাইরে কোনো কিছু হয়নি।
এ প্রসঙ্গে আসিফ ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী ওমর ফারুক বলেন, তিনি কাজ পেলেও কোনো লোক নিয়োগ দেননি। সব লোক নিয়োগ দিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক। আমার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ কেন উঠবে ?
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন