জনসমুদ্রে রুপ নিয়েছে রাজধানীর সোহরায়ার্দী উদ্যানে যুবলীগের যুব মহাসমাবেশ। সমাবেশস্থল সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও আশপাশের এলাকায় তিল ধারণের ঠাই ছিল না। হাতি, ঘোড়া, রঙ বেরঙের ফেস্টুন, টি-শার্ট, ক্যাপ পড়ে মহাসবাবেশে যোগ দিয়েছে সারাদেশ থেকে আগত যুবলীগের নেতাকর্মীরা। যুব লীগের পাশাপাশি সমাবেশে আওয়ামী লীগ ও অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরাও যোগ দিয়েছেন।
যুবলীগের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে এই যুব মহাসমাবেশে যোগ দিতে রাজধানীর বেশিরভাগ বাস, ছোট পিকাপ ভাড়া করা হয়েছে। তাই সাধারণ যাত্রীরা গন্তেব্যে যেতে বিপাকে পড়েন। রাজধানীর প্রায় সব রুটের বাস যুবলীগের নেতাকর্মী সমর্থকরেদর আনা নেয়ার কাজে ব্যবহৃত হয়। শুধু রাজধানী নয় ঢাকার চারপাশের জেলাগুলোর বেশিরভাগ বাস ভাড়া করে নেতাকর্মীরা সমাবেশে এসেছেন। সমাবেশস্থল সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও আশপাশের এলাকা-সড়কগুলোয় ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী।
সকাল থেকেই সম্মেলস্থলে লোকজন আসতে শুরু করে। বেলা বাড়ার সাথেসাথে টিএসসি এলাকা থেকে শুরু করে আশপাশের পরিচিত সব এলাকার কানায় কানায় মানুষ পূর্ণ হয়ে যায়। পলাশী, আজিমপুর, বকশি বাজার, শহীদ মিনার এলাকায়, ঢামেক, গুলিস্তান, শাহবাগ, ফার্মগেট, নিউমার্কেট প্রায় সব এলাকায় যান চলাচল ধীরগতির হয়ে পড়েছে।
অনুষ্ঠান শুরুর আগে ‘শুভ শুভ শুভ দিন/যুবলীগের জন্ম দিন’, ‘শেখ হাসিনার সরকার/বাংলাদেশের দরকার’, সারা বাংলায় নেত্রী কী আছে/ কোন সে নেত্রী, শেখ হাসিনা, শেখ হাসিনা’ শ্লোগানের মুখরিত হয়ে পড়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। যুবলীগের নেতাকর্মীরা নিজ নিজ ইউনিটের পছন্দ ও মনোনীত রঙের টি-শার্ট ও ক্যাপ পরে হাজির হন।
সমাবেশ সফল করতে আগের দিন রাতে রওনা দিয়ে চট্টগ্রাম থেকে ট্রেনে-বাসে নেতাকর্মীরা ঢাকায় এসেছেন। বরিশাল থেকে হাজার হাজার নেতাকর্মী বরিশাল থেকে বাস ও লঞ্চে ঢাকায় এসেছেন। এছাড়া খুলনা, সিলেট, রাজশাহী, রংপুর বিভাগ থেকে নেতাকর্মীরা আগের দিন রাতেই ঢাকায় এসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও আশেপাশের এলাকায় অবস্থান নিয়েছেন। আইন শৃংখলা বাহিনী সব ধরণের সহযোগিতা করেছে।
সমাবেশস্থল সোহরাওয়ার্দী উদ্যান কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে আশেপাশের এলাকায় অবস্থান নেন নেতাকর্মীরা। এই সমাবেশে ১০ লাখ নেতাকর্মীর সমাগমের কথা বলা হলেও মাত্র ৫টি গেট করায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন আগত নেতাকর্মীরা। রূপগঞ্জ থেকে আসা আমজাদ হোসেন বলেন, লাখ লাখ মানুষের জন্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করে মাত্র ৫/৬টি গেটের চিন্তা করাই ভুল। নেতাকর্মীরা এতো দূর থেকে এসে প্রবেশ করতেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের চারপাশে শুধু মানুষ আর মানুষ। নেতাকর্মীরা সমাবেশে প্রবেশ করছেন মিছিল নিয়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি থেকে দোয়েল চত্বর পেরিয়ে গুলিস্তান পর্যন্ত মিছিলের সারি গিয়ে ঠেকেছে।
নির্দিষ্ট কিছু রঙের টিশার্ট আর ক্যাপ পরে সমাবেশে আসতে দেখা যাচ্ছে কর্মীদের। অনেকের টিশার্টে যুবলীগ মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখার আগামী দিনের পদপ্রত্যাশীদের ছবিও রয়েছে।
৫০ বছর পূর্তি ও সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে যুবলীগের বহুল আলোচিত এই সমাবেশ ঘিরে নেতাকর্মীদের ঢল নেমেছে সোহরাওয়ার্দীর পথে। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা যুবলীগের হাজার হাজার নেতাকর্মী মিছিল-স্লোগানে মুখরিত ছিল পুরো এলাকা।
সবাবেশস্থলে ঢুকতে না পেরে কাকরাইল, নিউ মার্কেট, মিন্টো রোড, বেইলি রোড, শাহবাগ, বাংলা একাডেমির সামনেও অবস্থান নেন নেতাকর্মীরা। বিভিন্ন জেলা থেকে আসা অসংখ্য গাড়ি পার্কিং করায় নয়াপল্টন, কাকরাইলসহ বেশ কয়েকটি স্থানে দেখা দিয়েছে তীব্র যানজট। বিভিন্ন জেলা থেকে আসা নেতাকর্মীদের হাতে ছিলে জাতীয় পতাকা, যুবলীগের সাংগঠনিক পতাকা ও নানা রংয়ের প্ল্যাকার্ড। মিছিল আর বাদ্যযন্ত্রে চারপাশ মাতিয়ে রাখছেন তারা। এছাড়া প্রতিটি জেলা থেকে আসা নেতাকর্মীদের রয়েছে পৃথক রঙের টি-শার্ট ও হরেক রকম ক্যাপ।
নিজ নিজ এলাকাভিত্তিক ভাগ হয়ে মিছিল-শোডাউন করেছেন নেতাকর্মীরা। লক্ষীপুর, বগুড়া, কুমিল্লা ও গাজীপুর থেকে আসা নেতাকর্মীরা বলেছেন, যুবলীগ দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংগ্রাম ও সাফল্যের অস্তিত্ব বহন করে। স্বাধীন বাঙালি জাতিসত্তার ইতিহাসে যা কিছু বড় অর্জন তার গর্বিত অংশীদার যুবলীগ।
এই সমাবেশ ঘিরে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নির্মাণ করা হয়েছে সুবিশাল প্যান্ডেল। রাজধানীর বিভিন্ন সড়কের পাশে জাতীয় পতাকার পাশাপাশি যুবলীগের পতাকা শোভা পাচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন